নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কক্সবাজারের পেকুয়ায় পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক নাগরিক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) ও লবণ মৎস্য ও কৃষি কল্যাণ সমিতি, পেকুয়া এর উদ্যোগে লবণ চাষি ও লবণ শিল্প রক্ষার দাবিতে পেকুয়ায় জনসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ০৪ মে ২০২৫, রবিবার, বিকাল ৪ টায়, কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার উজানটিয়া সোনালী বাজার মসজিদ মাঠে পেকুয়া লবণ মৎস্য ও কৃষি কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক ও পেকুয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হাশেম এর সভাপতিত্বে এবং পরিবেশ কর্মী দেলওয়ার হোসাইন ও সাংবাদিক সোহেল আজিমের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধরিত্রি রক্ষায় আমরা (ধরা)’র কেন্দ্রিয় সদস্য সচিব শরীফ জামিল।
জনসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শরীফ জামিল বলেন, লবণের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত না করলে এবং লবণকে কৃষিপণ্য হিসাবে সুরক্ষা না দিলে দেশের খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়বে। মাছে ভাতে বাঙ্গালীদের জন্য লবণ একটি কৌশলগত পণ্য। এই আবশ্যিক পণ্য আমদানি নির্ভর হওয়া দেশের জন্য অমঙ্গলজনক। কাজেই, লবণচাষি ও লবণের মাঠ রক্ষায় লবণ শিল্পের বিরুদ্ধে চলমান সিন্ডিকেট ও ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে মাস্টার আবুল হাসেম বলেন, লবণ চাষিদের অধিকার আদায়ে শক্তিশালী একটি সংগঠন করা হয়েছে। আমরা এ সংগঠনের মাধ্যমে লবণ চাষিদের ১৫ দফা দাবি মেনে নিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে আহবান জানাচ্ছি, লবণ চাষিদের যৌক্তিক দাবি পূরণ না হলে লবণ উৎপাদন বন্ধ করে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পেকুয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুজ্জামান মঞ্জু বলেন, লবণ চাষি ও লবণ শিল্পকে সিন্ডিকেট নামক দানব গ্রাস করে নিয়েছে। এ অঞ্চলের যে সব ওয়াকফ এস্টেটের জমি রয়েছে, তা প্রশাসন ও গুটিকয়েক লোককে একক ভাবে ইজারা দিয়ে চাষিদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের খাজনা আদায় করছে। তিনি বলেন, লবণ চাষিদের ১৫ দফা দাবি যৌক্তিক এ দাবির প্রতি তিনি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন। সিন্ডিকেট মুক্ত করে এ দেশে লবণ চাষিদের বাঁচাতে এখনই সরকারের প্রতি আহবান জানান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধরা কক্সবাজার জেলা শাখার সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক ফরিদুল আলম শাহিন বলেন, দেশে যে পরিমাণ লবণের চাহিদা রয়েছে তা কক্সবাজারের লবণ চাষিরা উৎপাদনের মাধ্যমে তা পূরণ করে। কিন্তু সরকার বিভিন্নভাবে অধিগ্রহণ করে লবণ চাষযোগ্য জমিতে প্রকল্প স্থাপন করে এ শিল্পের সাথে জড়িত চাষিদের জীবন জীবিকা হুমকির মুখে দিকে নিয়ে যাচ্ছে। লবণ চাষযোগ্য জমি অধিগ্রহণ বন্ধ করে আর কোন লবণ প্রকল্প বাস্তবায়ন না করতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
জনসমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন, পেকুয়া উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুজ্জামান মঞ্জু, ধরা কক্সবাজার জেলা সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক সাংবাদিক ফরিদুল আলম শাহিন, বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মুজিব হক চৌধুরী, উজানটিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী, লবণ মৎস্য ও কৃষি কল্যাণ সমিতির সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক এম আজম উদ্দিন, সাংবাদিক আব্দুস ছালাম কাকলি, মগনামা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকের হোসেন, প্রান্তিক লবণ চাষি আদুল হালিম, কায়েস চৌধুরী, হাবিবুর রহমান, জাফর আলম, নুরুল কাদের, রাশেদুল ইসলাম, সংবাদ কর্মী হুমায়ন কবির, ছাত্র প্রতিনিধি, শহিদুল ইসলাম।
পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ক নাগরিক সংগঠন ধরা ও লবণ মৎস্য ও কৃষি কল্যাণ সমিতির আয়োজনে উজানটিয়া সোনালী বাজার মসজিদ মাঠে আয়োজিত জনসমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, বিদেশ থেকে লবণ আমদানি বন্ধ করতে হবে। বক্তারা লবণ চাষিদের দাবি মেনে নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।
এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পেকুয়া উপজেলা প্রান্তিক লবণ চাষিরা উপস্থিত ছিলেন।