রুপসীবাংলা৭১ প্রতিবেদক : শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় এক যুবককে পিটিয়ে হাত–পা ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি দুই চোখ খুঁচিয়ে তুলে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। চোখ দুটি উঠিয়ে আগুনের পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এ ঘটনার পর অভিযুক্তের বাড়িতে পাল্টা আগুন দিয়েছে স্থানীয় জনতা।
রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনায় পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় মামলা হয়েছে। এতে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ও ১৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়। এর আগে শনিবার দুপুরে উপজেলার মোহর আলী শিকদার কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী জাজিরা পৌরসভার দক্ষিণ বাইকশা এলাকার শফি মোল্লার ছেলে। তিনি বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, মোল্লা মোহর আলী শিকদার কান্দি গ্রামের সুমন শিকদারের নেতৃত্বে তার সহযোগীরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ। এ ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা সুমনের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে তিনটি বসতঘর ও দুটি দোকান পুড়ে গেছে।
জাজিরার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা সূত্র জানায়, অভিযুক্ত সুমন শিকদার এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক, চুরিসহ অন্তত ২০টি মামলা আছে। শনিবার দুপুরে সুমনের বাড়ির পাশে একটি বাগানে রমজান মোল্লাকে পিটিয়ে হাত–পা ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি দুটি চোখ ধারালো অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে অন্ধ করে দেওয়া হয়। এলাকাবাসী খবর পেয়ে সুমন ও তার সহযোগীদের তাড়া করেন। তারা শাজাহান নামের একজনকে আটক করে পুলিশে দেন এবং ভুক্তভোগী রমজানকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তানভির আহমেদ বলেন, ওই ব্যক্তির দুটি চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট করে ফেলা হয়েছে। তিনি আর দেখতে পাবেন না। তার দুটি হাত ও ডান পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।
এদিকে ঢাকায় নেওয়ার আগে রমজান মোল্লা স্বজন ও এলাকাবাসীকে জানান, তাকে সুমন শিকদার, সোহেল চাপরাসী, সোহেল চোকিদার, শাহজাহান সম্রাট, বাচ্চু সুমনসহ কয়েকজন মিলে ধরে নিয়ে যায়। পরে বাঁশবাগানে নিয়ে চোখ উঠিয়ে হাত-পায়ের রগ কেটে দেয়।
তার ভাষ্য, সুমন শিকদার বাড়ির পেছনের বাঁশবাগানে নিয়মিত মাদক ও জুয়ার আসর বসায়। কয়েকবার সে জেলে গেছে। তিনি অটোরিকশাচালক হওয়ায় মাঝেমধ্যে পুলিশ তাকে নিয়ে রাতে টহল দিত। এ কারণে তাকে পুলিশের সোর্স মনে করে সুমন। এ জন্যই তার ওপর হামলা হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার ওসি আহম্মেদ পারভেজ সেলিম বলেন, ঘটনা শোনার পর পুলিশ স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় রমজানকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। স্থানীয় জনতা এ ঘটনায় জড়িত থাকায় একজনের বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। সুমন সিকদারের নামে তার থানাসহ আশপাশের কয়েকটি থানায় মাদক মামলাসহ ২০টি মামলা আছে।
ওসি আহম্মেদ পারভেজ সেলিম আরও জানান, এ ঘটনায় রোববার রমজান মোল্লার স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। এতে ১০ জনের নাম উল্লেখসহ ও ১৫ জনকে অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়। তারা অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেছেন
রুপসীবাংলা৭১/এআর

