নিজস্ব প্রতিনিধি :১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। আমরা উদ্যাপন করতে যাচ্ছি বিজয়ের ৫৫তম বার্ষিকী। আজ থেকে ৫৪ বছর পূর্বে এই দিনে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বাঙালি জাতি অর্জন করে মহান স্বাধীনতা। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র সংগ্রাম ও লাখো শহীদের আত্মদান এবং এ দেশের নারী সমাজের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। যেখানে এ দেশের নারী সমাজের রয়েছে গৌরবময় সক্রিয় ভূমিকা।
বাঙালি জাতি প্রতিবছর এই দিবসকে যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে পালন করে আসছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে নারীসমাজ সহ আপামর জনতার ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশে নারীর ভূমিকার চিত্র ও ইতিহাস মুছে ফেলার প্রয়াস চলছে। স্বাধীনতার ৫৫ বছর পরেও বাঙালি জাতির এই কালজয়ী ইতিহাস নির্মাণে নারীর বহুমাত্রিক অবদান ও অংশগ্রহণের চিত্র উপেক্ষিত করে নারী সমাজকে পিছনে নেয়ার সব রকম পাঁয়তারা চলছে। একই সাথে গোটা সমাজকে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের ক্ষেত্র তৈরি করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে সমাজে নারীর প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, অন্য ধর্মের প্রতি সহিংসতার ঘটনা বৃদ্ধি ও সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে সমাজে বিভাজন তৈরি করছে। ধর্মের নামে নারী সমাজকে বিভিন্নভাবে অবমাননাকর পরিস্থিতির সম্মুখীন করছে। নারীর প্রতি নানা ধরনের কুৎসা ও অশোভন উক্তি করে নারীকে প্রতিনিয়ত অবমাননাকর পরিস্থিতির সম্মুখীন করছে। সংবিধান সংশোধনের নামে নারীর স্বীকৃত সাংবিধানিক অধিকার থেকে নারীকে বঞ্চিত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। এটা গুরুতরভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সার্বিক উন্নয়নের অন্তরায়। এ সকল বিষয়ে অন্তবর্তীকালীন সরকারের নির্লিপ্ত অবস্থান পরিস্থিতি আরও সংকটাপন্ন করতে সহায়তা করছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ নারীর প্রতি সকল প্রকার সহিংসতা প্রতিরোধ করে নারী নির্যাতন মুক্ত পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে, ’৭২ এর সংবিধানে বিশ্বাসী, সচেতন, অসাম্প্রদায়িক, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, মানবিক জনপ্রতিনিধিত্বশীল নারী-পুরুষের সমতায় বিশ্বাসী বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানাচ্ছে। সচেতন দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক, একমুখী বিজ্ঞানভিত্তিক, জেন্ডার সংবেদনশীল শিক্ষানীতি বাস্তবায়ন করে একটি যুক্তিবাদী, সমতাভিত্তিক, মানবিক, নারী-পুরুষের সমতায় বিশ্বাসী বাংলাদেশ গড়ার এবং যথাযোগ্য মর্যাদার সাথে বিজয় দিবস পালনের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।

