নিজস্ব প্রতিনিধিঃ গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য আজ মঙ্গলবার ১২/০৬/২০২৪ সকাল দশটায় অস্থায়ী কার্যালয় সেগুনবাগিচা ঢাকায় বৈঠক করে। সভাপতিত্ব করেন গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এমএল)’র সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড হারুন চৌধুরী। উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ডাঃ সামছুল আলম, সোস্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এসডিপি)’র আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ ও প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল (পিডিপি)’র মহাসচিব হারুন আল রশিদ খান।
সভায় প্রস্তাবিত ২০২৪—২৫ বাজেট গনবিরোধী অন্তঃসারশূন্য বলে প্রত্যাখ্যান করে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাজেটে সাধারণ জনগণের শিক্ষা স্বাস্থ্য কর্মসংস্থানের মত মৌলিক বিষয়ে সুস্পষ্ট কিছু নাই। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে তাল মিলিয়ে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার কোন দিক নির্দেশনা নাই। অবাধ লুটপাটে দেশের ভঙ্গুর আর্থিক খাত পুনরুজ্জীবিত করা পাচার কৃত অর্থ ফিরিয়ে আনা অর্থ পাচারকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করার সুনির্দিষ্ট কিছু নাই। খেলাপী ঋণ সংস্কৃতি ব্যাংকিং কার্যক্রমকে শুধু দেউলিয়া করে নাই রাষ্ট্র কে দেউলিয়ার দারপ্রান্তে উপনীত করেছে, অব্যবস্থাপনার কারণে ঋণ খেলাপীর লাগাম টেনে ধরতে ক্ষমতাসীনরা শুধু ব্যর্থ হয় নাই রাষ্ট্রের পুঁজি কে সংকটে ফেলে দিয়েছে। দেশ বাঁচাতে ইচ্ছাকৃত শীর্ষ ঋণ খেলাপিদের তালিকা প্রকাশ করে তাদের সমূদয় সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার গণদাবি কৌশলে পাশ কাটানো হয়েছে। জ্বালানি ও বিদুৎ উৎপাদন সঞ্চালন বিপণন ব্যবস্থায় ভুলনীতি ও দুর্নীতি বন্ধে বিশেষজ্ঞদের মতামত না নিয়ে বারবার মূল্য বৃদ্ধি করে সব দায় জনগণের উপর চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মাফিয়াদের কাছে জনগণকে জিম্মি করে ফেলা হয়েছে। দুষ্টের লালন শিষ্টের দমনের নয়া কৌশল সাধারণ করদাতাদের আয়ের ৩০% আয়কর দিতে বাধ্য থাকলেও কালো টাকার জন্য ১৫% কর দিয়ে টাকা সাদা করার অনৈতিক সুযোগ রাখা হয়েছে। যা দুর্নীতি ও দুর্নীতিবাজ কে উৎসাহিত করবে।
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, রাষ্ট্রের ক্ষমতা কে আঁকড়ে রাখা কতৃত্ববাদী দুঃশাসকেরা নিত্যপণ্যের টানা মূল্যবৃদ্ধিতে সাধারণ জনগণের নাভিশ্বাস উঠা জীবনের কথা না ভেবে, প্রতিটি ক্ষেত্রে পরোক্ষ কর বসিয়ে জীবন কে আরো দুর্বিষহ আরো কঠিন করে দিচ্ছে। মুদ্রাস্ফীতির কারণে যেখানে বাজেটে কৃচ্ছসাধন করে অর্থনীতি সুরক্ষা কে গুরুত্ব দেওয়া দরকার ছিল। সেখানে বাজেটের আকার প্রায় আট লক্ষ কোটি টাকা করা হয়েছে। উন্নয়নের নামে একের পর এক মেগা প্রকল্প রাষ্ট্রের ঋণের বোঝা সাধারণ জনগণের মাথায় চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মাথাপিছু আয়ের শুভঙ্করের ফাঁকির একই গল্প জনগণকে বারবার শোনানো হচ্ছে। দেশের মোট জনসংখ্যার ৩০% দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাস করে। কৃষক, শ্রমিক বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার অন্যতম যোগানদাতা পোশাক শ্রমিক, প্রবাসী শ্রমিক এদের অক্লান্ত পরিশ্রমে দেশ এগিয়ে চলে। বাজেটে এদের মতামত নেওয়া বা দেওয়ার কোন সুযোগ নাই। বর্তমান বাজার পরিস্থিতি এদের সবার যাপিত জীবনকে কঠিন করে ফেলেছে। প্রস্তাবিত ২০২৪—২৫ বাজেট জনজীবন কে চুরান্ত ভাবে বিপর্যস্ত করে ছাড়বে। এই কতৃত্ববাদী একদলীয় স্বৈরাচারী দুঃশাসক ও তাদের পৃষ্ঠপোষক দুর্বৃত্তদের সুরক্ষার বাজেট, সাধারণ জনগণের পকেট কাটার বাজেট গরীব মারার বাজেট। এই বাজেট জনগণ মানে না,গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য মানে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গনতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার কথা বলে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা মহা জোটের সরকার আদর্শচ্যুত বাম পন্থীদের সাথে নিয়ে স্বৈরাচারী কায়দায় রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। এর মধ্যে দেশেই চরমভাবে দুর্নীতি মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে। বিশেষ করে পুলিশ বাহিনী ও সেনাবাহিনীর মধ্য দুর্নীতি বাজরা গাপটি মেরে বসে আছে। সাবেক পুলিশের প্রধান আই জি পি বেনজির আহমেদ ও সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান আজিজ আহাম্মেদ দেশে—বিদেশে দুর্নীতিগ্রস্ত হিসাবে পরিচিত লাভ করেছেন এবং বাংলাদেশের জনগণের গনতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন কে স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়ে চরমভাবে প্রতিরোধ করেছে নাগরিকদের সাংবিধানিক অধিকার। জনতার পক্ষ দাবি উঠেছে বেনজির আহমেদ ও সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান আজিজ আহাম্মেদ কে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। এই বেনজির আহমেদ ও সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান আজিজ আহাম্মেদের বিচার করতে তালবাহানা করলে স্বৈরচার শেখ হাসিনার সরকার কে জনতার আদালতে বিচার করে ও ক্ষমতাচ্যুত করে গনতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে।