মঞ্জুর: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসীদের পূর্ণবাসনের দাবি জানিয়েছে ‘ভুক্তভোগী সৌদিপ্রবাসীরা’। বৃহস্পতিবার ১৭ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এই দাবি জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন সৌদি প্রবাসী আব্দুল নূর। সংবাদ সম্মেলন মূল বক্তব্য তুলে ধরেন সৌদি প্রবাসী মো. শাহিদ। তিনি বলেন, নির্বিচারে সাধারণ ছাত্র-জনতাকে গুলি করে মারা হয়েছিল, তখন আমরা প্রবাসীরা চুপ থাকতে পারিনি। বিবেকের তাড়নায় আমরা জীবন বাজি রেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে মানববন্ধন ও মিছেলে অংশগ্রহণ করি। সে দেশের আইন লঙ্ঘন করার কারণে সৌদি আরবের বিভিন্ন স্থান থেকে সৌদি পুলিশ আমাদেরকে গ্রেপ্তার করে জেলে প্রেরণ করে। অবশেষে দীর্ঘ ৪১ দিন কারাবরণ শেষে ২২৮ জন শূন্য হাতে দেশে ফেরত পাঠায়। তারা এখন নিঃস্ব। তিনি আরো বলেন, সৌদি আরব, দুবাই, ওমান, কাতার, কুয়েত, বাহারাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে গ্রেপ্তার হওয়া প্রবাসীরা মুক্তির পর দেশে এসেছিল, তাদের জন্য নতুন সরকার ডাটা তৈরি করে পূর্ণবাসন ও আর্থিক অনুদানের ঘোষণা দেয়। আব্দুল নুরের অভিযোগ, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দুই মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত তাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করে নাই। সৌদি আরব দুবাই, ওমান, কাতার, কুয়েত, বাহারাইনসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যারা ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের পূর্ণবাসনসহ ১০ দাবি তুলে ধরা হয় সংবাদ সম্মেলনে। ১. সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যর বিভিন্ন দেশ থেকে যে সকল প্রবাসীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাত্মতা পোষণ করে দেশে ফিরেছেন তাদেরকে অবিলম্বে পূর্ণবাসন করতে হবে। ২. সৌদি ফেরত প্রবাসীদেরকে সরকারি খরচে ভিবিন্ন দেশে পুনরায় প্রেরণ করার ব্যবস্থা নিতে হবে। ৩. দেশে ফেরত আসায় হঠাৎ বেকার হয়ে পড়া প্রবাসীদেরকে এককালীন নগদ সহায়তা প্রদান করতে হবে। ৪. ক্ষতিগ্রস্ত প্রবাসীদের জন্য বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি না করা পর্যন্ত দেশে কর্মসংস্থানের দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। ৫. সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশের দূতাবাসগুলোতে প্রবাসীবান্ধব কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগ দিতে হবে। ৬. প্রবাসে যাওয়ার সময় প্রবাসীদেরকে বিভিন্ন ব্যাংকগুলো সহজ শর্তে তিন কার্যদিবসের মধ্যে জামানত ছাড়া ঋণ দিতে হবে। ৭. বিদেশে যাওয়ার জন্য ভোগান্তি ছাড়া দ্রুত পাসপোর্ট সরবরাহ করতে হবে। ৮. যে মেডিকেলগুলোতে কোনো কারণ ছাড়া মেডিকেল আনফিট দেখানো হয় এই ধরনের মেডিকেলগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। ৯. প্রবাসে যাওয়ার পর প্রবাসী কাঙ্খিত চাকরি পেলো কিনা এবং ঠিকমতো বেতন পাচ্ছে কিনা দূতাবাস ও কনস্যুলেটকে নিয়মিত খোঁজখবর নিতে হবে। ১০. কোনো প্রবাসী দেশের বাহিরে আহত হলে তার যথাযথ চিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং মারা গেলে সরকারি খরচে লাশ দেশে আনতে হবে।