নিজস্ব প্রতিনিধিঃ চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে এমভি আল-বাখেরা জাহাজের ৭ জন শ্রমিকের নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ সমাবেশে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের ঘোষণা-
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে আজ ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ বিকাল ৩ টায় ৮ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, গুলিস্তান ঢাকায় এক প্রতিবাদ সভা শুরু হয়ে বিকাল ৪ টায় এক বিশাল বিক্ষোভ মিছিল সহকারে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের ঘোষণার মধ্য দিয়ে সমাপ্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি জনাব মোঃ শাহ আলম। সঞ্চালনা করেন শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্য আতিকুল ইসলাম টিটু। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম, বাংলদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সহ-সভাপতি খলিলুর রহমান খান, মোঃ ইয়াসিন, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু সাইদ, আন্তর্জাতিক সম্পাদক মোঃ নিজামুল ইসলাম, আইন বিষয়ক উপকমিটির সদস্য রিয়াজ উদ্দিন রুবেল, বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ নুর আলম, মাহাবুব হক, প্রচার সম্পাদক এইচ এম আনিসুর রহমান, কার্যকরী কমিটির সদস্য মোঃ মামুন ভূইয়া, বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার এসোসিয়েশন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোঃ ফিরোজ আলম, বাল্কহেড শাখার সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মোঃ আজিজুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়া উদ্দিন বাবলু, সদস্য মোঃ আশিক, বাংলাদেশ লঞ্চ লেবার এসোসিয়েশন বাল্কহেড শাখা নারায়ণগঞ্জ কমিটির সহ-সভাপতি মোঃ রুহুল কুদ্দুস, মিজানুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের নৌ সেক্টরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ পৈচাশিক নজীরবিহীন হত্যাকাণ্ড হচ্ছে চাদপুরে মেঘনা নদীতে এমভি আল-বাখেরা জাহাজের ৭ জন শ্রমিকের নৃশংস হত্যাকা-। এই ধরনে রোমহর্ষক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা প্রমাণ করছে এইদেশে নৌশ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে কতটা অনিরাপদ। দেশে সারের তীব্র সংকটের সময় সার পরিবহনে যেখানে সরকারের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণে কথা সেখানে কিভাবে এতোটা অনিরাপদ ভাবে সার পরিবহন করে? এদেশের প্রতিটি সরকার বার বার আশ্বাস দিলেও শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় নি। পূর্বের সরকারের ধারাবাহিকতায় বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত না করা রাষ্ট্রের চরম ব্যর্থতার বর্হিপ্রকাশ।
বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণন সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলম সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের জলসীমা থেকে ২টি ফিশিং ট্রলারকে ভারতীয় কোষ্টগার্ড কর্তৃক আটক করে ভারতে নিয়ে গিয়ে ৭৯ জন শ্রমিককে ভারতের কারাগারে অন্তরীণ রাখা ও ভারতগামী বাংলাদেশী জাহাজের শ্রমিকদের ল্যান্ডিংপাস না দেওয়ায় চিকিৎসা বিহীন মৃত্যু ও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে আত্মহত্যার কথা উল্লেখ করে হরিনা ঘাটের কাছে মাঝেরচর এলাকায় এম. ভি. আল-বাখেরা জাহাজে সন্ত্রাসী কায়দায় নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঘটনাস্থলেই জাহাজের মাষ্টার সহ ৭ জন শ্রমিকের হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারন উদ্ঘাটন, হত্যাকারীদের সনাক্ত করে খুনিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি প্রদানের ক্ষেত্রে সরকার আন্তরিকতা দেখাবে বলে আশা প্রকাশ করেন অন্যথায় শ্রমিকরা বৃহত্তর আন্দোলনের পথে নামতে বাধ্য হবে।
সভাপতি মোঃ শাহ আলম তার বক্তব্যে বলেন বর্তমান সময়ে আমরা দেখতে পাই দেশে কোন ঘটনা ঘটলে সরকারের একদল লোক সেখানে ছুটে যায় কিন্তু নৌসেক্টরে এই রকম ভয়াবহ হত্যাকাণ্ডের পরও সরকারের উচ্চ মহল একেবারেই নিশ্চুপ হয়ে বসে আছে। মালিকপক্ষের কোন তৎপরতাও লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যা শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করছে। সভাপতি আরো বলেন আগামী ২৬ ডিসেম্বর সন্ধ্যার মধ্যে প্রকৃত খুনীদের সনাক্ত করে গ্রেফতার ও বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা, মৃত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য সরকারি ভাবে ২০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান করতে সরকার ব্যর্থ হলে আগামী ২৬ ডিসেম্বর রাত ১২:০১ মিনিট অর্থাৎ ২৭ ডিসেম্বরের সূচনালগ্ন থেকে খুনীদের বিচার কার্য শেষ না হওয়া পর্যন্ত এদেশের নৌযান শ্রমিকরা লাগাতার কর্মবিরতি পালন করবে। এতে কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার সম্পূর্ণ দায় সরকার ও মালিক পক্ষের উপর বর্তাবে।