নিজস্ব প্রতিনিধিঃ “ঠেকাও প্লাস্টিক,ঠেকাও দুষণ” আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। পরিবেশে প্লাস্টিক এর প্রভাবমুক্ত করতেই সরা বিশ্ব সোচ্চার তারই ধারবাহিকাতায় এ্যনভায়রোনমেন্ট প্রটেকশন ফোরামের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
৫ জুন বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে পরিবেষে প্লাস্টিকের প্রভাব এবং এ থেকে মুক্ত হতে বক্তরা বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
আমায়রনমেনট প্রটেকশন ফোরাম (Environment Protection Furum ও তার সদস্যবৃন্দ এই দিনটির সাথে এবং এই বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় “Beat plastic Pullution”এর সাথে একাত্বতা প্রকাশ করে এই স্মারক প্রকাশ করেন।
উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে যে প্রতিদিন ৮ হাজার টন প্লাস্টিক ব্য নিক্ষিপ্ত হচ্ছে সাগরে। যা কৃষিজমি, খাল বিল নদী জলাশ বয়ে সাগরে নামছে। সে প্রার্যিক পরবর্তিতে মাইক্রোপ্লাসিীকে রুপান্তরিত হয়ে সাগরের পানিতে মিশছে।
প্লাস্টিকে আমাদের জীবন চলার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীতে আবদান রাখছে কিন্তু এর বর্তমান উৎপাদন ও ব্যবহার মাত্রা আমাদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশকে কুর্কিতে ফেলছে। পৃথিবীতে যে হারে প্লাস্টিক দূষণ বেড়ে চলছে সে হারে প্লাস্টিক রি-সাইকেল বা ব্যবস্থাপনা হচ্ছে না। বিশ্বে উৎপাদিত প্লাস্টিক বর্জ্যর পরিমান ৪৩০ মিলিয়ন টন, যার মধ্যে তিনভাগের দুইভাগ বর্জ্য সাগরের পানিতে মিশছে। যা আবার খাদ্য শৃঙ্খলের মাধ্যমে মানব শরিরে প্রবেশ করছে। সাগর কখনওই প্লাস্টিককে গ্রহণ করে না, এই প্লাস্টিক দীর্ঘদিন পানিতে থেকে মাইক্রোপ্লাস্টিকে রূপান্তরিত হয়। যার কারণে বর্তমানে মাছের মধ্যে মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক অপচনশীল বা বায়োডিগ্রেডেবল (Biodegradable) ना হওয়ার কারণে মানব শরিরে ও জলজীবের মারাত্মক ক্ষতি করছে।
বাংলাদেশে প্রতি বছর ৮ লাখ মেট্রিকটন বর্জ্য তৈরী হয় তার মধ্যে ৮% বর্জ্য হলো প্লাস্টিকজাত বর্জ্য তার পরিমান ৭৩০০০ টন। এই প্লাস্টিকজাত বর্জ্যের মাত্র ৩০% বর্জ্য রিসাইক্লিং বা পনুব্যাবহারের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। বাকি ৭০% প্লাস্টিক বর্জ্য অব্যবস্থাপনায় রয়েছে। নদী মাতৃক এই দেশে অব্যবস্থাপনায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা প্লাস্টিক বিভিন্ন জলাশয়, কৃষিজমি হয়ে অবশেষে নদীতে গড়ায়। সম্প্রতি কীর্তনখোলা নদীতে ড্রেজিং চলাকালীন নদীর তলদেশে প্লাস্টিও পাওয়া গেছে। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ এবং শীতলক্ষা নদীসহ সারাদেশের নদীতেই পলিথিনজাত প্লাস্টিক পাওয়া যায়। বিজ্ঞানিরা মাছের শরিরে মাইক্রোপ্লাস্টিক এর অস্থিত্ব খুজে পেয়েছেন, যা মানব শরিরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। মাছ এবং কৃষিজ খাদ্যের মাধ্যমে মানবদেহে প্রবেশ করছে এই মাইক্রোপ্লাস্টিক। এ ছাড়াও বাংলাদেশে প্রতিবছর ৩.১৫-৩.৮৪ বিলিয়ন একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক বোতল বা পানিয় বোতল তৈরী করা হয়। যাহার ২২% মাত্র রিসাইকেল করা যায়, বাকি ৭৮% প্লাস্টিক নদী, জলাশয়, কৃষিজমির মাটিতে মিশে যায়।
বাংলাদেশে প্লাস্টিক প্রডাক্ট সংক্রান্ত আইন সমূহের বেশিরভাগই প্লাস্টিক প্রডাক্ট উৎপাদন নিয়ন্ত্রণের লক্ষে প্রনয়ন করা হয়েছে। ২০২১ সনে হাইকোর্ট একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রনের আদেশ দেয়। বাংলাদেশই প্রথম দেশ যারা (২০০২ সনে) প্লাস্টিক শপিংব্যাগ ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের জন্য নিষেধাজ্ঞা জারী করেছিল। সেই আইনটি যথাযথ কার্যকর না হওয়ায় বর্তমান সরকার (অক্টোবর ২০২৪) দোকানপাটে প্লাস্টিকজাত পলিথিন ব্যাগের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়ে আইনটিকে পুন বহাল করেছে। যাহাতে নির্দেশনা দেয়া হয় যে, পরিবেশ ও জলবায়ু মন্ত্রনালয় একব্যর ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পলিথিনজাত সামগ্রী ব্যবহারকারীদের বিরোদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকজাত উৎপাদিত পন্য ক্রোক করতে পারবে বা উক্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিতে পারবে। দুঃখজনক হলো বাংলাদেশে গৃহস্থালী পর্যায়ে প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপাদনকারীদের মধ্যে বর্জ্যের ধরণ অনুযায়ী পৃথক করার কোন চর্চাই করা হয় না এবং সরকারী ভাবেও এই বিষয়ে কোন উদ্যোগ, প্রচারণা বা প্রকাশনা লক্ষ করা যায় না।
বেসরকারী সংস্থাগুলো নানাভাবে প্লাস্টিক পন্য তৈরী মোড়কজাত/ বোতলজাত করনের মাধ্যমে অনিয়ন্ত্রিতভাবে প্লাস্টিকজাত পন্য তৈরী করছে। বর্তমানে শহস্রাধিক ছোটবড় বেসরকারী কোম্পানী প্লাস্টিকজাত পন্য উৎপাদন করছে ও বিদেশে রপ্তানিও করছে। এছাড়াও ছোট ছোট বা ক্ষুদ্র আয়তনের যত্রতত্র লাইসেন্সবিহীন প্লাস্টিক পন্য উৎপাদনকারী রয়েছে।
এ পলিথিন প্রাস্টিকজাত ব্যাগের উৎপাদন নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহকে আইনের আওতায় আনতে হবে।
ও পলিথিন ব্যাগ বা প্লাস্টিকজাত পন্য উৎপাদিত একবার বাহারযোগ্য, পানির বোতল অন্যান্য পান্য লাগামহীন এবং অনিয়ন্ত্রির উৎপাদন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা করুন।