অর্থনৈতিক ডেক্সঃ দেশের পুঁজিবাজারে টানা দরপতন চলছে। দিন যতই যাচ্ছে, দরপতনের পাল্লা ততই ভারী হচ্ছে। অন্যদিকে, শেয়ারের দাম নিম্নমুখী থাকায় বিক্রির চাপ অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। কেউ কেউ আরো দর হারানোর আশঙ্কায় শেয়ার বিক্রি করছেন। কারো কারো শেয়ার আবার মার্জিন ঋণের বাধ্যবাধকতায় ফোর্সড সেলের মুখেও পড়ছে। পতনের ধাক্কায় সিংহভাগ পুঁজি হারিয়ে বিনিয়োগকারীদের নাভিশ্বাস তৈরি হয়েছে। বাড়ছে তাদের আর্তনাদ।
সপ্তাহের পঞ্চম কার্যদিবস বুধবার (২৮ মে) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের বড় পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এ নিয়ে টানা পাঁচ কার্যদিবস পুঁজিবাজারে পতন ঘটল, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। এদিনে ডিএসইতে আগের কার্যদিবসের চেয়ে টাকার পরিমাণে লেনদেন কমলেও সিএসইতে বেড়েছে। একই সঙ্গে উভয় পুঁজিবাজারে লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম কমেছে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজারে নগদ অর্থ বিনিয়োগ করে কেউ পথে বসছেন, বিশেষ করে মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করা বিনিয়োগকারীরা আম-ছালা উভয়ই হারাচ্ছেন। কেউ আবার দাম বাড়ার আশায় আছেন।
এদিকে, আসন্ন পবিত্র ইদুল আজহা উপলক্ষে কিছুটা শেয়ার বিক্রির চাপ বেড়েছে। মুনাফা না করতে পারলেও অনেকেই মূল পুঁজি তুলে নেন ঈদের ব্যয় মেটানোর জন্য। তবে, এ বছর পরিস্থিতি ভিন্ন। মুনাফা তো দূরের কথা, ঈদের আগে শেয়ার বিক্রি করে মূল পুঁজি উত্তোলন করাই প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমন পরিস্থিতি বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগ আরো বাড়িয়েছে।
ডিএসই ও সিএসই সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৬২.৭২ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৬১৫ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১৬.২৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৫.৮১ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৭০৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
ডিএসইতে মোট ৩৯৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৬৩টি কোম্পানির, কমেছে ২৯৫টির এবং অপরিবর্তিত আছে ৪০টির।
এদিন ডিএসইতে মোট ২৬৪ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৭২ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৯০.০৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৭ হাজার ৯৪৩ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ১৩৮.৭৫ পয়েন্ট কমে ১৩ হাজার ২৫ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ৭.৭১ পয়েন্ট কমে ৮৪৫ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ১২৭.৫০ পয়েন্ট কমে ১০ হাজার ৯৭৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে মোট ১৯৪টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৩৮টি কোম্পানির, কমেছে ১৩৮টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮টির।
সিএসইতে ১৮ কোটি ৫২ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১০ কোটি ১১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।