সুরা আনআম, আয়াত : ১
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে
اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ جَعَلَ الظُّلُمٰتِ وَ النُّوۡرَ ۬ؕ ثُمَّ الَّذِیۡنَ كَفَرُوۡا بِرَبِّهِمۡ یَعۡدِلُوۡنَ ﴿۱﴾
সরল অনুবাদ
(১) প্রশংসা আল্লাহরই যিনি আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, আর সৃষ্টি করেছেন অন্ধকার ও আলো। এতদসত্ত্বেও অবিশ্বাসীগণ তাদের প্রতিপালকের সমকক্ষ স্থির করে।
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
এ সুরাটি (الْحَمْدُ لِلَّهِ) বাক্য দ্বারা শুরু করা হয়েছে। এখানে মানুষকে বলা হচ্ছে যে, হে মানুষ! তোমরা তার জন্যই যাবতীয় হামদ ও শোকর নির্দিষ্ট কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, আরও সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীন।
তাঁর সাথে কাউকেও সামান্যতম অংশীদারও করবে না। এ বিশেষ পদ্ধতি শিক্ষাদানের মধ্যে এদিকেও ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, পরিপূর্ণ হামদ বা প্রশংসা একমাত্র তাঁরই, যার কোনো শরীক নেই। তাকে ব্যতীত আর যে সমস্ত উপাস্যের ইবাদাত করা হয়, তারা এ হামদ প্রাপ্য নয়। (তাফসিরে তাবারি) সুরার এ প্রথম আয়াতে سماوات শব্দটিকে বহুবচনে এবং أرض শব্দটিকে একবচনে উল্লেখ করা হলেও জমিন ১টি এটা ভাবার অবকাশ নেই।
কারণ অন্য এক আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসমানের ন্যায় যমীনও সাতটি। (সুরা আত-তালাক ১২) এমনিভাবে ظلمات শব্দটিকে বহুবচনে এবং نور শব্দটিকে একবচনে উল্লেখ করার মাঝেও একটি বড় ইঙ্গিত রয়েছে। সেটি হচ্ছে- نور বলে বিশুদ্ধ ও সরল পথ বুঝানো হয়েছে এবং তা মাত্র একটিই। আর সেটি হচ্ছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক বলে দেয়া ও দেখানো পথ।
পক্ষান্তরে তার বিপরীতে ظلمات বলে ভ্রান্ত পথ ব্যক্ত করা হয়েছে, যা অসংখ্য। যেগুলোর অনুসরণে কোনোভাবেই মুক্তির আশা করা যাবে না। (বাহরে মুহিত, তাফসিরে ইবন কাসির) এ আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে- একত্ববাদের স্বরূপ ও সুস্পষ্ট প্রমাণ বর্ণনা করে জগতের ঐসব জাতিকে হুশিয়ার করা যারা একত্ববাদে বিশ্বাসী নয় কিংবা বিশ্বাসী হওয়া সত্বেও একত্ববাদের তাৎপর্যকে পরিত্যাগ করে বসেছে। কারণ, মানুষকে আল্লাহ তায়ালা আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা হিসেবে দুনিয়াতে পাঠানোর পরও তারা পথভ্রষ্ট হল। চন্দ্র, সূর্য, তারকারাজি, আকাশ, পানি, বৃক্ষলতা এমনকি পোকা-মাকড়কেও সিজদার যোগ্য উপাস্য, রিজিকদাতা ও বিপদ দূরকারী সাব্যস্ত করে নিল।
এ আয়াত আল্লাহ তায়ালাকে জমিন ও আসমানের স্রষ্টা এবং অন্ধকার ও আলোর উদ্ভাবক বলে উপরোক্ত সব ভ্রান্ত বিশ্বাসের মূলোৎপাটন করা হয়েছ। কেননা, অন্ধকার ও আলো, আসমান ও জমিন এবং এতে উৎপন্ন যাবতীয় বস্তু আল্লাহ্ তায়ালার সৃষ্ট। অতএব, এগুলোকে কী করে আল্লাহ্ তায়ালার অংশীদার হতে পারে?
