নিজস্ব প্রতিনিধিঃ খাগড়াছড়ির রামগড়ে কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস, ভিডিপি’র প্লাটুন কমান্ডার সালেহ আহম্মেদ ও নুরুল হককে প্রতীকী ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।
কল্পনা চাকমা অপহরণের ২৮ বছর উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুন ২০২৪) সকাল সাড়ে ১০টায় পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম (ডিওয়াইএফ) ও পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে উক্ত চিহ্নিত অপহরণকারীদের এই প্রতীকী ফাঁসি দেওয়া হয়।
“অপহরণের ২৮ বছর : কল্পনা চাকমার সন্ধান চাই, অপরাধীদের সাজা দাও, দায়মুক্তির রায় মানি না, মানব না” শ্লোগানে তিন সংগঠনের নেতা-কর্মী ও জনতা রামগড় উপজেলার খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কের দাতারাম পাড়া মুখ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলটি সড়ক প্রদক্ষিণ করে যৌথ খামার এলাকায় এসে তারা প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হন। এতে এলাকার হাজারো জনতা অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম নারী সংঘের রামগড় উপজেলা শাখার সভাপতি গুলমনি চাকমার সভাপতিত্বে ও ডিওয়াইএফ রামগড় উপজেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক নয়ন চাকমার সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন ডিওয়াইএফ রামগড় উপজেলা শাখার সভাপতি লিটন চাকমা ও পিসিপি রামগড় উপজেলা শাখা সহ-সভাপতি রাজু ত্রিপুরা।
বক্তারা বলেন, ১৯৯৬ সালের ১২ জুন রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার কজইছড়ি আর্মি ক্যাম্পের কমাণ্ডার লে. ফেরদৌস, ভিডিপি প্লাটুন কমাণ্ডার সালেহ আহম্মেদ ও নুরুল হকের নেতৃত্বে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কল্পনা চাকমাকে অপহরণ করা হয়। দীর্ঘ ২৮ বছরেও সরকার চিহ্নিত অপহরণকারীদের গ্রেফতার ও বিচার করেনি। উপরন্তু গত ২৩ এপ্রিল রাঙামাটি জেলা আদালত কল্পনা চাকমার অপহরণ ঘটনায় তার ভাই কালিন্দী কুমার চাকমার দায়েরকৃত মামলা খারিজ করে দিয়ে অপহরণকারীদের দায়মুক্তি দিয়েছে।
তারা বলেন, আদালত পক্ষপাতদুষ্টভাবে চিহ্নিত অপহরণকারীদের দায়মুক্তি দিয়ে যে রায় দিয়েছে তা আমরা তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণ মানি না, মানব না। আমরা কল্পনা চাকমার সন্ধান চাই। সরকারকে চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস গংদের অবশ্যই গ্রেফতার ও সাজা নিশ্চিত করতে হবে।
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ক্ষমতাসীন আ্ওয়ামী লীগ সরকার দেশের আইন-আদালত ও বিচার ব্যবস্থাকে কুক্ষিগত করে দাগী অপরাধীদের রক্ষা করে চলেছে। কল্পনা চাকমা অপহরণ মামলা খারিজ করে দিয়ে চিহ্নিত অপহারণকারীদের দায়মুক্তি দেয়ার মাধ্যমে তা প্রমাণিত হয়েছে।
তারা বলেন, কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরেেদৗস গংদের বিচার ও সাজা না হওয়া পর্যন্ত এ নিয়ে আন্দোলন চলমান থাকবে।
শেষে সমাবেশের সভাপতি গুলমনি চাকমা দেশের আদালত কর্তৃক যেহেতু কল্পনা অপহরণকারীদের দায়মুক্তি দেয়া হয়েছে সেহেতু জনতার আদালতের রায়ে কল্পনা চাকমার চিহ্নিত অপহরণকারী লে. ফেরদৌস ও ভিডিপি প্লাটুন কমান্ডার সালেহ আহমেদ ও নুরুল হককে প্রতীকী ফাঁসি দেয়ার ঘোষণা দেন। এরপর জনতা অপহরণকারীদের কুশপুত্তলিকা রশিতে ঝুলিয়ে প্রতীকী ফাঁসি কার্যকর করেন।