মঞ্জুর: সোমবার (২৭ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে সেলিম প্রধান বলেন, আমার বাড়িতে যে হামলা হয়েছে, তাতে আমার পরিবার আতঙ্কিত। সন্ত্রাসী বাহিনী আমার বাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়ারও পরিকল্পনা করেছে। হামলার তিনদিন পার হওয়ার পরও কোনও মামলা হয়নি। আমরা মামলার জন্য কয়েকবার থানায় কথা বলেছি। আমার স্ত্রী রাশিয়ান অ্যাম্বাসির সঙ্গে আলাপ করেছে। অ্যাম্বাসি থেকে থানায় মামলা করতে বলেছে। থানায় মামলা নেওয়ার জন্য প্রশাসনকে অনেক রিকুয়েস্ট করা হয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, আজকে তিনদিন পার হয়ে গেল, তবে কোনও মামলা নেওয়া হয়নি ও কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তিনি বলেন, এই ঘটনার পর থেকে আমার স্ত্রী খুবই আতঙ্কিত। আমার বাচ্চাদের অবস্থাও ভালো নেই। এই সন্ত্রাসী বাহিনী প্রথমে সকাল ৭টায় হামলা শুরু করে। পরে আবার দুপুর ৩টায় হামলা চালায়। দিনে-দুপুরে দফায় দফায় এমন হামলা এ দেশে কখনোই কাম্য নয়। সরকারের প্রতি আহ্বান থাকবে, এই ঘটনার এমন এক দৃষ্টান্ত তৈরি করুক, যাতে বাংলাদেশের কোথাও এমন ঘটনা যেন না ঘটে। রূপগঞ্জের সংসদ সদস্যের কাছে অনুরোধ করব, আপনি প্রশাসনকে বলুন এই ঘটনার দ্রুত ব্যবস্থা নিতে। রুপগঞ্জে সাধারণ মানুষের কোনও নিরাপত্তা দাবি করে সেলিম প্রধান বলেন, আমার সাথে আমার বাড়িতে তারা যা করেছে, তাহলে সাধারণ মানুষের কী অবস্থা হবে তা চিন্তা করুন। বাংলাদেশে কোথাও কোনও ঘটনা না ঘটলেও রুপগঞ্জে প্রতিনিয়ত নানা ঘটনা ঘটছে। রুপগঞ্জে সাধারণ মানুষের অধিকার একেবারে শূন্য। রুপগঞ্জে এসবের বিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে কেউ শান্তিতে থাকতে পারে না। তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা চালায়। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান থাকবে, আসুন আমরা এই সন্ত্রাসীদের প্রতিহত করি। তাহলেই রূপগঞ্জকে পরিবর্তন করতে পারব। প্রশাসন সহযোগিতা করলে এটা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, রূপগঞ্জের বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান বালু হাবিবের আপন ছোট ভাইয়ের বাহিনীর নাম আজাবর বাহিনী। আরেক বাহিনী হচ্ছে ইমরান বাহিনী। এরা রুপগঞ্জের কেউ না। এরা সিনেমাকেও হার মানাবে। এসব বাহিনী রূপগঞ্জে প্রকাশ্যে মাদকের ব্যবসা করে। এরা রুপগঞ্জকে এক প্রকার ক্রাইম জোনে পরিণত করেছে। আমি সবাইকে বলতে চাই, আপনারা কেউ এদের ভয় পাবেন না। এটা আমাদের দেশ। উপজেলা চেয়ারম্যান বালু হাবিব রূপগঞ্জকে এক ভয়াবহ অবস্থায় নিয়ে গেছে। গেল শুক্রবার আমার বাড়িতে যে হামলা হয়েছে, তা সবচেয়ে বড় প্রমাণ। সে ঘটনার পর এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের রূপগঞ্জের সবাই চেনে। ‘বালু হাবিব’-এর প্রতি প্রশ্ন রেখে সেলিম প্রধান বলেন, এত টাকা সে কোথায় পেল। নির্বাচনের হলফ নামায় সে যে সম্পত্তির হিসাব দিয়েছে, তা বাস্তবসম্মত নয়। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ফরেন ইনভেস্টমেন্টের জন্য নানা জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করছে। আমি ছোটবেলা থেকে জাপানে বড় হয়েছি, আমার জাপানের অনেক বন্ধু বাংলাদেশ ইনভেস্ট করতে চায়। কিন্তু এ ধরনের পরিস্থিতি দেখে কেউ দেশে ইনভেস্ট করতে চাইবে না। পাশাপাশি রূপগঞ্জে জাইকার ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক হচ্ছে। আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাই, এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করে দৃষ্টান্ত তৈরি করতে হবে। যাতে বিদেশিরা মনে করেন… বাংলাদেশ কোনও ক্রিমিনাল কান্ট্রি না, এটা শান্তিপ্রিয় দেশ। সংবাদ সম্মেলনে সেলিম প্রধানের স্ত্রী আনা প্রসভেতোভা বলেন, ঘটনার সময় তিন সন্তানকে নিয়ে খুবই আতঙ্কে ছিলাম। দীর্ঘ সময় সন্ত্রাসীরা আমাদের বাসায় আক্রমণ চালায়, যা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই, যেন দ্রুত ওইসব সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনা হয়। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।