যিনি সৃষ্টি করেন তিনি কি যারা সৃষ্টি করতে পারে না তাদের মতো? সুতরাং কিভাবে ইবাদাতে ও সম্মানে তাঁর সমকক্ষ কাউকে দাড় করানো যায়? (তাফসিরে ইবন কাসির, ফাতহুল কাদির)
রুপসীবাংলা ৭১/এআর
কোরআনের বাণী,
ভ্রান্ত পথ অনেক হলেও মুক্তির সরল পথ একটিই
রুপসীবাংলা ৭১ অন্যান্য ডেস্ক : কোরআনুল কারিমের অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
সুরা আনআম, আয়াত : ১
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে
اَلۡحَمۡدُ لِلّٰهِ الَّذِیۡ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضَ وَ جَعَلَ الظُّلُمٰتِ وَ النُّوۡرَ ۬ؕ ثُمَّ الَّذِیۡنَ كَفَرُوۡا بِرَبِّهِمۡ یَعۡدِلُوۡنَ ﴿۱﴾
সরল অনুবাদ
(১) প্রশংসা আল্লাহরই যিনি আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, আর সৃষ্টি করেছেন অন্ধকার ও আলো। এতদসত্ত্বেও অবিশ্বাসীগণ তাদের প্রতিপালকের সমকক্ষ স্থির করে।
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
এ সুরাটি (الْحَمْدُ لِلَّهِ) বাক্য দ্বারা শুরু করা হয়েছে। এখানে মানুষকে বলা হচ্ছে যে, হে মানুষ! তোমরা তার জন্যই যাবতীয় হামদ ও শোকর নির্দিষ্ট কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, আরও সৃষ্টি করেছেন আসমান ও যমীন।
তাঁর সাথে কাউকেও সামান্যতম অংশীদারও করবে না। এ বিশেষ পদ্ধতি শিক্ষাদানের মধ্যে এদিকেও ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, পরিপূর্ণ হামদ বা প্রশংসা একমাত্র তাঁরই, যার কোনো শরীক নেই। তাকে ব্যতীত আর যে সমস্ত উপাস্যের ইবাদাত করা হয়, তারা এ হামদ প্রাপ্য নয়। (তাফসিরে তাবারি) সুরার এ প্রথম আয়াতে سماوات শব্দটিকে বহুবচনে এবং أرض শব্দটিকে একবচনে উল্লেখ করা হলেও জমিন ১টি এটা ভাবার অবকাশ নেই।
কারণ অন্য এক আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আসমানের ন্যায় যমীনও সাতটি। (সুরা আত-তালাক ১২) এমনিভাবে ظلمات শব্দটিকে বহুবচনে এবং نور শব্দটিকে একবচনে উল্লেখ করার মাঝেও একটি বড় ইঙ্গিত রয়েছে। সেটি হচ্ছে- نور বলে বিশুদ্ধ ও সরল পথ বুঝানো হয়েছে এবং তা মাত্র একটিই। আর সেটি হচ্ছে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কর্তৃক বলে দেয়া ও দেখানো পথ।
পক্ষান্তরে তার বিপরীতে ظلمات বলে ভ্রান্ত পথ ব্যক্ত করা হয়েছে, যা অসংখ্য। যেগুলোর অনুসরণে কোনোভাবেই মুক্তির আশা করা যাবে না। (বাহরে মুহিত, তাফসিরে ইবন কাসির) এ আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে- একত্ববাদের স্বরূপ ও সুস্পষ্ট প্রমাণ বর্ণনা করে জগতের ঐসব জাতিকে হুশিয়ার করা যারা একত্ববাদে বিশ্বাসী নয় কিংবা বিশ্বাসী হওয়া সত্বেও একত্ববাদের তাৎপর্যকে পরিত্যাগ করে বসেছে। কারণ, মানুষকে আল্লাহ তায়ালা আশরাফুল মাখলুকাত বা সৃষ্টির সেরা হিসেবে দুনিয়াতে পাঠানোর পরও তারা পথভ্রষ্ট হল। চন্দ্র, সূর্য, তারকারাজি, আকাশ, পানি, বৃক্ষলতা এমনকি পোকা-মাকড়কেও সিজদার যোগ্য উপাস্য, রিজিকদাতা ও বিপদ দূরকারী সাব্যস্ত করে নিল।
এ আয়াত আল্লাহ তায়ালাকে জমিন ও আসমানের স্রষ্টা এবং অন্ধকার ও আলোর উদ্ভাবক বলে উপরোক্ত সব ভ্রান্ত বিশ্বাসের মূলোৎপাটন করা হয়েছ। কেননা, অন্ধকার ও আলো, আসমান ও জমিন এবং এতে উৎপন্ন যাবতীয় বস্তু আল্লাহ্ তায়ালার সৃষ্ট। অতএব, এগুলোকে কী করে আল্লাহ্ তায়ালার অংশীদার হতে পারে?
যিনি সৃষ্টি করেন তিনি কি যারা সৃষ্টি করতে পারে না তাদের মতো? সুতরাং কিভাবে ইবাদাতে ও সম্মানে তাঁর সমকক্ষ কাউকে দাড় করানো যায়? (তাফসিরে ইবন কাসির, ফাতহুল কাদির)
রুপসীবাংলা ৭১/এআর