মঞ্জুর: পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও চাকরিচ্যুত বিডিআর (বর্তমান বিজিবি) সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহালের দাবি জানিয়েছে বিডিআর কল্যাণ পরিষদ। বৃহস্পতিবার ২৯শে আাগষ্ট সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পরিষদের নেতারা এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিডিআর কল্যাণ পরিষদের উপদেষ্টা ফখরুল ইসলাম। এতে বলা হয়, তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার একটি দেশকে সন্তুষ্ট করতে, সেনাবাহিনীর সামর্থ্য ক্ষুণ্ন ও বাংলাদেশ রাইফেলসকে (বিডিআর) ধ্বংস করে নিজেদের ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করতে সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ‘পিলখানা হত্যাকাণ্ড’ ঘটিয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর ফ্যাসিস্ট সরকার প্রহসনের বিচারের নামে আলামত ধ্বংস ও নিরীহ ৫৪ বিডিআর সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে হত্যা করেছে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনাকে তথাকথিত ‘বিডিআর বিদ্রোহের’ নামে সংজ্ঞায়িত করে ১৮ হাজার ৫২০ জন বিডিআর সদস্যকে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হাজার হাজার বিডিআর সদস্য ও তাঁদের পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিডিআর কল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে ৯টি দাবি জানানো হয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে পিলখানার পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডকে কথিত বিদ্রোহ না বলে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ হিসেবে আখ্যায়িত করতে হবে। ওই ঘটনায় গঠিত সব প্রহসনের বিশেষ আদালতকে নির্বাহী আদেশে বাতিল করতে হবে। চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের সুযোগ–সুবিধাসহ চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। দাবিতে আরও রয়েছে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের উদ্দেশ্য ও কুশীলবদের চিহ্নিত করতে স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। পিলখানায় শাহাদাতবরণকারী ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে শহীদের মর্যাদা দিতে হবে। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ওই দিনকে ‘পিলখানা ট্র্যাজেডি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবিও জানান পরিষদের নেতারা। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, যেসব নিরীহ বিডিআর সদস্যদের নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের তালিকা করে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, হত্যাকাণ্ডে জড়িত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা, বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগকারীদের আগামী ৩০ দিনের মধ্যে জামিন কিংবা মামলা হতে অব্যাহতিসহ চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে বিডিআর কল্যাণ পরিষদের সমন্বয়ক ফরিদ হোসেনসহ অন্যান্য সমন্বয়ক ও চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।