রুপসীবাংলা৭১ প্রতিবেদক : স্বাধীনতা সংগ্রাম, মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে শোষণবিরোধী ছাত্র-জনতার বিপ্লবী অভ্যুত্থান। বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে প্রতিটি সংগ্রামে মিশে আছে সাংবাদিকের কালি ও রক্ত। এর মূল্য চুকাতে হবে। যেসব সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে তুহিনরা জীবন দেয়, এ দেশের মানুষকে সেই সব ব্যাধি থেকে মুক্তি দিতে হবে। এমন রাষ্ট্রব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে। গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যার প্রতিবাদ এবং ও দ্রুত বিচার দাবিতে শনিবার উত্তরা প্রেসক্লাব আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ কথা বলেন ক্লাবের সভাপতি আলাউদ্দিন আল আজাদ ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম। সকাল সাড়ে ১১টায় উত্তরা পূর্ব থানার সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের বিএনএস সেন্টারের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত সাংবাদিকরা বলেন, জুলাই আন্দোলনের পটভূমিতে সাংবাদিকরা ক্ষমতার বিরুদ্ধে জনতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে অনেক ঝুঁকি নিয়ে। এভাবে প্রকাশ্যে খুন হয়ে যাওয়ার জন্য তো এত মানুষ জীবন দেয়নি। সমাজের প্রতিটি স্তরে মহামারির মতো সংক্রমিত হচ্ছে অপরাধকাণ্ড। এর লাগাম টানতে ব্যর্থ সরকার। তুহিন হত্যাকাণ্ডের পর সরকারের দায়িত্বশীলদের নীরবতা ছিল বিস্ময়কর। বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলো মুখে কুলুপ এঁটেছে। যে সমাজে একজন সাংবাদিকের নিরাপত্তা নেই সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাহীনতা আলাদা করে বলার নয়। দ্রুত তুহিন হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইনি অবকাঠামো গড়ে তোলার আহ্বান জানান বক্তারা।
উত্তরা প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম বলেন, এ দেশে আইন করে সাংবাদিকের পেশাগত অধিকার হরণ করা হয়। কিন্তু তার নিরাপত্তা নিশ্চিতে আইন প্রণয়ন হয় না। গণতন্ত্রের চতুর্থ এই স্তম্ভকে অবহেলা করে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পাওয়া অসম্ভব। সাংবাদিক তুহিনসহ প্রতিটি সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের বিচার কাজ দ্রুত নিষ্পত্তি জরুরি। ৫ আগস্টের পর রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের দেখা গেছে, সাংবাদিকের ওপর চড়াও হতে। সরকার নীরব থেকেছে। এই নীরবতা দেশের জন্য অশুভ। আবু সাইদ, মুগ্ধরা যে বাংলাদেশের জন্য জীবন দিয়েছে, সেখানে তুহিনদের এমন মৃত্যু অপ্রত্যাশিত। সরকারকে সেটা বুঝতেই হবে।
মানববন্ধনে বক্তারা সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার দীর্ঘ ইতিহাস তুলে ধরেন। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড থেকে শুরু করে তুহিন হত্যাকাণ্ড পর্যন্ত অসংখ্য ঘটনার কথা তুলে ধরে বলেন, এসব হত্যার কোনোটিরও বিচার হয়নি। অবিলম্বে সব সাংবাদিক হত্যার বিচার নিশ্চিত না হলে তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এ সময় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন- মাহফুজুল আলম খোকন, শিপার মাহমুদ মাসুম বিল্লাহ, মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির, মো. আল আমিন, ফরিদ আহমেদ নয়ন, মাহমুদা আক্তার পুষণ, এস এম মনির হোসেন জীবন, মো. ইমন, আরিফ হোসেন চৌধুরী, রবিউল আলম রাজুসহ উত্তরা প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিকরা।
প্রসঙ্গত, গাজীপুরের চৌরাস্তায় মসজিদ মার্কেটে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ-এর স্টাফ রিপোর্টার আসাদুজ্জামান তুহিনকে বৃহস্পতিবার নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
রুপসীবাংলা৭১/এআর