নিজস্ব প্রতিনিধিঃ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে বিশেষজ্ঞদের সাথে নিয়ে একটি জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিসিপি) প্রণয়ণে কাজ করে আসছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যয় অনুসারে ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে কাজের গতি ও পরিধি বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। এমতাবস্থায় বর্তমান প্রেক্ষাপটে তামাক নিয়ন্ত্রণকে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় নিয়ে যেতে হলে এনটিসিপি প্রণয়নের পাশাপাশি বাস্তবায়নের পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই।
উক্ত বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করে আজ ১৩ মে ২০২৪ (সোমবার) সকাল ১১ টায় ডাব্ল্বিউবিবি ট্রাস্টের কৈবর্ত সভাকক্ষে একটি সভার আয়োজন করা হয়। এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা এর সভাপতিত্বে, বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত “স্থায়ীত্বশীল তামাক নিয়ন্ত্রণে এনটিসিপি বাস্তবায়ন জরুরি” শীর্ষক এই সভায় বক্তারা বলেন, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিসিপি) মূলত তামাক নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ পলিসি যার অধীনে ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সামগ্রিক নীতি প্রণয়ন, পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, পর্যবেক্ষণ ও বিভিন্ন কর্মসূচি সম্পাদন হয়।’ জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিসিপি) বাস্তবায়নে মূল লক্ষ্য তামাক ব্যবহারের ক্ষতিকর দিক ও আইন সম্পর্কে অধিক সচেতন করা, আইনের প্রয়োগ যথাযথ ও সহজতর করা এবং তামাকজনিত সৃষ্ট মৃত্যু হার কমিয়ে আনা। প্রণীত “এনটিসিপি” যথাযথ বাস্তবায়িত হলে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে “জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল” এর কার্যক্রমসহ সার্বিক তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা ট্রিজা কৃষ্ণা গমেজ।
বক্তারা বলেন, পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে সার্বিক তামাকের ব্যবহার কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে এনটিসিপি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। উল্লেখ্য ভারতের এনটিসিপিতে গ্রাম পর্যায়ে কার্যক্রমের জন্য পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানের সাথে সমন্বয়, স্বাস্থ্য ও সমাজকর্মী, এনজিওদের প্রশিক্ষণের বিষয়টিও যুক্ত করা হয়েছে। গ্লোবাল এডাল্ট টোব্যাকো সার্ভে (গ্যাটস) এর ২য় সমীক্ষা অনুসারে, এনটিসিপি বাস্তবায়নে ফলে ভারতের উক্ত স্থানগুলোতে তামাক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ৮১ লক্ষ হ্রাস পেয়েছে। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট দীর্ঘদিন ধরে তামাক নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (এনটিসিপি) প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অনুরোধ জানিয়ে আসছে।
সভায় প্রনীত এনটিসিপি অনুসারে বৎসরভিত্তিক সুনিদিষ্ট কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন, কর্মসূচী গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের পাশাপাশি প্রতিটি খাতের জন্য সুনিদিষ্ট বাজেট নিশ্চিতকরনের আহ্বান জানানো হয়। এছাড়াও তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক গবেষনা পরিচালনা, আইন বাস্তবায়নের অবস্থা পর্যালোচনা, মনিটরিং ও দক্ষতাবৃদ্ধিমূলক কর্মসূচিগুলো সফল করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। সভায় আরো বলা হয়, তামাক নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে সরকারের অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা এবং অভিজ্ঞ বেসরকারী সংস্থাগুলোর সাথে সমন্বয় ও সহযোগিতার ভিত্তিতে উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন। পাশাপাশি আলোচকগণ স্থায়ীত্বশীল তামাক নিয়ন্ত্রণে তামাক বিরোধী সংগঠনগুলোকে অর্থায়নের জন্য একটি সুনিদিষ্ট নীতিমালা প্রণয়ণেরও অনুরোধ জানান ।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সহযোগী অধ্যাপক মো. বজলুর রহমান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের হেড অব প্রোগ্রাম সৈয়দা অনন্যা রহমান, ডিডিপি’র নির্বাহী পরিচালক কাজী সোহেল রানা, শুচীতা সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক নাসরিন পারভীন, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা শামীমা সুলতানা, বিএনটিটিপি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল, ডাস্’র সিনিয়র প্রোগ্রাম লিড মো. দোয়াবখ্শ শেখ, নাটাবের প্রকল্প কর্মকর্তা ফিরোজ আহমেদ, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সিনিয়র প্রকল্প কর্মকর্তা সামিউল হাসান সজীব, প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্য, কমিউনিকেশন কর্মকর্তা শানজিদা আক্তার, নেটওয়ার্ক কর্মকর্তা আজিম খান, মিডিয়া অফিসার নাজমুন নাহার, প্রকল্প কর্মকর্তা প্রমা সাহা, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন কমিটির প্রোগ্রাম অফিসার মো. বায়তুল হাসান, ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের সহকারী প্রকল্প কর্মকর্তা বাঁধন ঘোষ এবং ইন্সটিটিউট অফ ওয়েলবীং এর প্রকল্প কর্মকর্তা শাপলা খাতুন।