নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নগরে তাপমাত্রা হ্রাসে বাইসাইকেলে যাতায়াত হতে পারে সমাধান।বিগত কয়েক দশকে নগর এলাকার তাপমাত্রা অসহনীয়ভাবে বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণ যান্ত্রিক যানবাহনের উপর নির্ভরশীলতা এবং কার্বন নির্গমন বৃদ্ধি। গবেষণায় দেখা গেছে, শুধুমাত্র একদিন ব্যক্তিগত গাড়ির পরিবর্তে বাইসাইকেল ব্যবহার করা হলে কার্বন নির্গমন ৬৭% পর্যন্ত কমানো সম্ভব। নগরে বাইসাইকেলে যাতায়াতের পরিমাণ বৃদ্ধির মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য রক্ষার পাশাপাশি দূষণ, যানজট, দুর্ঘটনা, শহরে তাপীয় দ্বীপের প্রভাব কমিয়ে আনাসহ বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলা করা সম্ভব হবে।
আজ ০৩ জুন ২০২৪, সোমবার, সকাল ০৭.৩০টায় রায়ের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুল, বেঙ্গলী মিডিয়াম হাই স্কুল, কনফিডেন্স মেমোরিয়াল হাই স্কুল, ধানমন্ডি ট্যুরিজম সাইক্লিস্ট, ছায়াতল বাংলাদেশ, ফিমেল সাইকেলার্স অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ, সূর্য শিশির রানার্স কমিউনিটি, লাল সবুজ সোসাইটি, হেলদি লিভিং, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্ট এর সম্মিলিত উদ্যোগে আবাহনী খেলার মাঠ থেকে ধানমন্ডি ৩/এ সড়ক হয়ে শংকর বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস ২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে Cycling for Cooler Cities শীর্ষক অবস্থান কর্মসূচি ও সাইকেল র্যালী থেকে বক্তারা ঢাকার যাতায়াত ব্যবস্থায় সাইকেলকে প্রাধান্য দিয়ে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবি জানান।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টে’র পরিচালক গাউস পিয়ারী’র সভাপতিত্বে এবং সংস্থার সহকারি প্রকল্প কর্মকর্তা মোঃ মিঠুন এর সঞ্চালনায় আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের ৩৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন। আয়োজনে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন দি ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ এর কমিউনিকেশন অফিসার মাহামুদুল হাসান। আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা এম এ মান্নান মনির; ধানমন্ডি কচিকন্ঠ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক এইচ এম নুরুল ইসলাম; বেঙ্গলী মিডিয়াম হাই স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো: জাকির হোসেন; কনফিডেন্স মেমোরিয়াল হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো: দেলোয়ার;
বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি মো: আমিনুল ইসলাম টুব্বুস,লাইফ সার্ভ বাংলাদেশের আজাদ হোসেন; হেলদি লিভিং-এর সদস্য মৌসুমি আক্তার বাঁধন; গ্লোবাল ফার্মা’র ডিরেক্টর এবং সিইও একেএম আহসান উল্লাহ;
ফিমেল সাইকেলার্স অব বাংলাদেশ-এর সিফাত হারুন,সহ আরো অনেকে। আয়োজনে প্রায় শতাধিক সাইক্লিস্ট অংশগ্রহণ করেন।
শেখ মোহাম্মদ হোসেন খোকন বলেন, জাতিসংঘের অন্তর্ভুক্ত মোট ১৯৩ টি দেশ কর্তৃক ১২ এপ্রিল ২০১৮ সাধারণ সভায় ৩ জুন বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এবছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হল Promoting Health, Equity, and Sustainability through Cycling। কার্বন নিঃসরণ বিশ্বব্যাপী এক মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাইকেল এমন একটি বাহন যার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানীর প্রয়োজন হয় না। সাধারণত একটি যাত্রীবাহী যান্ত্রিক যান বছরে প্রায় ৫ মেট্রিক টন কার্বন নির্গমন করে। নিত্য প্রয়োজনে বাইসাইকেল ব্যবহারের মাধ্যমে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমিয়ে আনা সম্ভব।
বক্তারা বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, অতিরিক্ত যানবাহনের ব্যবহার নগর এলাকায় তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। স্বল্প দূরত্বেও যান্ত্রিক যান ব্যবহার করায় প্রচুর পরিমাণে কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন-ডাই-অক্সাইড, এবং ওজোন নির্গত হচ্ছে। বর্তমানে ঢাকা মেট্রোতে নিবন্ধিত ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা ৩,৪২,৭৪৪টি। এ সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পেলে তাপমাত্রা আরো অসহনীয় হয়ে উঠবে। বিগত ১০ বছরে ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা আরো বৃদ্ধি পেলে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা, ডেঙ্গুসহ বিভিন্ন রোগ এবং শহরে তাপীয় দ্বীপের প্রভাব বেড়ে যাবে।
বক্তারা আরো বলেন, ঢাকা শহরে তরুণদের মধ্যে বাইসাইকেলের জনপ্রিয়তা রয়েছে। ঢাকা বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (২০১৬-২০৩৫) অনুযায়ী, ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রায় ২ লক্ষ মানুষ সাইকেলে যাতায়াত করে। কিন্তু সাইকেলবান্ধব অবকাঠামো না থাকায় তাদের ঝুঁকি নিয়ে সাইকেল চালাতে হচ্ছে। কিছু সড়কে শুধুমাত্র রং দিয়ে সাইকেল লেন চিহ্নিত করে দেয়াই যথেষ্ট নয়। এজন্য স্বল্প ও দূরবর্তী যাতায়াতের জন্য সাইকেলের রাস্তা, প্রয়োজনীয় অবকাঠামোসহ একটি সমন্বিত সাইকেল নেটওয়ার্ক তৈরির পাশাপাশি অন্যান্য সুবিধাদি যেমন, নিরাপদ সাইকেল পার্কিং, মেরামতের ব্যবস্থা, ছাউনি, বসার ব্যবস্থা, পানি ও গণশৌচাগারের ব্যবস্থা থাকা আবশ্যক।
র্যালি থেকে সাইক্লিস্টদের জন্য নিরাপদ সড়ক পারাপারের ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ; সাইক্লিস্টদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে যান্ত্রিক যানের গতিসীমা এবং সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ; সাইকেল বান্ধব অবকাঠামো ও সাইকেলের রুট নেটওয়ার্ক তৈরি; সড়ক বিভাজিকার মধ্যে শুধুমাত্র পথচারী ও সাইক্লিস্টদের জন্য ফাঁকা জায়গা থাকা; শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সাইক্লিং এর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা; সাইকেলের উপর কর হ্রাস করা; সাইকেল পার্কিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট ও নিরাপদ স্থান চিহ্নিত করা; সাইকেল নেটওয়ার্ক তৈরি ও রক্ষণাবেক্ষণে প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করা; সাইকেল রুট, বাঁক, সড়ক পারাপার, পার্কিং ইত্যাদির জন্য প্রয়োজনীয় সাইন প্রদান; বিশদ অঞ্চল