নিজস্ব প্রতিনিধিঃ জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেছেন, চাঁদাবাজ চক্রের হাত থেক পরিবহন সেক্টর বাঁচাতে হবে। তিনি বলেন, পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের বাঁচাতে এখনই উদ্যোগ নিতে হবে। পরিবহন মালিকদের দাবি… সড়কের চাঁদার জন্য গণপরিবহনের ভাড়া বেড়ে যায়। গণপরিবহণের ড্রাইভার ও হেলপার নিয়োগ দেয় শ্রমিক ইউনিয়ন, মালিকদের কর্তত্ব থাকেনা। কেউ প্রতিবাদ করলে তার জীবন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকদের চাঁদাবাজ চক্রের হাত থেকে মুক্তি দিতে হবে। পরিবহন সেক্টরের সংস্কারও জরুরি হয়ে পড়েছে। আজ দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় জাতীয় মটর শ্রমিক পার্টির সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।
এসময় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, শেখ হাসিনা দেশ ছেড়েছে এটা আল্লাহর রহমত। এদেশের ছাত্র-জনতা গুলির সামনে বুক পেতে দিয়ে স্বৈরাচার হাসিনার পতন নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় আন্দোলনের নজির নেই। আন্দোলনে এত নির্যাতন আর হত্যাযজ্ঞের ইতিহাসও নেই আমাদের দেশে। আমাদের বীর সন্তানরা জীবন দিয়ে স্বৈরাচারের পতন নিশ্চিত করেছে, যা আমরা পারিনি। শেখ হাসিনার পতন না হলে একদলীয় সরকার ব্যবস্থা কায়েম হতো। দেশে মাত্র একটি দলই থাকতো।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরো বলেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন জাতীয় পার্টি বর্জন করেছিলো। আমাদের নেতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে চিকিৎসার নামে সিএমএইচে আটক করা হয়। তাঁর নির্দেশে আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেই । আমিসহ জাতীয় পার্টির ২৭০ জন নির্বাচন বর্জন করি। ২০১৪ সালের সংসদে আমি যাইনি। মঞ্জুর হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন চাপে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে সংসদে যেতে বাধ্য করে আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিএনপি না গেলেও উপজেলা পরিষদ ও পৌরসভাসহ বেশ কিছু নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো বিএনপি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপিসহ প্রায় সকল দলই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো। আমরাও সেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলাম। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আমরা যেতে চাইনি। আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছে। আমাদের দল মাঝে বিভাজন সৃষ্টি কারেছিলো আওয়ামী লীগ। একটি গোষ্ঠীকে আমাদের দল ও প্রতিকের নামে কাউন্সিল করতে অন্যায় ভাবে অনুমতি দিয়েছিলো তারা। হাস্যকর একটি মামলায় আমাকে রাজনীতি থেকে চার মাসের বেশি সময় দূরে রাখা হয়েছিলো। আমরা নির্বাচন বর্জন করতে সংবাদ সম্মেলন করতে চেয়েছিলোম, সব কিছুই রেডি ছিলো। কিন্তু বিভিন্ন আইন শৃংখলা রক্ষাবাহিনীর সদস্য ও বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা আমাদের অফিস কর্ডন করে রাখে। আমাদের নির্বাচন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিতে দেয়নি, এটা সবাই জানে। এখন কথা হচ্ছে, ২০১৪ সালের নির্বাচনেও আমাদের বাধ্য করে নির্বাচনে নেয়া হয়েছে। কিন্তু বিএনপি ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচন না করলেও তো স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলো। আবার ২০১৮ সালের নির্বাচনেও তো বিএনপি অংশ নিয়েছিলো। বিএনপির এমপিরা তো চার বছর সংসদে সক্রিয় অংশ নিয়েছিলো। বাধ্য হয়ে জাতীয় পার্টির ২০২৪ সালের নির্বাচনে যাওয়া যদি আওয়ামী লীগের নির্বাচনকে বৈধতা দেয়া হয় তাহলে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচন ও ২০১৪ সালের স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিএনপি কি আওয়ামী লীগের নির্বাচনকে বৈধতা দেয়নি?
জাতীয় মটর শ্রমিক পার্টির সাথে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টি মহাসচিব মোঃ মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব মীর আব্দুস সবুর আসুদ, এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান আতিক, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অতিরিক্ত মহাসচিব মনিরুল ইসলাম মিলন, প্রেসিডিয়াম সদস্য জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মনির আহমেদ, ইঞ্জিনিয়ার মইনুর রাব্বী চৌধুরী রুম্মন, ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদ সেলিম, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, যুগ্ম মহাসচিব মোঃ সামছুল হক, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য এমএ রাজ্জাক খান, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন, যুগ্ম সম্পাদক এ্যাড. আবু তৈয়ব, মাহমুদ আলম, সমরেশ মন্ডল মানিক, হাফেজ ক্বারী ইসারুহুল্লাহ আসিফ, কেন্দ্রীয় নেতা মোঃ জাকির হোসেন, কাজী মামুন, একেএম নুরুজ্জামান জামান।
জাতীয় মটর শ্রমিক পার্টির আহ্বায়ক মেহেদী হাসান শিপন এর সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আব্দুর রহিম এর সঞ্চালনায় জাতীয় মটর শ্রমিক পার্টির নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মোঃ গোলাম মোস্তফা গোলাম, মোস্তফা ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, আব্দুল বারেক শেখ, মোঃ ইউসুফ, মোঃ শেখ শরীফ, মোঃ সুমন হাওলাদার, মোঃ লিটন সরকার, মোঃ লুৎফর হোসেন, সুজন মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, মোঃ ওসমান গণি, মোঃ চান মিয়া, মোঃ খলিলুর রহমান, ডা. মোজাহিদ, মিজানুর রহমান ও সাখাওয়াত হোসেন দুলাল, ইঞ্জিনিয়ার বিএম এরশাদ, মোঃ রফিক খান, এনায়েত হোসেন খোকন, মোঃ হাফেজ মাওলানা ওয়াইসকরোনী, মোঃ মাহবুব হোসেন, আলী আহমেদ সুজন।