নিজস্ব প্রতিনিধিঃ চাকুরী যেন সোনার হরিন, আর এই সোনার হরিণ ধরতে মানুষ ধার-দেনা কিংবা সহায় সম্বল বিক্রি করে চাকুরীর জন্য টাকা দেয়। টাকা দেওয়ার পর থেকে শুরু হয় বিভিন্ন তাল-বাহানা কিংবা হুমকি-দমকি। তাদের ফোন হয়ে যায় বন্ধ অফিসে গেলেও পাওয়া যায়না কাউকে। এভাবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চাকুরী নামক সোনার হরিন ধরতে নিঃস্ব হয়ে ঘুরতে হচ্ছে শহর থেকে গ্রাম আবার গ্রাম থেকে শহর। বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেও হয়ে পরে ব্যর্থ হয়ে সহজ সরল মানুষজন হয়ে যায় অসহায় দিশেহারা পথভ্রান্ত। প্রতারক চক্র কখনও বা বিনা ডকুমেন্টে টাকা নেওয়া, আবার কখনওবা কম্পিউটার থেকে নকল এডমিট কিংবা নিয়োগ পত্র বানিয়ে আবার কখনও বা কোম্পানীর নামে প্যাডে নিয়োগপত্র বানিয়ে টাকা আত্মসাত করে যাচ্ছে একটি চক্র। গ্রামের সহজ সরল মানুষগুলো চাকুরীর আশায় ধার-দেনা কিংবা সহায় সম্বল হারিয়ে অসহায় হয়ে ঘুরছে দ্বারে দ্বারে। তার প্রমান স্বরুপ প্রতিনিধির হাতে আসেছে চারটি নিয়োগপত্র। চাকুরী প্রার্থীরা টাকার বিনিময়ে পেয়েছে কোম্পানীর কাছ থেকে সরকারী স্মারক সম্বলিত নিয়োগপত্র কিন্তু তা যেন অন্তঃসার শূন্য শুধু মাত্র একটি কাগজ মাত্র।
এম.আর ফিউচার বাংলাদেশ (প্রাঃ) লিঃ নামে একটি প্রতিষ্ঠান, প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা-প্রধান কার্যালয়,- লায়ন শপিং কম্পেলেক্স, রুম নং-৪০১৩,চতুর্থ তলা, ১২৬/এ/বি, এয়ারপোর্ট রোড,তেজগাঁও,ঢাকা-১২১৫। কর্পোরেট অফিস-ইসলাম সুপার মার্কেট,কালীবাড়ী রোড,মনিরামপুর,যশোর। প্রতিবেদকের হাতে বেশ কিছু নিয়োগপত্র আসে যাতে দেখা যায় উক্ত প্রতিষ্ঠানে নিয়োগকৃতরা গ্রামের সাধারণ মানুষ চাকুরী পাওয়ার আশায় প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী জনপ্রতি পদ ভিন্ন ১,৫০,০০০/= – ২,০০.০০০/= টাকা করে পরিশোধ করেছে। প্রতিষ্ঠানের প্যাডে নিয়োগপত্রে ব্যাবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে মোঃ মশিয়ার রহমান এর স্বাক্ষর রয়েছে। কিন্তু ঐ নিয়োগপত্র অনুযায়ী কেহই চাকুরী পায়নি কিংবা যোগদান করতে পারেনি। শুধু ঐ চারজনই নয় দেশের সকল প্রান্ত থেকে এমনি অগনিত চাকুরী প্রার্থী প্রতিষ্ঠানের কাছে টাকা দিয়ে এমনই প্রতারণার করেছে বলে ভুক্তভোগীদের দাবী।
চাকুরী প্রাথী-
(১) তুর্য বৈরাগী,পিতা সমীর চন্দ্র বৈরাগী, গ্রাম-উত্তর গাবতলা, ডাক-শিকদার মল্লিক, থানা-পিরোজপুর সদর, জেলা পিরোজপুর, পদ- নিরাপত্তা প্রহরী (ক্যাটাগরী-৫) পদায়ন কৃত কর্মস্থল-জেলা সমাজসেবা কার্যযালয়,ঝিনইদাহ, যোগদানের তারিখ-১৪.১০.২০২৩ই।
(২) চন্দ্রা দেউরী,পিতা-অমল কৃষ্ণ দেউরী, গ্রাম-কচুবুনিয়া,পোস্ট-দুর্গাপুর,থানা-পিরোজপুর সদর,জেলা-পিরোজপুর। পদের নাম-পরিছন্নতাকর্মী (ক্যাটাগরী-৫), কর্মস্থল-জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়,ঝিনইদাহ, যোগদানের তারিখ- ১৪.১০.২০২৩ইং।
(৩) কিশোর বিশ্বাস,পিতা-সমর কৃষ্ণ বিশ্বাস,গ্রাম বিষখালী, ডাক-গোপালপুর, উপজেলা-কচুয়া, জেলা-বাগেরহাট। পদের নাম-টেকনিশিয়ান (আইসিটি, ক্যাটাগরী-১), পদায়নকৃত কর্মস্থল- বিসিআইসি ভবন (৫ম তলা) ৩০-৩১ দিলকুশা সি/এ, ঢাকা-১০০০। যোগদানের তারিখ-০২.০৭.২০২৩।
চাকুরী প্রার্থীরা নিয়োগপত্র অনুযায়ী যোগাযোগ করা হলে সেখানে এমন কোন বিষয় নাই বলে জানান। পরবর্তীতে নিয়োগপত্র প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা অন্য জায়গায় যোগদান করাবে বলে ঘুরতে থাকে। তারপরে চাকুরী পাওয়ার আশায় তারা ঘুরতে থাকে। বহুদিন ঘোরার পরে তাদের টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন তাল-বাহানা এবং হুমকি-দমকি দিতে থাকে এবং তাদের অফিস বন্ধ পাওয়া যায়।
চাকুরী প্রত্যাশিগণ অধিকাংশই গ্রামের মানুষ তাদের বার বার ঢাকায় আসা সম্ভব হয়না, তারা প্রতরণার হাত থেকে রক্ষা পেতে এবং তাদের প্রাপ্ত টাকা ফেরত পেতে আইন শৃংখলা বাহিনী সহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন। উক্ত চাকুরী এবং টাকা নেওয়ার বিষয়ে কোম্পানীর এমডি মশিউর রহমান সাহেবের সেল ফোন (01711….401) নম্বরে ফোন করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রতিবেদক কে অফিসে যেতে বলেন। তিনি নিয়োগ পত্র দিয়ে টাকা নিয়েছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি এ বিষয়ে ফোনে কথা বলবেন না বলে জানিয়ে ফোন কেটে দেন। পুনরায় ফোন করা হলে তিনি আর ফোন রিসিভ করেন নাই।
এভাবে প্রতিনিয়ত গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন নামে প্রতরক চক্র চাকুরীর ফাঁদ পেতে নিঃস্ব করছে গ্রামের সহজ-সরল মানুষদের। অবিভাবকগণও সন্তানের চাকুরীর আশায় বিভিন্ন এনজিও থেকে লোন কিংবা ধার দেনা করে প্রতারকদের হাতে টাকা তুলে দিয়ে ঘুরছে দ্বারে দ্বারে এবং ঋণের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে। এজন্য দেশের আইন শৃংখলা সজাগ দৃষ্টি ও মানুষের মাঝে সচেতনা বাড়াতে হবে তবেই দুষ্ট চক্রের প্রতারণা কমবে মুক্তি পাবে সাধারণ জনগন।