রুপসীবাংলা৭১ অন্যান্য ডেস্ক : কোরআনুল কারিমের অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্য
সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১৮
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ
পরম করুণাময়, অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে
اِنَّ اللّٰهَ یَعۡلَمُ غَیۡبَ السَّمٰوٰتِ وَ الۡاَرۡضِ ؕ وَ اللّٰهُ بَصِیۡرٌۢ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ ﴿۱۸﴾
সরল অনুবাদ
(১৮) নিশ্চয় আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে অবগত আছেন। আর তোমরা যা কর আল্লাহ তা দেখেন।
সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা
এ আয়াতটি সূরা আল-হুজুরাতের শেষ আয়াত। এর পূর্ববর্তী আয়াতগুলোতে আল্লাহ তায়ালা মহানবী (সা.)-এর প্রতি অনুচিত আচরণ, মুনাফিকদের ভণ্ডামি, এবং কিছু বেদুইনদের অশোভন দাবি ও আচরণের সমালোচনা করেছেন।
শেষ আয়াতে আল্লাহ স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, মানুষের অন্তরের অবস্থা, লুকানো উদ্দেশ্য, এবং ভবিষ্যতের ঘটনাবলি এর কোনো কিছুই তাঁর জ্ঞানের বাইরে নয়।
আয়াতে উল্লেখিত “আল্লাহ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর অদৃশ্য বিষয় সম্পর্কে অবগত” এখানে গায়েব বলতে বোঝানো হয়েছে—যে বিষয়গুলো মানুষের দৃষ্টির আড়ালে, মানুষের জ্ঞানের সীমার বাইরে। কাজেই আকাশমণ্ডলীতে যা কিছু ঘটছে, ফেরেশতাদের কার্যক্রম, ভবিষ্যতের সিদ্ধান্ত, রিজিক বণ্টন সবই তাঁর জানা। পৃথিবীতে মানুষের গোপন পরিকল্পনা, অন্তরের ইচ্ছা এবং অদেখা সব বিষয়ও তাঁর জ্ঞানের মধ্যে রয়েছে।
সুরা আনআম ৫৯ নং আয়াতে এসেছে: “গায়েবের চাবি কেবল তাঁর কাছেই আছে। তা তিনি ছাড়া কেউ জানে না।”
অতএব মানুষের প্রতিটি কাজ গোপনে হোক বা প্রকাশ্যে; আল্লাহর জ্ঞানে রয়েছে। তিনি শুধু দেখেনই না, বরং সেই অনুযায়ী প্রতিদানও দিবেন।
এখানে আল্লাহর “বাসীর” (সব দেখেন) গুণের উল্লেখ করে মানুষকে সতর্ক করা হয়েছে, যেন কেউ মনে না করে তার ছোট বা লুকানো কাজও অগোচরে রয়ে গেছে।
আয়াতের শিক্ষা ও বার্তা
- গায়েবের জ্ঞান কেবল আল্লাহর: কোনো নবী, ফেরেশতা বা অলী স্বভাবত গায়েব জানেন না; আল্লাহ চাইলে সীমিত কিছু জানিয়ে দেন (সূরা জিন, আয়াত :২৬-২৭)।
- অন্তরের উদ্দেশ্যও আল্লাহর কাছে স্পষ্ট: তাই শুধু বাহ্যিক ভালো কাজ নয়, নিয়তও শুদ্ধ রাখতে হবে।
- প্রতিটি কাজের হিসাব হবে: গোপন অপরাধ হোক বা সৎকাজ হোক। সবই কিয়ামতে প্রকাশিত হবে ও প্রতিদান দেয়া হবে।
(সুরা যিলযাল, আয়াত :৭-৮)।
রুপসীবাংলা৭১/এআর