নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নিরাপদ কর্মক্ষেত্র এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের দাবি-মৃত্যুভয়হীন নিরাপদ কর্মক্ষেত্র এবং পেশাগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা’সহ রানা প্লাজা দুর্ঘটনায় দায়ী ব্যাক্তিদের দ্রæত বিচার, হতাহতদের আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ ও আহতদের দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা প্রদান এবং প্রতিটি দুর্ঘটনার নিরপেক্ষ ও প্রভাবমুক্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের নেতৃবৃন্দ। রানা প্লাজা দুর্ঘটনার বার বছর স্মরণে আজ ২৪ এপ্রিল ২০২৫ (বৃহস্পতিবার) সকালে শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম (এসএনএফ) এর উদ্যোগে জুরাইন কবরস্থান ও সাভারে রানা প্লাজা’র সামনে দুর্ঘটনায় নিহত, আহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন কর্মসূচীতে বক্তারা এ দাবি জানান।
শ্রদ্ধাজ্ঞাপনপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তারা বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার বার বছর হয়ে গেলেও এখনো শ্রমিকদের হত্যার বিচার হয়নি। দ্রæত শ্রমিক হত্যার বিচার করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। রানা প্লাজার পর টাম্পাকো, হাসেম ফুডস, বিএম কনটেইনার, রাজধানীর সিদ্দিকবাজার বিস্ফোরণসহ এরকম শিল্প দুর্ঘটনা যাতে না ঘটে তা নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহŸবান জানান তারা। এসময় প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক নির্বিশেষে সকল শ্রমিককে শ্রম আইনের আওতায় আনা, ক্ষতিপূরণের জাতীয় মানদন্ড তৈরি করা, পেশাগত রোগে আক্রান্ত ও দুর্ঘটনায় আহত শ্রমিকের চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং হাসপাতালগুলোতে বিশেষ ইউনিট স্থাপন, নির্মাণ, রাসায়নিক, ইঞ্জিনিয়ারিংসহ ঝুকিপূর্ণ কর্মক্ষেত্রসমূহ পরিদর্শনে দেশব্যাপি জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা বা ঝটিকা পরিদর্শন ব্যবস্থা চালু করা এবং সবার জন্য নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করতে পরিদর্শন ব্যবস্থাকে জোরদার করার দাবি জানান তারা। শ্রম সংস্কার কমিশনের উল্লেখিত Ôসামাজিক সুরক্ষা আইন’Ôসামাজিক নিরাপত্তা তহবিল’ সহ অন্যান্য সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি আহবান জানান বক্তারা।
এর আগে গত ৮ এপ্রিল শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের নেতৃবৃন্দ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় প্রশাসক মহোদয়ের সাথে দেখা করে রানা প্লাজা ভবন ধস ও তাজরীন গার্মেন্ট অগ্নিকান্ডে নিহত শ্রমিকদের স্মরণে জুরাইন কবরস্থানে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের অনুরোধ জানান, যার ধারাবাহিকতায় আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের দু’জন কর্মকর্তা শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের নেতৃবৃন্দের সাথে স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের জায়গা চিহ্নিত করতে জুরাইন কবরস্থান পরিদর্শন করেন।
কর্মসূচিসমূহে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি মেসবাহউদ্দীন আহমেদ, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল, সম্মিলিত গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার, ব্লাস্টের অনারারি নির্বাহী পরিচালক ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সারা হোসেন, বিল্স এর নির্বাহী পরিচালক ও শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মদ, বিল্স পরিচালক নাজমা ইয়াসমীন, কর্মজীবী নারীর পরিচালক সানজিদা সুলতানা, কাজী গুলশান আরা দীপা, শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরামের ভারপ্রাপ্ত সদস্য সচিব ও সেইফটি এন্ড রাইটস সোসাইটি এর নির্বাহী পরিচালক সেকেন্দার আলী মিনা, ব্লাস্টের পরিচালক মো: বরকত আলী, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হোসাইন, টিইউসি শ্রমিক নেতা ইদ্রিস আলী, মো: মিন্টু, বাংলাদেশ লেবার ফাউন্ডেশনের মো: রবিউল আলম, মো: জাহিদ হোসেন, সফিউর রহমান এবং বিলসের চৌধুরী বোরহান উদ্দিন প্রমূখ। এছাড়া শ্রমিক নিরাপত্তা ফোরাম, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ-স্কপ এবং গার্মেন্টস শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ অর্ন্তভূক্ত জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন ফেডারেশন নেতৃবৃন্দ এবং রানা প্লাজায় আহত শ্রমিকগণ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন।