নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আজ ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, সকাল ১১ টায় ঢাকার শ্যামলি পার্ক প্রাঙ্গণে ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, এবং ফসিল ফ্রি জাপান এর যৌথ উদ্যোগে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ ও মূকাভিনয় এর আয়োজন করেছে।
জাপানের এলএনজি সম্প্রসারণের পরিকল্পনাকে সামনে নিয়ে এসে জি-৭ ভুক্ত দেশগুলোর জলবায়ু, জ্বালানি এবং পরিবেশ মন্ত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে এই প্রতিবাদ এক যোগে ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, বাংলাদেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মোজাম্বিক, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ায় আয়োজিত হচ্ছে। জীববৈচিত্র্য, জীবিকা, এবং বিভিন্ন দরিদ্র সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার জন্যে এলএনজি সম্প্রসারনের জন্য ঋণ প্রদান বন্ধ করা ও এর ক্ষতিকর প্রভাবের অবসান ঘটাতে জাপানকে বাধ্য করতে জনমত গঠন-ই হলো এই উদ্যেগের মূল উদ্দেশ্য।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ এর গবেষণা বিভাগের ব্যাবস্থাপক ইকবাল ফারুকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই প্রতিবাদ সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের যোগাযোগ বিভাগের ব্যাবস্থাপক মামুন কবীর। সমাবেশে মূখ্য আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ধরা’র সদস্য ফয়সাল আহমেদ।
আলোচনায় ধরার সদস্য ফয়সাল আহমেদ বলেন, জাপান ব্যাংক অব ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন (জেবিআইসি) দ্বারা অর্থায়ন করা এলএনজি প্রকল্প জুড়ে একটি সুস্পষ্ট প্যাটার্ন রয়েছে। তারা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিপর্যয়কর এবং এমনকি স্থানীয় জনগণের জীবিকা, স্বাস্থ্য এবং নিরাপত্তা, জীববৈচিত্র্য এবং মানবাধিকারের জন্য হুমকিস্বরুপ প্রকল্পগুলোতে জেবিআইসি এল এন জি সম্প্রসারন করার জন্য ঋণ প্রদান করে। জাপান একটি গ্যাস সাম্রাজ্যকে শক্তিশালী করার জন্য পাবলিক ফান্ড ব্যবহার করে যখন এলএনজিকে কয়লার একটি পরিষ্কার এবং প্রয়োজনীয় বিকল্প হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার প্রচেষ্টায় আছে, এমতাবস্থায় তা জলবায়ুর জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরুপ হয়ে উঠতে পারে।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের গবেষণা বিভাগের ব্যাবস্থাপক ইকবাল ফারুক বলেন, জাপানের এনার্জি ফাইনান্সিং হল আমাদের জন্য একটি ঋণের ফাঁদ। এলএনজি থেকে যে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় তার দাম সাধারণ জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে ১০ গুন বেশী, যা বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর সামথ্যের বাইরে। জেবিআইসি, বাংলাদেশে আইইপিএমপিকে ও এলএনজিকে অর্থায়ন করতে চায়। আইইপিএমপি একটি ভ্রান্ত সমাধান যা বাংলাদেশের জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন করতে জেবিআইসি পরিকল্পনা বদ্ধ। আমাদের দেশের স্বার্থে এলএনজি এবং জীবাশ্ম জ্বালানিতে জাপানি ঋণ এর অর্থায়নকে অবশ্যই আমাদের প্রতিহত করতে হবে।
ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের যোগাযোগ বিভাগের ব্যাবস্থাপক মামুন কবীর বলেন, পুরো এশিয়াব্যাপী এলএনএজি’র প্রচলনের ক্ষেত্রে জাপান ব্যাংক অব ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন নামের ব্যাংক ঋণ প্রদানের পরিকল্পনা করছে। এলএনজিতে ঋণ প্রদান ও এর সম্প্রসারন আমাদের এই পৃথিবীর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হওয়া সত্ত্বেও ঋণ প্রদানকারী ব্যাংক তথা জেবিআইসি যেভাবে কাজ করছে তাতে আামাদের ভবিষ্যত আরো হুমকিতে রয়েছে। আমরা আমাদের এই কর্মসূচির মাধ্যমে ঋণ প্রদান বন্ধ করা ও এর সম্প্রসারণ রোধ করে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের জোর দাবি জানাচ্ছি।
কর্মসূচির শেষে ঢাকা ইউনিভার্সিটি মাইম অ্যাকশনের সদস্যরা জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের নেতিবাচক প্রভাব তুলে ধরে একটি মূকাভিনয় প্রদর্শন করেন।