নিজস্ব প্রতিবেদক: গতকাল ১৭ই সেপ্টেম্বর ২০২৪ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সকল দপ্তর/অধিদপ্তর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে কর্মরত কর্মকর্তা কর্মচারীদের পদোন্নতী পদায়নসহ সকল বৈষম্য নিরষনের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। উক্ত কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন, সভাপতি মোঃ লিয়াকত আলী, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কল্যাণ সমিতি, মোঃ আজিজুল হক খোকন, সাধারণ সম্পাদক, মোঃ অহিদুর রহমান, মহাসচিব, মাওলানা মোঃ দেলোয়ার হোসেন, সভাপতি, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি। সভাপতি মোঃ লিয়াকত আলী বলেন, শিক্ষা একটি জাতির অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং মনোবৃত্তিক উন্নয়নের মূল হাতিয়ার। এ কারণেই শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নত না হলে জাতির সামগ্রিক অগ্রগতি সম্ভব নয়। তবে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত সেবা প্রত্যাশী নাগরিকদের শিক্ষার চাহিদা পূরণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপজেলা পর্যায়ে কোনো অফিস ছিল না। ১৯৯৩ সালে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ দপ্তর, অধিদপ্তর, শিক্ষা বোর্ড এবং বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম উপজেলা পর্যায়ে বাস্তবায়ন ও সমন্বয় সাধন করা। পাশাপাশি, মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিবিড় পরিদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা ছিল এর অন্যতম উদ্দেশ্য। ৯০-এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন শেষে আমরা, একঝাঁক তরুণ অফিসার, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করি। আমাদের কাজের ফলশ্রুতিতে দেশের মাধ্যমিক শিক্ষায় উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বিশেষ করে, নারী শিক্ষার প্রসার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তখন মাধ্যমিক স্তরে নারী শিক্ষার হার ছিল মাত্র ২৭%, যা বর্তমানে ৫৪%-এ উন্নীত হয়েছে। এই বৃদ্ধির ফলে সমাজের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সূচকে আমরা বড় অগ্রগতি সাধন করেছি। নারীদের শিক্ষিত করে তোলার মাধ্যমে বাল্য বিবাহ রোধ, মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার হ্রাস, স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি, এবং নারীদের কর্মক্ষম করে তোলার মাধ্যমে আমরা সামাজিক উন্নয়নের নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছি। গত ৩০ বছর ধরে অনাদর, অবজ্ঞা, এবং বৈষম্যের ছায়ায় মাথা নিচু করে আমরা দাঁড়িয়ে আছি। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে যে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হয়েছে তার ফলে আমরা নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছি। আমরা বিশ্বাস করি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ জনাব ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ মহোদয়ের মত দূরদর্শী নেতৃত্বের মাধ্যমে আমাদের এই বৈষম্য দূর করা সম্ভব। বৈষম্য নিরসনে আমাদের দাবীসমূহ : ক) পদোন্নতির মাধ্যমে জেলা শিক্ষা অফিসারের শতভাগ পদে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদায়ন করতে হবে এবং ৬ষ্ঠ গ্রেড প্রাপ্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের চলতি দায়িত্ব প্রদান করতে হবে। খ) উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের শূন্য পদে সহকারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার এবং বিভিন্ন প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের যথাযথ পদোন্নতি ও পদায়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গ) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সকল দপ্তর, অধিদপ্তর এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক পদে যোগ্যতা অনুযায়ী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ অধিদপ্তর/দপ্তরে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং বিভিন্ন প্রকল্পের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি ও পদায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। ঘ) আমরা আমাদের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সম্মান করি। তবে, আমরা জোর দিয়ে বলছি, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে থাকবেন এবং তাদের দিয়ে প্রশাসনিক কাজ করানো যাবে না। তাছাড়া, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হার ৯৭%, যেখানে সরকারি স্কুলের ৩% শিক্ষক বাকি ৯৭% শিক্ষকদের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পেলে চরম বৈষম্য সৃষ্টি হয়। তাই, মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের কোনো বিকল্প নেই। ঙ) ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর কতিপয় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক তেলবাজির মাধ্যমে গত ১৫ বছর ধরে ঢাকার বিভিন্ন স্কুলে প্রধান শিক্ষকের পদ দখল করে রেখেছে। তাদের মফস্বল এলাকায় বদলি করে এবং জেলা শিক্ষা অফিসার পদে কর্মরতদের মূল পদে ফিরিয়ে নিতে হবে। বৈষম্যের শিকার প্রধান শিক্ষকদের ঢাকার স্কুলে পদায়ন করতে হবে। চ) মাউশির নিয়োগ বিধি-২০২১ সংশোধন করে সকল পদে ৮০% পদোন্নতি ব্যবস্থা করতে হবে, পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিএড ডিগ্রী বাতিল করতে হবে, সকল পদের ফিডার সময়সীমা