ইকবাল হোসেনঃ বৃহস্পতিবার ২২ আগষ্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে স্বৈরাচারের দোসরদের কর্তৃক জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত করা, তথাকথিত স্বেচ্ছায় অবসরে যেতে বাধ্য করা এবং অহেতুক বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোদেরকে চাকুরিতে পূর্ণ বহালের দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এই দাবি জানান।
সৈয়দ রফিকুল ইসলাম বলেন,প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস স্যার মহোদয়ের অনুপস্থিতিতে স্বৈরাচারের দোসরদের কর্তৃক জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত করা, তথাকথিত স্বেচ্ছায় অবসরে যেতে বাধ্য করা এবং অহেতুক বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোদেরকে চাকুরিতে পূর্ণবহাল করতে হবে।
তিনি বলেন স্বৈরাচারের দোসর সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল মজিদ এবং তাঁকে সহযোগিতা করা সাবেক এমডি জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার থেকে শুরু করে বর্তমান এড নূর মোহাম্মদসহ যাঁরা অন্যায় ও দূর্ণীতির সাথে জড়িত তাঁদের সবাইকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
সাবেক চেয়ারম্যান, এমডিসহ জড়িত বিভাগ প্রধানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সমুহ:
১। ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার করার জন্য বিভিন্ন মিডিয়ার বাবদ কিছু টাকা খরচ করেন কিন্তু ১ কোটি ১৮ লক্ষ টাকা খরচ দেখিয়ে বেশীরভাগ টাকা আত্মসাৎ করেন।
২। ডঃ মুহাম্মদ ইউনূস স্যারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা মামলার ডকুমেন্ট তৈরী করার জন্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর জুবাইদ এর নেতৃত্বে প্রায় ১৫/১৬ জনের একটি টিম গঠন করে তাদের জন্য অল্প টাকা খরচ করে প্রায় ২ কোটি টাকা খরচ দেখিয়ে বেশীর ভাগ আত্মসাৎ করেন। ১৫/১৬ জনের দুপুরের লাঞ্চ বাবদ প্রায় ১২ লক্ষ ১৭ হাজার টাকা খরচ দেখিয়ে আত্মসাৎ করেন।
৩। ব্যাংকের প্রথম বিল্ডিংএ প্রায় ১০ লক্ষ টাকা খরচ করে একটি অভ্যর্থনা কেন্দ্র তৈরী করে তার বিপরীতে ৩৭ লক্ষ টাকা খরচ দেখিয়ে বাকী টাকা আত্মসাৎ করেন।
৪। ব্যাংকের প্রথম বিল্ডিং এ নামমাত্র মেডিকেল সেন্টার তৈরী করে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন।
৫। সম্পুর্ন অবৈধভাবে পদোন্নতি দিয়ে পদোন্নতি প্রাপ্তদের কাছ থেকে লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা ঘুষ নিয়েছেন। পদোন্নতি প্রাপ্তরা হলেন রেজানুর ইসলাম, রনকুল খান, আবদুল বাতেন, হারুন অর রশীদ, জাকারিয়া হাবিবসহআরো অনেক।
৬। প্রচুর টাকা ঘুষ নিয়ে গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশ ও চাকুরী বিধিমালা লঙ্ঘন করে বিভিন্ন পদের এল পি আর বাতিল করে ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসিয়ে তাদের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন।
৭। চেয়ারম্যান এবং এম ডি যোগ সাজসে ঘুষ বানিজ্য করে মধুমতি ব্যাংক, শেয়ার বাজারসহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ
আর্থিক প্রতিষ্টানে শত শত কোটি টাকা বিনিয়োগ করে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যাপক ক্ষতি করেছেন।
৮। হেড অফিস, যোনাল অফিসে পোষ্টিং দেয়া এবং চাকরিতে নিয়োগের জন্য সকল এম ডি এবং চেয়ারম্যান যোগসাজসে প্রচুর টাকা দুর্নীতি করেছেন। একবার নিয়োগের দুর্নীতির টাকা ভাগাভাগিতে হিসাবে গরমিল হওয়ায় সাবেক এম ডি আঃ রহিম খানকে পেনশনের টাকা আটকিয়ে দিয়েছেন পরবর্তীতে সমান ভাগ দেয়ারয়পর রহিম খানের থেকে প্রায় ২৭ লক্ষ টাকা কর্তন করে পেনশনের টাকা ফেরত দেন।
৯। প্রতিষ্টানের জন্য প্রায় ৮/১০ টি গাড়ী ক্রয় করে কয়েক কোটি টাকা দুর্নীতি করেছেন। আবার প্রতিষ্টানের দামী গাড়ীগুলো নামমাত্র অল্প টাকা দিয়ে বিভিন্ন জনে ইচ্ছেমতো নিয়ে যান।
১০। বর্তমান ঠিকানা জালিয়াতি করে মেজর জুবাইদ এর সহযোগিতায় ক্যান্টেনম্যান্ট এর ঠিকানা ব্যবহার করে ব্যাংকের টাকা খরচ করে ভি আই পি মর্যাদায় এক দিনের মধ্যে বর্তমান এম ডি নূর মোহাম্মদ, বিভাগ প্রধান প্রশাসন এস কে আজিজ, বিভাগ প্রধান সার্ভিসেস মতিয়ার রহমান তিনজনের পাসপোর্ট বানান। পাসপোর্ট বানানোর উদ্দেশ্য ছিলো যুক্তরাষ্ট্রের আওয়ামীলীগের সভাপতির নেতৃত্বে তারা তিনজন আমেরিকা গিয়ে ডঃ ইউনূস স্যারের বিরুদ্ধ কিছু ভূঁয়া ডকুমেন্ট নিয়ে অপপ্রচার চালাবে তার জন্য ব্যাংক থেকে ৩০ কোটি টাকা খরচ করার পরিকল্পনাও করেছিলো কিন্তু স্বৈরাচার হাসিনার পতনের কারনে তা করার সুযোগ পায়নি।
এই সব দুর্নীতির সাথে জড়িত সাবেক চেয়ারম্যান এ কে এম সাইফুল মজিদ এবং প্রাক্তন এম ডি জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার আঃ রহিম খান, মোসলেম উদ্দিন এবং বর্তমান এম ডি নূর মোহাম্মদসহ সংশ্লিষ্ট অনেক বিভাগ প্রধান জড়িত। যারা পেনশনের টাকা নিয়ে চলে গেছে তাঁদেরকে আইনের আওতায় আনার এবং বর্তমান এমডি নূর মোহাম্মদসহ যারা এখনও কর্মরত আছে তাদেরকে অপসারনের জোর দাবি জানাচ্ছি।
দাবি না মানলে বক্তারা কর্মসূচি ঘোষণা করেন- স্ব-পদ বহাল রেখে চাকরীতে পূর্ণ বহাল করা,১০ কর্ম দিবসের মধ্যে বকেয়া প্রদান।উল্লেখিত সময়ের মধ্যে যোগদান না নিলে আ-মরণ অনশন কর্মসূচী গ্রহণ।
উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন প্রধান সমন্বয়ক সৈয়দ রফিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান, হুমায়ূন কবির খান, হামিদুর রহমান, জাকারিয়া হাবিব, মাসুদ রানা মোহাম্মদ রফিক সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।