নিজস্ব প্রতিনিধি :আমরা তীব্র ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করলাম যে, ৯ ডিসেম্বর রোকেয়া দিবসে রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান তাঁর ফেসবুকে একটি পোষ্ট শেয়ার করে ক্যাপশনে তিনি নারী জাগরণের অগ্রদুত রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনকে ‘মুরতাদ কাফির’ আখ্যা দেন। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ বিশ^বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের এই অজ্ঞতা ও ধৃষ্টতায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করছে।
মহিলা পরিষদ মনে করে যারা ধর্মের অপব্যাখ্যার উপর ভর করে নারীদের সামনের দিকে অগ্রসর হওয়ার পথে বাধা সৃষ্টি করছে, বিশ^বিদ্যালয়ের এই শিক্ষক তাদেরই একজন। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন দেড়শত বছর আগে নারী মুক্তির যে স্বপ্ন দেখিয়ে গেছেন তাঁর আদর্শ এখনও প্রাসঙ্গিক হওয়ায় নারীর প্রগতি বিরোধী একটি গোষ্টী তাঁকে ভয় পায়। রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্বপ্নকে বুকে ধারণ করে যখন আমাদের দেশেরমেয়েরা সকল ক্ষেত্রে অগ্রসরমান হওয়া আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ঠিক তখন শিক্ষক নামধারী একজন ব্যক্তির এই অপপ্রচার আমাদের ভাবতে বাধ্য করছে তাঁর শিক্ষকতার যোগ্যতার প্রশ্ন নিয়ে। যখন রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রোকেয়া দিবস পালন করা হচ্ছে, রোকেয়া পদকের প্রবর্তণ করা হয়েছে তখন এই ধরনের অপপ্রচার রাষ্ট্রীয় নীতি বিরোধী কাজ। তাঁকে নিয়ে শিক্ষক নামধারী একজন ব্যক্তির এই ধরনের অপপ্রচার করার ধৃষ্টতায় নারী সমাজ ক্ষুব্ধ।
মহিলা পরিষদ মনে করে এই ধরনের অপচেষ্টা স্বাধীনতা উত্তোর বাংলাদেশে নারীর অগ্রযাত্রা প্রতিহত করার একটি ষড়যন্ত্র এবং দেশের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করার একটি অপতৎপরতা। এই অপপ্রচার সুস্থ সমাজ গঠনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। সমাজের মধ্যে বসবাসকারী নারী বিদ্বেষী গোষ্ঠীর এই ধরণের সমাজবিরোধী কর্মকান্ড সম্মিলিতভাবে এখনই প্রতিহত করা দরকার।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ এই শিক্ষককে অনতিবলম্বে শিক্ষকতা থেকে অপসারণের দাবি জানাচ্ছে। একইসাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারী বিরোধী, নারী বিদ্বেষী অপপ্রচার রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ সকল ধরণের নারী বিদ্বেষী মৌলবাদী কর্মকান্ডের প্রতিরোধ ও পুনরাবৃত্তিরোধে সচেতন নাগরিক সমাজের সকলকে এগিয়ে আসার আহŸান জানাচ্ছে।

