মঞ্জুর: ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির উদ্যোগে বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে “চাঁদামুক্ত, সন্ত্রাসমুক্ত, নিরাপদ যাত্রী বান্ধব ও সুশৃংখল সড়ক ব্যবস্থাপনা” শীর্ষক মুক্ত আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির আহ্বায়ক মোঃ সাইফুল আলম। তিনি জানান, ২০০৮ পরবর্তী ২০২৪, ৫ই আগষ্ট পর্যন্ত সড়ক পরিবহন সেক্টরে চাঁদাবাজি, দখল, সন্ত্রাস, নিয়ম বহির্ভূত এক নৈরাজ্যকর অবস্থা বিরাজমান ছিল। ঢাকা থেকে শুরু করে সারাদেশে মালিক সমিতি, বিভিন্ন পরিবহন কোম্পানী, বাস টার্মিনাল এবং শ্রমিক ইউনিয়ন দখল করে এককভাবে আওয়ামী দলীয় নেতৃত্ব কায়েম করে চাঁদাবাজির স্বর্গরাজ্য কায়েম করে। সরকার বিরোধী আন্দোলন দমনে দলীয় কর্মকান্ডে মালিক-শ্রমিকদেরকে দলীয় কর্মীর মত ব্যবহার করে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র জনতার নেতৃত্বে বিজয়ের পর পরিবহন সেক্টরে দীর্ঘদিনের মালিক/শ্রমিক স্বার্থ পরিপন্থি কর্মকান্ডে চাঁদাবাজির সাথে যারা জড়িত ছিল, তারা পরিবহন সেক্টর পরিত্যক্ত রেখে, দেশের বাহিরে পালিয়ে যায় এবং বাকিরা আত্মগোপনে চলে যায়। এতে সাধারন জনগন দূর্ভোগে পরে এবং সড়ক পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় মালিক, চালক ও শ্রমিকদের সমন্বয়ে পরিবহন খাত সুশৃংখল ও সচল রাখার উদ্যোগ গ্রহন করা হয়। কার্যক্রম গতিশীল ও চলমান রাখার জন্য ঢাকা সড়কের সাধারন মালিক ও কাউন্সিলরবৃন্দ গঠনতন্ত্র মোতাবেক গত ১৪/৮/২০২৪ইং তারিখে “তলবী সভা” আহবান করে সাধারন মালিকগন প্রায় দেড় যুগ নিগৃহীত- নিপীড়নের অবসান ঘটিয়ে মোঃ সাইফুল আলম-কে আহবায়ক করে ৩৫ (পঁয়ত্রিশ) সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করে পরবর্তী নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কার্য্যক্রম পরিচালনা করার দায়িত্ব অর্পন করা হয়। পরবর্তীতে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নব-গঠিত আহবায়ক কমিটি সড়ক পরিবহনে শৃংখলা আনার লক্ষ্যে নিম্নলিখিত কর্মসূচী গ্রহন করেঃ- ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতৃত্বে যানবাহনে চাঁদাবাজি বন্ধ ও যাত্রীবান্ধব পরিবহন সেবা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যাত্রীদের নিরাপত্তা ও নিরাপদ সড়ক গড়ার লক্ষ্যে কাজ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বিশেষ করে মহিলা যাত্রীদের, শিশু ও প্রতিবন্ধি ও বয়জ্যেষ্ঠ যাত্রীদের প্রতি বিশেষ যত্নশীল হওয়ার উদ্যোগ গ্রহন করা হইবে বলিয়া সিদ্ধান্ত হয়। সড়ক দূর্ঘটনা কমিয়ে আনার জন্য মালিক/শ্রমিক ও প্রশাসনের সহযোগিতায় চেষ্টা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মালিক-শ্রমিক-পুলিশ প্রশাসন সর্বোপরি ছাত্র-জনতাকে সম্পৃক্ত করে যাত্রী জনকল্যানমুখী নিরাপদ সড়ক গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সকল টার্মিনালে চালক-শ্রমিকদের নিয়মিত কাউন্সিলিং/মোটিভেশন সভা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ট্রাফিক বিভাগের সাথে সমন্বয় করে কমিউনিটি ট্রাফিক নিয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন টার্মিনাল সম্মুখসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজট নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সকল প্রকার চাঁদা সম্পূর্ণরূপে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে বন্ধ ঘোষনা করা হইয়াছে। পরিশেষে তারা জানান, সকলে মিলে বিগত দিনের বিরাজমান অনিয়ম দূর করে জনবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে চাই। সর্বোপরি আধুনিক নিরাপদ জন কল্যানমূলক ব্যবস্থা গড়ে তুলে বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকারের সাথে একীভূত হয়ে দেশ গড়ায় অংশীদার হতে চাই।