রুপসীবাংলা৭১ আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রাশিয়ার তিনটি মিগ-৩১ যুদ্ধবিমান এবার ইউরোপীয় দেশ এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য দেশটির আকাশে যুদ্ধবিমানগুলো ১২ মিনিট অবস্থান করে। শুক্রবারের এ ঘটনাকে এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নির্লজ্জ অনুপ্রবেশ বলে মন্তব্য করেছে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, এটি রাশিয়ার সাম্প্রতিক সামরিক কার্যক্রমগুলোর সর্বশেষ উদাহরণ, যা ন্যাটোকে নাড়িয়ে দিয়েছে। তবে এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
ইউক্রেন যুদ্ধে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এ ঘটনা ঘটল। মাত্র এক সপ্তাহ আগে, গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে ২০টির বেশি রাশিয়ার ড্রোন পোল্যান্ডের আকাশসীমায় প্রবেশ করে। ন্যাটো কিছু ড্রোন ভূপাতিত করে। পশ্চিমা কর্মকর্তাদের মতে, এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে রাশিয়া ন্যাটোর প্রস্তুতি ও প্রতিশ্রুতি পরীক্ষা করছে। এ ছাড়া তিন দিন আগে রাশিয়া ও বেলারুশ যৌথ সামরিক মহড়া ‘জাপাদ-২০২৫’ শেষ করেছে। সেখানে পারমাণবিক অস্ত্র ছোড়ার মহড়াও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এস্তোনিয়ার দাবি, যে ১২ মিনিট যুদ্ধবিমানগুলো আকাশসীমায় অবস্থান করেছিল, এই সময়ে উচ্চগতির বিমানগুলো সহজেই দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চল অতিক্রম করতে পারত। দেশটির সরকার জানিয়েছে, শুক্রবার তিনটি রাশিয়ান সামরিক যুদ্ধবিমান অনুমতি ছাড়া তাদের আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ এবং টানা ১২ মিনিট অবস্থান করে।
এস্তোনিয়ার রাজধানী তালিন থেকে জানানো হয়, যুদ্ধবিমানগুলো প্রায় ৯ কিলোমিটার ভেতরে চলে এসেছিল। তখন এস্তোনিয়ার একটি ঘাঁটিতে মোতায়েন থাকা ইতালির এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে রুশ বিমানের পথরোধ করে। ন্যাটোর মুখপাত্র বলেন, ‘রাশিয়ার যুদ্ধবিমান এস্তোনিয়ার আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। ন্যাটো তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিয়ে অনুপ্রবেশকারীদের ঠেকিয়েছে। এটি আবারও রাশিয়ার বেপরোয়া আচরণ এবং ন্যাটোর প্রতিক্রিয়া জানানোর সক্ষমতা প্রমাণ করে।’
আকাশসীমা লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে তারা জানায়, যুদ্ধবিমানগুলো কেবল বাল্টিক সাগরের নিরপেক্ষ জলসীমার ওপর দিয়ে উড়েছে এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম পুরোপুরি মেনে চলেছে। তাদের দাবি, বিমানগুলো রাশিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল থেকে ক্যালিনিনগ্রাদে যাচ্ছিল এবং এ সময় কোনো দেশের সীমানা লঙ্ঘন করেনি।
এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারগুস চাকনা বলেন, ‘এ বছর ইতোমধ্যে রাশিয়া চারবার আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। তবে আজকের মতো তিনটি যুদ্ধবিমান একসঙ্গে ঢোকার ঘটনা অভূতপূর্ব ও দুঃসাহসী।’
তিনি জানান, এস্তোনিয়া ন্যাটোর চুক্তির আর্টিকেল ৪ অনুযায়ী রাজনৈতিক পরামর্শ আহ্বান করবে। এ ধারা অনুযায়ী, কোনো সদস্য দেশের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়লে সবাই মিলে আলোচনা করতে হবে।
এস্তোনিয়ার প্রধানমন্ত্রী ক্রিস্টেন মিখালও ঘটনাটিকে স্পষ্ট প্ররোচনা বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর সরকার রাশিয়ার শীর্ষ কূটনীতিককে ডেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে।
রুপসীবাংলা৭১/এআর

