শুক্রবার (১০ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে আবদুল ছালাম মিলনায়তনে বিশ্ব মানবতা. ঐক্য ও সংহতি পরিষদের উদ্যোগে, মানবতা বিদ্ধস্তকারী জালিম ইসরাইলের জুলুম নির্যাতনের প্রতিবাদে বিশ্ব মানবতার ঐক্যের আহ্বানে শীর্ষক সেমিনারে তিনি এই কথা বলেন।
ফিলিস্তিনি জাতির বিরুদ্ধে জায়নবাদী সরকারের অপরাধের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল পাশ্চাত্য শক্তিগুলোর, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্ধ সমর্থন বলে তিনি এই কথা বলেন।
ইরানের মাঝহের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন ড. সৈয়দ আলী জাদা মওসবী বলেন- ফিলিস্তিনের মুক্তিকামীরা গত কয়েক মাস আগে”অপারেশন আল-আকসা সার্জ”-এ জবাবে ইব্রদিবাদী সৈন্যরা ফিলিস্তিনের মুজাহিদিন ও সশস্ত্র যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিবর্তে নারী ও শিশুদের ওপর গণহত্যা চালাচ্ছে এবং আবাসিক ভবনগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করে গুড়িয়ে দিচ্ছে। ফলে প্রতিদিনই ভয়ংকর হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সাধারণ ফিলিস্তিনিদের হতাহতের সংখ্যা। এই পর্যন্ত ৩৪ হাজারের উপর।
তিনি বলেন,ফিলিস্তিনি জাতির বিরুদ্ধে জায়নবাদী সরকারের অপরাধের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল পাশ্চাত্য শক্তিগুলোর, বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্ধ সমর্থন আর কিছু প্রতিক্রিয়াশীল আরব নেতাদের ফিলিস্তিনের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা। ফলে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলো, বিশেষ করে হামাস ও ইসলামি জিহাদের সাহসী সন্তানরা আল্লাহর উপর ভরসা রেখে মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিরোধ ফ্রন্টের সাহায্যে নিজেদেরকে সজ্জিত করতে থাকে। তাদের দৃঢ় প্রত্যয়ে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা একসময়ের পাথর নিক্ষেপ থেকে আজ রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র ও অত্যাধুনিক ড্রোন উড্ডয়নের যোগ্যতায় পৌঁছে গেছে। তাই নিজেদের শক্তি সঞ্চার করে তারা একটি আক্রমণাত্মক কৌশল বেছে নিয়েছে, যাতে দখলদার ইহুদিবাদী শত্রুকে অবাক করে দেয়, তারা বুঝতে পারে যে দখলদারীর দিন শেষ। কারণ সাত দশক ধরে চলে আসা হত্যা, নির্যাতন আর বঞ্চনা ফিলিস্তিনিরা আর বরদাশত করবে না। তারা বিশ্ববাসীকে জানিয়ে দিতে চায় ইহুদিবাদীদের হাত থেকে ‘পবিত্র আল-কুদস’ পুনরুদ্ধার আর সমগ্র ফিলিস্তিন ভূমির স্বাধীনতাই তাদের একমাত্র দাবি।
তিনি আরো বলেন,জায়নবাদী ইজরায়েল রাষ্ট্রের অবৈধ জন্মের পর সত্তর বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গেছে এবং এই সময়ে ফিলিস্তিনের জনগণ নিজ চোখে এমন সব অপরাধ ও হৃদয়বিদারক দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছে যা কোনো মিডিয়া ও ক্যামেরাই তুলে ধরতে পারেনি।সম্প্রতি ইহুদিবাদী হানাদারদের বিরুদ্ধে পরিচালিত ফিলিস্তিনিদের “অপারেশন আল-আক্সা স্টর্ম” নামের গৌরবদীপ্ত ও বীরত্বপূর্ণ বিজয় অভিযানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হিসাবে যা উপস্থাপিত হয় তা হল ইজরায়েলের কয়েক দশকের নৃশংসতা ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যাওয়া, পবিত্র আল-আক্সা মসজিদ কম্পাউণ্ডে নামাযরত মুসুল্লিদের হত্যাকাণ্ড, ফিলিস্তিনি জনগণকে নির্বিচারে হত্যা ও বন্দী করা ইত্যাদির দাঁতভাঙ্গা জবাব দেওয়া।যখন কিছু পশ্চিমা এবং মার্কিন মিডিয়া দখলদার ইহুদিদের নিপীড়িত চেহারা প্রদর্শনের চেষ্টা করছে, তখন ফিলিস্তিনি জাতির বিরুদ্ধে ইহুদিবাদীদের কিছু অপরাধের দিকে দৃষ্টি দিলে জায়নবাদী ইজরায়েলের নৃশংসতার কালো ইতিহাস ফুটে ওঠে। এই মুহূর্তে আমাদের ঈমানী দায়িত্বে ইসলামী দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ ভাবে পশ্চিমা শক্তি ও আমেরিকা ইসরাইলকে প্রতিহত করতে হবে।
উক্ত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ড.আনিসুর রহমান জাফরী, প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন আল্লামা শায়েখ খন্দকার গোলাম মওলা নকশেবন্দী, আন্তর্জাতিক অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইরানের মাঝহের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হুজ্জাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন ড. সৈয়দ আলী জাদা মওসবী, বক্তব্য রাখেন ড. শাহাবুদ্দিন মাশায়েফী, প্রফেসর ড. শাহ্ কাওসার মুস্তাফা আবুলউলায়ী, প্রফেসর ড কে এম সাইফুল ইসলাম খান, প্রফেসর ড মোঃ আহসানুল হাদী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।