আসলাম ইকবালঃ আমার তবলা শিক্ষা শুরু হয় প্রথম ওস্তাদ সাখাওয়াত হোসেন খাঁ সাহেবের কাছে। কমার্সিয়াল বাদন তালিম আতিকুর রহমানের কাছে। উনার কাছ থেকেই আমি অনবদ্য তবলার ঠেকা সঞ্চালন শিখি। যা পরবর্তীতে ভারতীয় শিক্ষায় আরো সিদ্ধি লাভ করে। আমার গুরুজি ছিলেন পন্ডিত শ্রী অনিল পালিত। যার বেনারস ঘরানায় তালিম হয় পন্ডিত কৃষাণ মহারাজ এর কাছে। ভারতের শিক্ষা লাভের পর আমার বাদন পদ্ধতির উন্নতি হয়। ৮০ ও ৯০ দশকের প্রায় সব কিংবদন্তি শিল্পীদের সাথেই সঙ্গত করার সুযোগ পেয়েছি। বর্তমানেও সেই কিংবদন্তিদের সন্তান সন্ততিদের সঙ্গে বাজাবার সুযোগ পাচ্ছি। আপনাদের দোয়ায় ও আমার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং পরিশ্রমে এই ৭১ বছর বয়সেও বাজিয়ে বেড়াচ্ছি এবং আমৃত্যু বাজিয়ে যাবার ইচ্ছে রাখি, যদি আল্লাহ সুস্থভাবে বাঁচিয়ে রাখেন।
আমার প্রিয় শিল্পী ও সুরকার হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সংগীত পরিচালক ভারতের পশ্চিমবঙ্গের সুধীন দাস গুপ্ত, আর মুম্বাইয়ের নওশাদ আলী, আর বর্তমান প্রজন্মের মুম্বাইয়ের শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে আমি মনে করি, প্রীতম এবং জিৎ গাঙ্গুলী। আর সে যুগের সংগীত পরিচালক ছিলেন নওশাদ আলী। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় এমন একজন সুরকার যার প্রত্যেকটি গানই হিট। তার সুর করা হিন্দি বাংলা কোনটি ফেলে দেয়ার মত নয়। অনবদ্য একটি প্রতিভার মানুষ ছিলেন তিনি।
আমাদের বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের কাতারে আছেন প্রথমেই বলতে হয় আমার মামা গায়ক মোঃ আব্দুল জব্বার, ফেরদৌসী রহমান, শাহনাজ রহমাতুল্লাহ, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী ,খালেদ হোসাইন, মাহমুদুন্নবী, খন্দকার ফারুক আহমেদ, বশির আহমেদ, আঞ্জুমান আরা বেগম, লায়লা আরজুমান্দ বানু, মোহাম্মদ সোহরাব হোসেন, শ্রেষ্ঠত্বের শিখরে ছিলেন আব্দুল আলিম, আব্দুর রউফ ও আরো অনেকে।
আমাদের দেশের খ্যাতনামা সংগীত পরিচালকদের ভেতরে সত্য সাহা, সুবল দাস ,আজাদ রহমান, মনসুর আহমেদ, ধির আলী মনসুর, আলম খান, আমার বন্ধু আলাউদ্দিন আলী, আমার অপর বন্ধু শেখ সাদী খান, আরেক বন্ধুবরের কথা উল্লেখ না করলেই নয় সে হচ্ছে লাকি আখনদ্,রবিন ঘোষ ও আরো অনেকে। পৃথিবীর বহু দেশেই তবলা বাজিয়ে বাংলাদেশের মান সমুন্নত রাখতে পেরেছি। বাবুল বলেন পৃথিবীর যেখানেই গিয়েছি সেখানেই গর্ভের সাথে বাংলাদেশি শিল্পী হিসেবে আঁচড় কেটে এসেছি সবার মনে। দীর্ঘ প্রায় ৫২ বছরের আমার এই তবলার ক্যারিয়ার। বাংলাদেশে তবলা শিল্পী মিলন ,সাদিক আলী আমার অতিব ঘনিষ্ঠ। একসাথে অনেক কাজ করেছি আমাদের বাজানো প্রচুর হিট গান রয়েছে। আমার তবলা আর বশিরের ঢোলকে বেদের মেয়ে জোছনার হিট দুই গান সাবিনার গাওয়া আজো সুপার হিট্, সংগীত পরিচালক আবু তাহেরের সুরে। আমি দেখতে চাই একসাথে চারটি তবলা,চারটি ঢোলক, দুই বঙ্গ অর্থাৎ ১০-১৫ জনের একটি তাল বাদ্যযন্ত্রীদের সেকশন দেখতে চাই রেকর্ডিংএ। প্রতি বাদ্যযন্ত্রীদের সহযোগিতা পেলে আমার নিজের প্রয়াসে একসাথে রিওয়াজের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তাতে করে যারা উঠতি বয়সী বাদ্যযন্ত্রে তারা দীক্ষিত হয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে পারবে। পৃথিবীর যেকোনো দেশে গিয়ে স্বীকৃতি পাবেন।মনে রাখবেন স্বপ্ন কিন্তু বাস্তব হয় তার জন্য নিজেকে সচেষ্ট হতে হবে। নোংরা পলিটিক্স এর মধ্যে যাবেন না, শিল্পকর্মে মন দেন, সৃষ্টিকর্তা অবশ্যই আপনাকে সহযোগিতা দেবেন। মনে রাখবেন, আসুন সব শিল্পীরা একত্রিত হয়ে একসাথে মিলেমিশে কাজ করি নোংরামির ফলাফল নোংরাই হয়। বাবুল বলেন আসুন সারা বাংলাদেশের সব শিল্পীরা একসাথে হয়ে আমরা কাজ করি। টিম ওয়ার্কের কোন বিকল্প নেই। ছবিঃ মোস্তাফিজ মিন্টু।