রুপসীবাংলা ৭১ অন্যান্য ডেস্ক : কোরআনুল কারিমের অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
সুরা আনআম, আয়াত : ৪-৫
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে
وَ مَا تَاۡتِیۡهِمۡ مِّنۡ اٰیَۃٍ مِّنۡ اٰیٰتِ رَبِّهِمۡ اِلَّا كَانُوۡا عَنۡهَا مُعۡرِضِیۡنَ ﴿۴﴾
فَقَدۡ كَذَّبُوۡا بِالۡحَقِّ لَمَّا جَآءَهُمۡ ؕ فَسَوۡفَ یَاۡتِیۡهِمۡ اَنۡۢبٰٓؤُا مَا كَانُوۡا بِهٖ یَسۡتَهۡزِءُوۡنَ ﴿۵﴾
সরল অনুবাদ
(৪) তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলীর মধ্যে এমন কোনো নিদর্শন তাদের নিকট উপস্থিত হয় না, যা থেকে তারা মুখ ফেরায় না।
(৫) সত্য যখনই তাদের কাছে এসেছে, তারা তা মিথ্যাজ্ঞান করেছে। অতএব যা নিয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত তার যথার্থ সংবাদ অচিরেই তাদের কাছে পৌছুবে।
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
সুরার ৪নং আয়াতে অমনোযোগী মানুষের হঠকারিতা ও সত্যবিরোধী জেদের কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, তাদের কাছে আল্লাহর নিদর্শনাবলী থাকার পাশাপাশি নবী-রাসুলগণ তাদের কাছে আল্লাহ্ তাআলার একত্ববাদের সুস্পষ্ট যুক্তি-প্রমাণ ও নিদর্শন নিয়ে এসেছেন এবং তা তাদের কাছে স্পষ্টও হয়েছে।
তা সত্ত্বেও অবিশ্বাসীরা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের হেদায়াতের জন্য যে কোনো নিদর্শন প্রেরণ করা হলে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়- এ সম্পর্কে মোটেই চিন্তা-ভাবনা করে না। (আল-মুয়াসসার)
সুরার ৪নং আয়াতে বলা হচ্ছে যে, এই বিমুখতা এবং মিথ্যা ভাবার শাস্তি তারা পাবে। তখন তাদের মধ্যে এই অনুভূতির সৃষ্টি হবে যে, হায়! এই সত্য কিতাবকে মিথ্যাজ্ঞান এবং তার সাথে ঠাট্টা-বিদ্রূপ যদি না করতাম!
অবিশ্বাসীদের সামনে সত্য প্রতিভাত হওয়ার পরও তারা সত্যকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। যদিও মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং কোরআনের অস্তিত্ব ছিল সত্যের এক বিরাট নিদর্শন।
এছাড়া মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাধ্যমে হাজারো মু’জিযা ও খোলাখুলি নিদর্শন প্রকাশ পায়, যেগুলো কোনো সুস্থ বিবেকসম্পন্ন মানুষ অস্বীকার করতে পারতো না। কিন্তু কাফেররা এসব নিদর্শনকে সুস্পষ্ট মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিল।
৫নং আয়াতের শেষে কাফেরদের অস্বীকৃতি ও মিথ্যারোপের অশুভ পরিণতির দিকে ইঙ্গিত করে বলা হয়েছে যে, আজ তো এসব অপরিণামদর্শী লোকেরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মু’জিযা, তার আনীত হেদায়াত, কেয়ামত ও আখেরাত সবকিছু নিয়েই হাস্যোপহাস করছে, কিন্তু সে সময় দূরে নয়, যখন এগুলোর স্বরূপ তাদের দৃষ্টিতে প্রতিভাত হবে। আর কেয়ামত দিবস প্রতিষ্ঠিত হবে।
সেখানে প্রত্যেককে তার ঈমান ও আমলের হিসাব দিতে হবে এবং প্রত্যেকে নিজ নিজ কর্মের পুরস্কার ও শাস্তি পাবে। ‘…কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাআলা মিথ্যারোপকারীদের বলবেন, “এটাই সে আগুন যাকে তোমরা মিথ্যা মনে করতে’ (সুরা আত-তূর, আয়াত : ১৪)
কিয়ামতের দিন কাফেরদের সামনে কিভাবে এ সত্যকে উপস্থাপন করা হবে তার বর্ণনায় আল্লাহ আরও বলেন, “আর তারা দৃঢ়তার সাথে আল্লাহর শপথ করে বলে, যার মৃত্যু হয় আল্লাহ তাকে পুনর্জীবিত করবেন না। কেন নয়? তিনি তার প্রতিশ্রুতি পূর্ণ করবেনই। কিন্তু বেশীর ভাগ মানুষই এটা জানে না– তিনি পুনরুথিত করবেন যে বিষয়ে তাদের মতানৈক্য ছিল তা তাদেরকে স্পষ্টভাবে দেখানোর জন্য এবং যাতে কাফিররা জানতে পারে যে, তারাই ছিল মিথ্যাবাদী। (সূরা আন-নাহ্ল, আয়াত : ৩৮, ৩৯) অতএব সেদিন তারা তাদের মিথ্যাচারের ভয়াবহতা প্রত্যক্ষ করবে কঠিন আযাবে নিপতিত হওয়ার মধ্য দিয়ে।
রুপসীবাংলা ৭১/এআর