নিজস্ব প্রতিনিধি : শিশু অধিকার সুরক্ষাসহ চারটি বিষয় নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে লোকাল এডুকেশন অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশন (লিডো), হিউম্যান রাইটস ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (এইচআরডিসি) ও ঢাকা সেন্টার ফর ডায়ালগ (ডিসিডি)। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আকরাম খাঁ হলে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ‘২০২৬ সালের জাতীয় নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় শিশু অধিকার সুরক্ষা’ শীর্ষক জাতীয় সংলাপে এ দাবি জানানো হয়।
সংগঠনগুলো বলছে, জাতীয় নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোকে সুস্পষ্ট নীতিগত অবস্থান নিতে হবে। এজন্য তারা চারটি দাবি উপস্থাপন করেছেÑ ১. কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি, মিছিল বা প্রচারণায় শিশুদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা। ২. নির্বাচনকালীন রাস্তার ও ঝুঁকিপূর্ণ শিশুদের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ। ৩. শিশু অধিকার সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভুক্ত করা। ও ৪. শিশুদের রাজনৈতিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করা।
লিডোর চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেনের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, বিএনপির লন্ডন শাখার প্রচার সম্পাদক ড. মইনুল ইসলাম, বাংলাদেশের খবর-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও ঢাকা সেন্টার ফর ডায়ালগ-এর প্রেসিডেন্ট সৈয়দ মেজবাহ উদ্দিন, ঢাকা সেন্টার ফর ডায়ালগের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাশার আমজনতা দলের সাধারণ সম্পাদক তারেক রহমান, এশিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর শাহজাহান খান, ঢাবি ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক ওয়াসিফ তামি, এশিয়ান টিভির সাবেক হেড অব নিউজ সিরাজুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামী ঢাকা-৬-এর প্রার্থী ড. আবদুল মান্নান, এইচআরডিসির সীমান্ত সিরাজসহ আরও অনেকে

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, আমাদের রাষ্ট্র পরিপূর্ণভাবে মেরামত করতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কার করতে হবে। নির্বাচনে যারা শিশুদের ব্যবহার করবে, তাদের বর্জন করতে হবে।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, শিশুরা ভোট দেয় না, কিন্তু ভোটের সময় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে পড়ে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নিরাপত্তা নিশ্চিত না হলে কোনো নির্বাচনই অর্থবহ হতে পারে না।
তারা আরও বলেন, রাষ্ট্র মেরামত ও সংস্কার জরুরি, কারণ এখনো শিশুশ্রম ও পথশিশুদের নানা ক্ষেত্রে শোষণ চলছে। অনেক রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক গোষ্ঠী শিশুদের ব্যবহার করছেÑমিছিল-মিটিংয়ে ফুল দেওয়া থেকে শুরু করে পণ্য বিক্রি পর্যন্ত, যা অনৈতিক। পথশিশুদের শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থান ও নিরাপত্তায় রাষ্ট্রের কার্যকর ভূমিকা দুর্বল, ফলে অনেক শিশু খাদ্য, চিকিৎসা এবং আবাসন থেকেও বঞ্চিত থাকে।
আগের সরকার ভিক্ষুক পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিলেও স্থায়ী সমাধান হয়নি। ভবিষ্যৎ সরকার শিশুদের অধিকার নিশ্চিতে কাজ করবে বলে আশা প্রকাশ করা হয় অনুষ্ঠানে। এ ছাড়া বিশ্বের অনেক দেশে শিশুরা যুদ্ধের শিকার হলেও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নীরবতার সমালোচনা করা হয়।
বক্তাদের মতে, রাজনৈতিক ইশতেহারে পথশিশুদের অধিকার ও সুরক্ষা পরিষ্কারভাবে উল্লেখ করতে হবে এবং শিশুদের নির্বাচনী কাজে ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। পরিবারের দায়িত্ব হলো শিশুর মানসিক ভিত্তি তৈরি করা। শিশুদের স্বপ্ন দেখানো ও তা বাস্তবায়নে পরিবার-সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।

