নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সচিবালয়ের আওয়ামীলীগ এখন বিএনপি হয়ে গেছে। কায়েমী স্বার্থ ঠিক রাখার জন্য সচিবালয়ের কর্তাব্যক্তিরা এখনো একই পদ্ধতিতে তাদের কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। তারাই তো একটা বালিশ কেনার জন্য ২২,০০০/- টাকা খরচ দেখিয়েছেন। আপনারা তাদের বহাল রেখে কিভাবে সংস্কার আশা করেন। পোস্টমোর্টেম করে বিভিন্ন জায়গায় লোক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তারা কিভাবে রাতারাতি বিএনপি হয়ে গেলো বা এতো বিএনপির লোক এলো কোত্থেকে এলো সেটাই তো বুঝতে পারিনা। কথাগুলো বলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
প্রজন্ম একাডেমীর সভপতি কালাম ফয়েজীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভার সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ পেশাজীবী জোটের সমন্বয়ক হুমায়ুন কবির বেপারী।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা প্রফেসর সুকোমল বড়ুয়া, বাংলাদেশ পেশাজীবী জোটের অন্যতম সমন্বয়ক এস এম মিজানুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্মের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল হোসেন শাহীন, বিশিষ্ট এনজিও ব্যাক্তিত্ব মোঃ হারুনুর রশিদ, গণতান্ত্রিক জাগ্রত বাংলাদেশের সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম কলিম, সাংস্কৃতিক দলের সাধারণ সম্পাদক এম আহমেদ খান, মুক্তিযুুদ্ধের প্রজন্মের সাধারণ সম্পাদক মো. নবী হোসেন, মুক্তিযুুদ্ধের প্রজন্মের ঢাকা মহানগর সভাপতি শোয়েব কোরাইশী, মহিদুল ইসলাম মামুন ও শরিফুল ইসলাম।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, জুনে যে নির্বাচন হবে তার গ্যারান্টি কি । নানান বাহানা নানান উছিলা করে নির্বাচন কে বিলম্বিত করা হচ্ছে। নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা করে শেখ হাসিনা এখন তার প্রায়শ্চিত্ব করছে। এখনো যারা নির্বাচন নিয়ে তালবাহানা করছেন তাদেরও একই পরিনতি ভোগ করতে হবে। আজকের গণতন্ত্র সংস্কারের বিপক্ষে নয় বরং ফেয়ার ইলেকশনের মাধ্যমে সংস্কারটা অব্যাহত রাখতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচনই একটা বড় সংস্কার। সংগঠন সংস্কার করা, সংবিধান সংস্কার করা, সময়পযোগী আইন বদল যেকোন সময় হতে পারে। এসব তো সৃষ্টিকর্তার বিধান নয়। কেবল ধর্মীয় বিধান পরিবর্তন করা যায় না। আজ কতক জ্ঞানপাপী বুদ্ধিজীবী গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখী দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। অথচ সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরও এই সংস্কার প্রক্রিয়া চলতে থাকবে। জ্ঞানী লোকদের বিশ্বাস করে দেখেছি। যদি কিছুদিনের জন্য তাদের ক্ষমতায় বসাতে পারতাম তাহলে দেখতাম তারা কিভাবে সরকার পরিচালনা করে।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, যারা ষড়যন্ত্র করে তারা কতক স্টেকহোল্ডার যোগাড় করে। সে স্টেকহোল্ডাররা ষড়যন্ত্রের পক্ষে কথা বলতে থাকে। ১৬ বছর ধরে শেখ হাসিনা দুইশ থেকে আড়াইশ নাটক সৃষ্টি করেছে। সকালে একটা নাটক ঘটিয়েছেন সেটার রেশ কাটতে না কাটতে বিকেলে আরেকটা নাটক ঘটিয়েছেন। সে নাটকের পক্ষে দেশি বিদেশি শক্তি জড়িত ছিল। তবে বিএনপির বিরুদ্ধে চক্রান্ত একটু বেশি হয়েছে, অপপ্রচার বেশি হয়েছে। কারণ সবাই জানে বিএনপির বিরুদ্ধে কিছু বললে কিছুই হয় না। বিএনপি যখন ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছে তখন একরকম অপপ্রচার হয়েছে, এখন আরেক রকম। সব সমালোচনা বিএনপির বিরুদ্ধে। সোসাল মিডিয়া স্বাধীন হলেও সংবাদপত্র স্বাধীন নয়। কারন সংবাদপত্রের মালিকরা সরকারের কাছে দায়বদ্ধ থাকে।
তিনি বর্তমান সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, শেখ হাসিনা পূর্ব থেকে পশ্চিম পর্যন্ত কোরিডোর দিয়ে রেখেছে, আপনারা কি সেটা বাতিল করতে পেরেছেন ? আপনারা কি একটাও বিচার শুরু করতে পেরেছেন ? যারা বিদেশ পালিয়ে গেলো তারা কি বিনা মাশুলে যেতে পেরেছে ? চুরির টাকা থানায় জমা হলে কথা ছিলনা। বাস্তবতা নিরিখে সংস্কার করতে হবে। এমন প্রস্তাব করা যাবে না যেটা কোন কালেই হবে না। জামায়াত তো একটা নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল তারপরেও আপনারা তাদের সাথ কেনো সংলাপ করছেন। হাসিনা যাদের চাকরি দিয়েছে তাদের চাকরিতে বহাল রেখেছেন কেনো। সংস্কারের গান শুনিয়ে দেশের মানুষকে ঘুম পাড়িয়ে রাখবেন আর মানুষ ঘুমিয়ে থাকবে সেটা ভাবলেন কিভাবে। বিগত ১৭ বছর নির্বাচনের দাবি করে বিএনটি অপরাধ করেছে। এ দাবি যতদিন আদায় না হবে ততদিন বিএনপি অপরাধ করতেই থাকবে।
বিএনপির চেয়ারপার্সন এর উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, আওয়ামীলীগ আমলে কতক লোক বলতো নির্বাচন চাই না, উন্নয়ন চাই আর হাসিনাকে বিদায়ের পর বলছে নির্বাচনের জন্য হাসিনাকে বিদায় করা হয় নাই। আগে সংস্কার চাই তারপরে নির্বাচন। অথচ দেখেছেন গত ৮ মাসে তারা ঢাকার ট্রাফিক সিস্টেমটাকে ঠিক করতে পারেনি। বিএনপি সবসময় নির্বাচনের পথে হেটেছে। জনগণ জানে বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল। এই দল সকল দলমতকে ধারন করে । বিএনপি এখনো একই পথে হাটঁছে। দেশ এখনো সংকটের মধ্যে আছে। এখনো দেশকে নিয়ে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে। বিএনপি অন্য কোন দেশের প্রেসক্রিপশনে রাজনীতী করে না। এজন্য জনগণ তাদের সাথে আছে।
হেফাজত ইসলামের মওলানা জালাল উদ্দিন আহমদ বলেন ২০১৩ সালে হেফাজতের রাতে অনেক বাবার সামনে সন্তান শহীদ হয়েছে, সন্তানের সামনে বাবা। অনেক স্ত্রী তার স্বামী হারিয়েছে কিন্তু কেউ বলতে পারেনি তাদের আপনজন শহীদ হয়েছেন। কেউ তাদের আত্মীয়ের কবরও দিতে পারেনি। সবাই নিরবে কেঁদেছে। আমরা সে জঘন্যতম গণহত্যার বিচার চাই।