স্টাফ রিপোর্টারঃচরফ্যাশনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেন ঘোড়া প্রতীকে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফিরোজ প্লাবন।
মঙ্গলবার সকাল ১১.০০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঘোড়া মার্কার প্রার্থী ফেরোজ প্লাবন কিবরিয়া।
ফিরোজ প্লাবন কিবরিয়ার লিখিত বক্তব্য থেকে জানা যায় চতুর্থ ধাপে অনুষ্ঠিতব্য চরফ্যাশন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের একজন (ঘোড়া প্রতীকে) চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। এই নির্বাচনকে ঘিরে শুরু থেকেই মোটর সাইকেল মার্কার প্রার্থী জয়নাল আবেদীনের লোকজন দলীয় প্রার্থী জাহির করে ফিরোজ প্লাবন ও তার কর্মী সমর্থকদের উপর ব্যাপক হুমকি-ধামকি ও শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করে। এ বিষয়ে তিনি চরফ্যাশন থানায় বেশ কয়েকটি অভিযোগ করলে কয়েকজন মোটর সাইকেল প্রতীকের লোকজনকে পুলিশ আটক করে।তিনি জানান নির্বাচন পরিচালনার জন্য বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিং এজেন্ট নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিজস্ব লোকজন নিয়োগ দিয়ে জাল ভোট, ভোট ডাকাতী ও সিল মারার সুযোগ করে দিয়েছে মোটর সাইকেল প্রার্থী জয়নাল আবেদীন।
নির্বাচনের দিন প্রায় সকল কেন্দ্রে ঘোড়া মার্কার কোন এজেন্টকে কেন্দ্রের ভিতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি এবং কোথাও কোথাও নির্বাচনের আগের রাতেই ভোটারদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভয়-ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছে। অনেক কেন্দ্র থেকে এজেন্টদের বের করে দেয়া হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিষ্ট্রেটগণদেরকে বার বার জানালেও কোন প্রতিকার পায়নি বলে জানান। আসলামপুর ইউনিয়নে আবুগঞ্জ বাজার কেন্দ্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সালেক মুহিদ সাহেবকে ভয়-ভীতি দেখানো ফিরোজ প্লাবনের কয়েকজন এজেন্টকে ডেকে এনে বিষয়টি প্রমাণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ফিরোজ প্লাবন কিবরিয়া এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢোকার জন্য বলেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় মনোনয়ন ও প্রতীক বিহীন একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন, অথচ আমার উপজেলায় দলীয় প্রার্থী পরিচয়ে মাননীয় এমপি জ্যাকব সাহেবের নাম ভাঙ্গিয়ে এলাকার প্রভাব বিস্তার করেছে মোটর সাইকেল প্রতীকের লোকজন। যা উক্ত নির্বাচনের ভোট ডাকাতির কারণ।উল্লেখ্য, মোটর সাইকেল প্রার্থী মোঃ জয়নাল আবেদীন নির্বাচনের বিভিন্ন প্রচারণায় স্থানীয় এমপি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব খামারবাড়ীতে এক বর্ধিত সভায় বলেছেন, সাবেক সাবেক সাবেক অর্থাৎ জয়নাল আবেদীনের জন্য দলীয় নেতাকর্মীদেরকে নির্বাচনে কাজ করতে হবে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দলীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন ঘোষণার পরিপন্থী। তার এমন বক্তব্যের ভিডিও তার কাছে রয়েছে বলে জানান।এছাড়া কিশোর ছেলেদেরকে দিয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে জাল ভোট দেয়ার মহোৎসব করেছে মোটর সাইকেল প্রতীকের লোকজন, বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে হাতেনাতে ধরে পুলিশে দিয়েছে বলে জানান। যাহার ভিডিও ফুটেজ তার কাছে রয়েছে।
কেন্দ্র পরিদর্শনে বিভিন্ন সাংবাদিকদের জরিপে বিকেল তিনটা পর্যন্ত ৮-১০% ভোটার উপস্থিতি থাকলেও মাত্র এক ঘন্টায় বিকেল ৪টায় ভোট দেখানো হয়েছে ২২-২৩%। তা কিভাবে সম্ভব সেটা প্রশ্ন রাখেন। উল্লেখ্য, ভোটারশূন্য চারফ্যাশন উপজেলা নির্বাচন শিরোনামে বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকা, অনলাইন পোর্টালে নিউজ হয়েছে (কপি সংযুক্ত)।এছাড়া অন্যান্য উপজেলায় ভোট গণনা শেষে ফলাফল ৩-৪ ঘন্টায় হলেও আমার উপজেলায় ৭/৮ ঘন্টায় ফলাফল ঘোষণা হয়। যা একটি সাজানো ও মনগড়া ফলাফল ঘোষণার নিদর্শন বলে তিনি মনে করেন।
উপজেলার ১৩১টি কেন্দ্রের কাস্টিং ভোটের মুড়িতে রাখা ভোটারদের টিপ ও স্বাক্ষর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য তিনি সাংবাদিকদের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবী জানান। কারণ প্রকাশ্যে সিল মারা, মৃত ব্যক্তির ভোট, জাল ভোট ও ভোট ডাকাতিসহ ব্যাপক অনিয়ম এই নির্বাচনে দৃশ্যমান, যার প্রমাণাদী তার কাছে আছে বলে জানান। এ বিষয়ে তদন্ত করার দাবী করেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা মতে এবারের উপজেলা নির্বাচন একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, দলীয় প্রভাবমুক্ত, দলীয় মনোনয়ন ও দলীয় প্রতীক বিহীন নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও চরফ্যাশন উপজেলায় এমন প্রহসন ও দলীয় প্রভাবের নির্বাচনে শুধু তিনিই ব্যাথিত নয়, চরফ্যাশন উপজেলার লাখো লাখো ভোটার ও জনগণ ব্যাথিত এবং নিরবে কাঁদছে এলাকার ভোটারগণ। তাই আমি এই ভোট ডাকাতির সুষ্ঠু তদন্তসহ পুনঃনির্বাচন দাবি করছি।
তিনি জানান মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সকল উন্নয়নের ও নৌকা প্রতীকের সর্বোচ্চ প্রচারক ও একজন কণ্ঠশিল্পী হিসেবে তার চরফ্যাশন উপজেলায় তদন্ত সাপেক্ষে পুনঃনির্বাচন দিয়ে উপজেলা বাসীর ভোটের সঠিক মূল্যয়ন করতে বাধিত হবেন বলে বিশ্বাস করেন।