ইকবাল হোসেনঃ শনিবার ১৭ আগষ্ট জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ওয়াসা কর্তৃক পয়,:নিস্কাশন প্রকল্প বাতিলের দাবিতে ধউর ও নলভোগ মৌজার ক্ষতিগ্রস্থ জনগণের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ এই দাবি জানান।
মোঃ আরিফ বিল্লাহ বলেন,আমরা ধউর ও নলভোগ মৌজার ক্ষতিগ্রস্থ জনগণ ইতোপূর্বে ৬ (ছয়) বার অধিগ্রহণে উচ্ছেদ হয়ে বর্তমানে উক্ত এলাকায় বসবাস করছি। ওয়াসা কর্তৃক গৃহীত পয়:নিষ্কাষন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হলে আমরা আবারো ক্ষতিভাস্থ হব এবং আমাদের বসবাসের শেষ সম্বল টুকু হারাবো। অত্র এলাকায় ২টি বিশ্ববিদ্যালয়, পুলিশ লাইন্স, একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল, মাইলস্টোন কলেজ, মেট্রোরেলের ডিপো যেখানে জাপানী কলাকৌশলীরা কাজ করেন, ২টি আধাসিক প্রকল্প সাথে আমাদের ৪০০/৫০০ পরিবারের বসবাস। এমতাবস্থায় স্বৈরচারী সরকারের প্রনীত এই প্রকল্পটি অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য আমরা জনগণ বিনীত আবেদন জানাচ্ছ
তিনি আরো বলেন,অত্র প্রকল্পটি গ্রহণের সময় ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হয়। ফিজিবিলিটি রিপোর্ট অনুযায়ী প্রকল্পটির জন্য স্থান নির্ধারন করা হয় ধউর, আশুতিয়া ও গ্রাম ভাটুলিয়া মৌজায় যেটি ওয়াসা কর্তৃক প্রণীত প্রজেক্ট প্রোফাইলেও উল্লেখ করা আছে। কিন্তু কোন অদৃশ্য কারণে প্রকল্পটি জনঅধ্যুষিত ও অনেক গুলো জনগুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের পাশে স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে যা কোন ভাবে যুক্তিযুক্ত নয়। প্রকল্পটি পূর্ব নির্ধারিত জায়গায় অথবা অন্যকোন বিকল্প জায়গায় স্থানান্তেরের জন্য মাননীয় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, সাবেক স্থানীয় এমপি, বর্তমান ওয়ার্ড কাউন্সিলর ডিও লেটার দিয়ে মতামত জানিয়েছেন। স্থানীয় জন প্রতিনিধিগণ জনগণের সার্বিক কল্যাণ বিবেচনা করে উক্ত প্রকল্পটি বর্তমান নির্ধারিত জায়গা থেকে সরিয়ে অন্য কোথাও করার সুচিন্তিত সিদ্ধান্ত স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলেন। এর পরেও জনমত উপেক্ষা করে প্রকল্পটি জনবহুল জায়গায় করার প্রতিবাদ আমরা সবসময় জানিয়ে আসছি। এ লক্ষ্যে স্থানীয় কাউন্সিলর ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) তে জনগণের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন। জনগণ ঢাকা ওয়াসা ঘেরাও প্রোগ্রাম করেছেন, মানববন্ধন পালন করেছেন। কিন্তু জনস্বার্থ ও জনমত উপেক্ষা করে কতিপয় লোকের সুবিধা চিন্তা করে উক্ত স্থানে প্রকল্পটি বলবৎ রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন,অত্র প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে পরিবেশ ও প্রতিবেশের বিশাল ক্ষতি হবে। দূর্গন্ধের জন্য অবশিষ্ট এলাকার মানুষজনও সেখানে থাকতে পারবে না। নানা রোগব্যধি ছড়িয়ে পড়বে। এমতাবস্তায় প্রকল্পটি পূর্ব নির্ধারিত জায়গায় বা উত্তরা সেক্টর-১৮ এর দক্ষিণ দিকে সরকারী খাস জমিতে স্তানান্তরের আবেদন জানাচ্ছি। উল্লেখিত স্থান ২টিতে প্রকল্পটি স্থানান্তর করলে সরকারের প্রায় ২১০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে, কারন এখানে প্রায় সবগুলোই সরকারী খাস জমি। বর্তমানে সরকারের আর্থিক দুরাবস্থার সময় ২১০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হলে সরকার ও দেশের বিরাট উপকার সাধিত হবে বলে আমরা মনেকরি। এতে অতিমূল্যবান জমি রক্ষা পাবে এবং পরিবেশ দূষণ থেকে রাজধানীর একটি বড় এলাকা বেঁচে যাবে।
তিনি আরো বলেন,উক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়েনের কারণে DAP প্রনীত ১০০ ফিট রাস্তা, মেট্রোরেল এলাইনমেন্ট ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এজন্য ভূমি মন্ত্রণালয় কেন্দ্রীয় ভূমি বরাদ্ধ কমিটির ১৪০ তম সভায় রাস্তা ও মেট্রোরেল এলাইনমেন্ট বাদ দেয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দিয়েছেন। এরপর তিন বা ততোধিক রীট করা হয়েছে ভুক্তভোগী জনগনের পক্ষ থেকে। ভূমি বরাদ্ধ কমিটির ১২৯তম সভায় হাইকোর্ট রীট বিবেচনায় রেখে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নির্দেশনা দেন। ১৪০ তম সভায় সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে দায়েরকৃত আরেকটি রিটের প্রেক্ষিতে ভূমি মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেন ওয়াসা, ডিসি অফিস, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি সমন্বয়ে। কিন্তু সে কমিটির রিপোর্ট প্রদানের পূর্বেই তড়িঘড়ি করে ৮ ধারা নোটিশ প্রদান করা হয়েছে ১০ আগষ্ট ২০২৪, যা সম্পূর্নভাবে সরকারী নিয়মনীতির পরিপন্থি।
উক্ত মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ বক্তব্য রাখেন প্রধান সমন্বয়ক মোহাম্মদ আরিফ বিল্লাহ,সিরাজ উদ্দিন সহিদুল ইসলাম,আব আবু ইউসুফ, শফিকুল ইসলাম,হাজী মুসলিম উদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।