রুপসীবাংলা৭১ প্রতিবেদক : গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী নওয়াব আলী মার্কেট এলাকায় একটি বাসা হতে স্ত্রীর গলাকাটা মরদেহ এবং স্বামীকে অর্ধ গলাকাটা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রাথমিক অবস্থায় স্বামীকেও মৃত বলে মনে হলেও তিনি মারাত্মক জখম হয়েছেন।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) দিবাগত মধ্যরাতে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে এবং গুরুতর আহত অবস্থায় স্বামীকে হাসপাতালে নেয়। শনিবার সকালে তাদের ১৬ বছরের মেয়ে শারমিন আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজত নিয়েছে পুলিশ।
নিহত নারী সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বিনোয়াটি গ্রামের শাজাহান সরকারের মেয়ে রহিমা বেগম (৩৮ )। অর্ধ গলা কাটা গুরুতর আহত অবস্থায় তার স্বামী ইমরান হোসেনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট থানার আমতৈল গ্রামের সুরুজ আলীর ছেলে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, এমরান হোসেন ও রহিমা তাদের সন্তান শারমিনকে নিয়ে কোনাবাড়ি নওয়াব আলী মার্কেট এলাকার একতা ভিলার পাঁচ তলায় ভাড়া থাকতেন। স্বামী এমরান হোসেন কোনাবাড়ি এলাকায় মাংস বিক্রির কাজ করতেন এবং স্ত্রী ছিলেন গৃহিণী।
শনিবার সকালে পুলিশ খবর পায় স্বামী-স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। কোনাবাড়ী থানা পুলিশ লাশের সুরতহাল করতে যান। সে সময়ে পুলিশ অর্ধ গলাকাটা অবস্থায় এমরানকে হাত নাড়াচাড়া করতে দেখেন। পরে তাকে দ্রুত উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তাদের মেয়ে শারমিন আক্তারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাতে তার মা রহিমা বেগম ও বাবা ইমরানের সঙ্গে পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। তারই জের ধরে এমরান ধারালো দা দিয়ে প্রথমে স্ত্রী রহিমার গলা কেটে দেন। পরে নিজেও ওই দা নিয়ে নিজের গলা কেটে ফেলেন।
কোনাবাড়ী থানা পুলিশ জানায়, প্রথমে তারা দুজনের মৃত্যুর খবর পান। সেই খবরের ভিত্তিতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করতে গিয়ে স্ত্রীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হন। ঠিক ওই সময় স্বামীর হাত নাড়াচাড়া করতে দেখেন। পরে দ্রুত তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
কোনাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, “মেয়ে শারমিন আক্তার বন্ধুদের নিয়ে টিকটক করতেন। সে (শারমিন) জানিয়েছে তার বাবা প্রথমে তার মাকে হত্যা করে, পরে সে নিজেই নিজের গলা কাটে। এটা শারমিন নিজের চোখেই নাকি দেখেছে। কিন্তু তার কথা আমাদের বিশ্বাস হচ্ছে না। যে কারণে তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, “নিহত রহিমা বেগমের লাশ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে এবং তার স্বামীকে একই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”
রুপসীবাংলা৭১/এআর

