মঞ্জুর: প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন, বৈষম্য নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ। শনিবার ১৯ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন শেষে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন শিক্ষকরা। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম তোতা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বৈষম্য নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের সমন্বয়কবৃন্দ মো. আসিনুর রহমান, নূরে আলম সিদ্দিকী রবিউল, শাহিনূর আক্তার, আসমা খানম, মো. মোজ্জামেল হোসেন, মো. আবদুল হক, মো. আনোয়ার উল্লাহ, টি এম জাকির হোসেন, মো. মাসুদুর রহমান। শিক্ষকরা বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন থেকে বৈষম্যের শিকার। অথচ আজ মানুষ গড়ার কারিগর হয়েও তাদের প্রাপ্যতা আদায়ে রাজপথে নামতে হয়েছে। তারা বলেন, যেখানে জাতি গঠনে শিক্ষকদের অবদান অনস্বীকার্য। স্মরকলিপিতে বলা হয়, প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক এন্ট্রি পদ ধরে ১০ম গ্রেড ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি প্রদানের দাবিতে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে বলা হয়, আমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ নানা রকম বৈষম্যের শিকার। বিগত সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে বৈষম্য নিরসনে শিক্ষকরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও কোনো সুফল পাই নি। স্মারকলিপিতে বলা হয়, আজ আমরা আপনার মত বিশ্বনন্দিত, স্বনামধন্য, সুপরিচিত, বিচক্ষণ, দূরদর্শী, সর্বজন শ্রদ্ধেয় এবং বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরস্কার নোবেল। পুরষ্কার বিজয়ী একজন ব্যাক্তিত্বকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে পেয়ে আমরা বাঙালি জাতি ধন্য এবং কৃতজ্ঞ। যাঁদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বৈরাচারী সরকারের কবল থেকে এদেশ মুক্তি লাভ করেছে তাঁদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা। বর্তমান উপদেষ্টা সরকারের দেশপ্রেম সততা, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা, একমাতা বিচক্ষণতা, দূরদর্শীতায় বাংলাদেশ সকল ধরনের সংকট কাটিয়ে উন্নয়ন এবং সমৃদ্ধিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে বলে আমরা বিশ্বাস ও আস্থা রাখি এবং আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার সকল বৈষম্য নিরসনের মধ্য দিয়ে শিক্ষকের মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা। শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড এবং শিক্ষকরা হলেন জাতি গড়ার কারিগর। প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়েন মেধাবী শিক্ষকদের পেশার প্রতি অগ্রাহ সৃষ্টির লক্ষ্যে যুগোপযোগী বেতন কাঠামো এখন সময়ের দাবি। দীর্ঘ প্রায় ১০ (দশ) বছর পূর্বে ২০১৫ সালে সর্বশেষ জাতীয় পে-স্কেল ঘোষণা করা হয়েছিল। সেখানেও প্রাথমিক শিক্ষকরা চরম বৈষম্যের শিকার হয়েছে। দশ বছরে দ্রব্য মূল্য যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে প্রাথমিক শিক্ষকরা বাজার মূল্য বহন করতে দিশেহারা। বিগত পতিত স্বৈরাচারী সরকারের মেয়াদে বেতন বৃদ্ধির আশ্বাস পেলেও তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১৫ সালের পে-স্কেলে ২০ টি গ্রেডে বেতন নির্ধারিত হয়েছিল। ২০তম থেকে ১১ তম গ্রেড পার্যন্ত বেতনের ব্যবধান নির্ধারিত হয়েছিল সর্বোচ্চ ৮০০ (আট শত) টাকা। অথচ ১০ম থেকে ১ম গ্রেডের ব্যবধান রাখা হয়েছে সর্বোচ্চ ১২০০০ (বারো হাজার) টাকা পর্যন্ত। যার ফলে ১৩তম গ্রেডে থাকা সহকারী শিক্ষকের জীবনমানের কোনো উন্নয়ন ঘটেনি। ২০০৯ সাল থেকে বন্ধ থাকা প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি আজও আলোর মুখ দেখেনি। স্মারকলিপিতে বলা হয়, বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বৈষম্য নিরসনে সহকারী শিক্ষকদের জন্য ১২তম গ্রেড, সহকারী প্রধান শিক্ষক ১১তম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড প্রদানের প্রস্তাব করেছেন। বৈষম্য নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষক সমন্বয় পরিষদ এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে সহকারী শিক্ষক এন্ট্রি পদ ধরে ১০ম গ্রেড ও শত ভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির জোর দাবি জানান।