প্রেসবিবৃতিঃ ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক ভি.সি.ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি ড.আ.আ.ম.স আরেফিনি সিদ্দিকী স্বাক্ষরিত প্রেস বিবৃতি –
জাতির পিতার ৪৯তম শাহাদত বার্ষিকী পালনের এই সময়ে আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি। একই সাথে আমরা স্মরণ করি বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যসহ আরো যাঁরা ৭৫-এর ১৫ আগষ্ট ঘাতকদের নির্মম আঘাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এছাড়া সাম্প্রতিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের সবার স্মৃতির প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি আমরা আন্তরিক সমবেদনা জানাই।
সেই সাথে আমরা দৃঢ়মত ব্যক্ত করছি যে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ঐতিহাসিক বাসভবন আমাদের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের মূর্ত প্রতীক। বঙ্গবন্ধু এই বাসভবন থেকেই ১৯৭১-এর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে স্বাধীনতার ঘোষণা ও মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। এই ভবনেই তিনি ৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে শাহাদত বরণ করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়ের সাথে এই ঐতিহাসিক ভবনটি ভাংচুর ও তাতে অগ্নিসংযোগের ন্যায় জঘণ্য ঘটনার কী সংযোগ থাকতে পারে তা আমাদের কাছে বড় প্রশ্ন।
মেহেরপুরের মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর, যেখানে বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ নিয়েছিল, সেটিও ভাংচুর করা হয়েছে, যা আমাদের গৌরবময় ইতিহাসকেই মারাত্মকভাবে আঘাত করেছে। দেশের বহু স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ও মুক্তিযুদ্ধের স্মারকচিহ্ন নির্বিচারে ভাংচুরের ঘটনায় আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন্। বাঙালির বীরত্বপূর্ণ অনপনেয় ইতিহাসের ওপর এ আঘাত একটি নিন্দনীয় গর্হিত অপরাধ। এসব ঐতিহাসিক স্থাপনা এভাবে ধ্বংস করার পেছনে জড়িতদের অবিলম্বে চিহ্নিত করা ও ধ্বংসপ্রাপ্ত স্থাপনাসমূহ পুনর্নিমাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আমরা সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি।
বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি-অনুসঙ্গসমূহ যেভাবে ধ্বংস করা হয়েছে তা আর কোনোভাবেই ফিরে পাওয়া যাবে না তা আমরা অতীব দুঃখের সাথে উপলব্ধি করি। এটি বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি অপূরণীয় ক্ষতি, ইতিহাস যা কোনোদিনই ক্ষমা করবে না।