শাহজালাল (রাসেল)ঃ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, সোমবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব সামনে, ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি – ১,২,৩ এবং ৪ এর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর অংশগ্রহণে সারা দেশে এক যোগে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড কর্তৃক নিম্নমানের বৈদ্যুতিক মালামাল ক্রয ও সরবরাহ, প্রযোজনীয মালামাল ও জনবলের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে গ্রাহক পর্যায়ে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে হযরানি করার প্রতিবাদে এবং গ্রাহকপ্রান্তে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য দ্বৈতনীতি পরিহারপূর্বক BREB-PBS একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকুরী বিধি প্রনয়ণ ও সকল চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মচারীদের চাকুরী নিয়মিতকরণের দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শতভাগ গ্রাহক সেবা চালু রাখার দাবি জানানো হয়।
চলতি বছরের শুরু থেকে আরইবি-পবিস একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকুরিবিধি বাস্তবায়ন এবং সকল চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের ০২ দফা দাবি আদায়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলমান। আন্দোলনের যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে সরকার তথা বিদ্যুৎ বিভাগ কর্তৃক পল্লী বিদ্যুৎ সিস্টেমের সংস্কার সময়ের দাবি হিসেবে উল্লেখপূর্বক সংস্কারসহ অন্যান্য সমস্যার যৌক্তিক সমাধানের জন্য ০৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়। বৈষম্যমুক্ত নতুন দেশ গড়ার প্রত্যয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও দেশের প্রতিটি সেক্টরকে সংস্কারের সুস্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন কিন্তু আরইবি কর্তৃক উক্ত কমিটির সভায় অনুপস্থিত থাকা, পরবর্তীতে ভিন্ন তারিখে সভায় উপস্থিত থাকলেও সভার সিদ্ধান্ত অমান্য করে আরইবির পক্ষ থেকে সরকারের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে কমিটির সভায় কোন প্রকার সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন না করা, অতঃপর সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপনের জন্য পুনরায় সভা আয়োজন করা হলেও আরইবির পক্ষ থেকে সংস্কার না করে বিদ্যমান কাঠামো বহাল রাখার প্রস্তাব প্রদান করা হয়।
সর্বশেষ গত ২৬-০৯-২০২৪ তারিখে উক্ত কমিটির ৪র্থ সভা অনুষ্ঠিত হলেও আরইবি’র পক্ষ থেকে রিফর্ম সংক্রান্ত কোন প্রস্তাব দাখিল করা হয়নি। এছাড়া আর্থিক জটিলতা না থাকা সত্ত্বেও চুক্তিভিত্তিক/অনিয়মিত কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের বিষয়েও বিদ্যমান পরিস্থিতি বিবেচনায় তড়িৎ সমাধানে অনীহা পরিলক্ষিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়; আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থাসহ দেশের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে মিথ্যা, বানোয়াট ও বিভ্রান্তিকর তথ্য সরবরাহ করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির যৌক্তিক আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।
অর্থাৎ সরকারের পক্ষ থেকে সমাধানের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলেও নানান বাহানায় কালক্ষেপণ এবং সংস্কারে অস্বীকৃতি জানিয়ে চরম বিপত্তি সৃষ্টি করে বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। তাছাড়া বিগত কয়েক মাস যাবত প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় ও সরবরাহের ব্যবস্থা না করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। যে কারণে মাঠ পর্যায়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো মালামালের অভাবে (মিটার, ট্রান্সফরমার, তার ইত্যাদি) নতুন সংযোগ সহ সঠিকভাবে গ্রাহক সেবা প্রদান করতে পারছে না। আরইবির কর্তৃক নিম্নমানের মালামাল সরবরাহ এবং প্রয়োজনীয় জনবল ও যানবাহনের ব্যবস্থা না করার কারণে গ্রাহক সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। ভুক্তভোগী হচ্ছেন গ্রাহক এবং সমিতির কর্মকর্তা কর্মচারী। যার ফলে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৪৫ হাজার কর্মকর্তা- কর্মচারীর মনে আরইবি’র প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও চরম অসন্তোষ বিরাজমান।
এছাড়া পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আগামী ০১ অক্টোবর, ২০২৪ তারিখ থেকে বাপবিবোর্ডের সাথে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সকল ধরনের যোগাযোগ, তথ্য সরবরাহ (০২ দফা বাস্তবায়ন সংক্রান্ত বিষয়াদি ব্যতীত) থেকে বিরত থাকার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বৈষম্য, শোষণ, নির্যাতন ও নিপীড়ন থেকে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মুক্তি এবং দেশের ১৪ কোটি মানুষের নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত বিদ্যুৎ সেবা প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিতের লক্ষ্যে বর্ণিত কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য অনুরোধ জানানো হয়।