মঞ্জর: জমির ক্ষতিপূরণ না দিয়ে বেআইনিভাবে মুগদা মেইন রোডের দুই পাশের শত শত বাড়ি ও বিল্ডিং ভেঙ্গে না ফেলার আহবান জানিয়েছেন জমির মালিকরা। শনিবার সকালে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে জমির মালিকদের পক্ষে এএসএম সালাউদ্দিন এ আহবান জানান।
তিনি জানান, মুগদা এলাকার প্রধান সড়কের দুই পাশের স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে নিজস্ব জমিতে আমাদের পূর্বপুরুষগণ এবং আমরা রাজউকের অনুমোদন নিয়ে বাড়ি ঘর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন বসবাস করে আসছি। এমনকি অনেকে দোকান পাট তৈরি করে অথবা বাণিজ্যিকভাবে ভাড়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছি। এখানে অনেকগুলো ব্যংকও রয়েছে। অনেকে আবার বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে গৃহনির্মাণ ঋন নিয়ে বাড়িগুলো বন্ধ রেখেছেন। অনেকের বাড়িটি তাদের একমাত্র আবাসস্থল বা অনেকে ভাড়া দিয়ে যে আয় করে তা দিয়ে পরিবার পরিজনের ব্যয় নির্বাহ করে থাকেন এবং যা তাদের একমাত্র অবলম্বন। তিনি বলেন, মুগদা প্রধান সড়কটি সর্বশেষ ঢাকা সিটি জরিপ অনুযায়ী ৩০ ফুট প্রশস্ত। আমরা সম্প্রতি রাজউকের নোটিশের মাধ্যমে জানতে পারি এ সড়কে রাজউক কর্তৃক প্রণীত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ), (২০২২-২০৩৫) এর পরিকল্পনা অনুযায়ী ৫০ ফুট বা ৬০ ফুট সড়কের পরিল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। নকশা চেয়ে রাজউক থেকে আমাদের অনেককে নোটিশ প্রদান করা হয়েছে। আবার অনেকে নোটিশ পায়নি। তিনি আরও বলেন, রাজউকের লোকজনসহ স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যে সড়কের উভয় পাশে আমাদের জায়াগাসহ নির্মিত স্থাপনা /ভবন এর মাপঝোপ করেছেন। রাজউকের লোকজন জানিয়েছে আমাদের জায়গাসহ বাড়িঘর শীঘ্রই ভেঙ্গে ফেলে সড়ক নির্মাণ করবে। কিন্ত তারা জমিগুলো এখনও আইনিভাবে অধিগ্রহণ করেনি। তাদের পক্ষ থেকে আমাদের জমি কি পরিমান অধিগ্রহন করা হবে তা জানায়নি বা জমি বা জমির উপর স্থাপিত বিল্ডিং বা বাড়ির ক্ষতিপূরণ কি দেওয়া হবে তাও জানায়নি। এরই মধ্যে গতকাল এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে আগামীকাল রবিবার সড়কের আশপাশের সকল স্থাপনা ভেঙ্গে ফেলা হবে। আমাদের জমিও স্থাপনার ক্ষতিপূরণ না দিয়ে জোরপূর্বক ভেঙ্গে ফেলার খবরে আমরাসহ এলকাবাসী আতঙ্কিত ও উদ্বীগ্ন।
এএস এম সালাউদ্দিন বলেন, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে বা সরকারি প্রয়োজনে জমি অধিগ্রহন করার বিধান আছে তা আমরাও জানি। কিন্তু আমাদের জমি অধিগ্রহণ করতে হলেতো সরকারিভাবে মূল্যপরিশোধ বা ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আমাদের শত শত ভবন ও জমি তারা অধিগ্রহণ করবেন সেটিরতো বিধান রয়েছে। কিন্তু অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে তারা বেআইনিভাবেই আমাদের জমি ও স্থাপনা দখল করতে চায়। এ বিষয়ে কিছুদিন পূর্বে আমরা মহামান্য হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করেছি। মহামান্য হাইকোর্ট রাজউকের চেয়ারম্যানসহ কর্তৃপক্ষকে আগামী একমাসের মধ্যে আইনিভাবে আমাদের সাথে বসে বিষয়টি মিটমাট করতে নির্দেশ দিয়েছেন।তিনি বরেন, আমাদের জমিসহ স্থাপনার ক্ষতিপূরণ প্রদান না করে অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক উচ্ছেদ না করতে। কিন্তু বিষয়টি তারা আমলে না নিয়ে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে উচ্ছেদের পরিকল্পনা নিচ্ছে বলে আমার শুনতে পাচ্ছি।
এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছি আমাদের জমিসহ স্থাপনার ক্ষতিপূরণ না দিয়ে অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক আমাদের উচ্ছেদ না করার। ক্ষতিপূরণ না দিয়ে বেআইনিভাবে জোরপূর্বক উচ্ছেদ করলে পরিবার পরিজন নিয়ে আমাদের পথে বসা ছাড়া কোন উপায় থাকবে না। তিনি বলেন আমাদের প্রাপ্য ক্ষতিপূরণ দিয়ে জমি অধিগ্রহন করলে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না। এ সময় মাহবুবুর রহমানসহ ৫০ জনের অধিক বাড়ির মালিক উপস্থিত ছিলেন।