রুপসীবাংলা৭১ আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সিরিয়ার আলাওয়ি অধ্যুষিত লাতাকিয়ায় রবিবার মুসলিম সম্প্রদায়টির বিক্ষোভ সহিংসতা ও গুলিতে রূপ নেওয়ার পর তিনজন নিহত হয়েছে বলে প্রদেশের গণমাধ্যম কার্যালয় জানিয়েছে। দীর্ঘদিনের নেতা বাশার আল-আসাদ—যিনি মুসলিম আলাওয়ি সংখ্যালঘু সম্প্রদায় থেকে উঠে এসেছিলেন—গত বছর বিদ্রোহীদের এক অভিযানে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে সুন্নি–নেতৃত্বাধীন সরকার দ্বারা প্রতিস্থাপিত হওয়ার পর থেকে সিরিয়া কয়েক দফা সাম্প্রদায়িক রক্তপাতের মধ্যে পড়েছে।
লাতাকিয়া নগরের আজহারি স্কোয়ারে রবিবার হাজারো আলাওয়ি বিক্ষোভকারী সিরিয়ায় একটি বিকেন্দ্রীভূত রাজনৈতিক ব্যবস্থা এবং হাজার হাজার আলাওয়ি বন্দির মুক্তির দাবিতে সমবেত হন।
প্রায় দুই ঘণ্টা পর এক অজ্ঞাত স্থান থেকে গুলির শব্দ শোনা যায় বলে ঘটনাস্থলে থাকা রয়টার্সের একজন প্রতিবেদক জানান। এরপর নিরাপত্তা বাহিনী আকাশে গুলি ছোড়ে এবং বিক্ষোভটি বিশৃঙ্খলায় পরিণত হয়। বিক্ষোভকারীরা পায়ে হেঁটে আহতদের সরিয়ে নিতে থাকে।
সংবাদকর্মীদের কাছে বিতরণ করা লাতাকিয়া প্রদেশের গণমাধ্যম কার্যালয়ের এক লিখিত বিবৃতিতে বলা হয়, তিনজন নিহত এবং ৪০ জনের বেশি আহত হয়েছে। আজহারি স্কোয়ারেই সব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না, নাকি অন্যান্য শহরেও যেখানে বিক্ষোভ হচ্ছিল—সেটি নির্দিষ্ট করা হয়নি।
সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সানা জানায়, লাতাকিয়ায় ‘সাবেক শাসনব্যবস্থার সশস্ত্র অবশিষ্টাংশের’ গুলিতে নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য নিহত হয়েছেন। আজহারি স্কোয়ারের কাছে অজ্ঞাত হামলাকারীদের গুলিতে বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তাকর্মীরা আহত হয়েছে বলেও জানানো হয়।
এ সমাবেশের ডাক দিয়েছিলেন সুপ্রিম আলাওয়ি ইসলামিক কাউন্সিলের প্রধান ঘাজাল ঘাজাল।
গত নভেম্বরে একই ধরনের বিক্ষোভ কেবল এক ঘণ্টা স্থায়ী হয়, তারপর সিরিয়ার নতুন সরকারের সমর্থনে পাল্টা বিক্ষোভের মুখোমুখি হয়। উভয় সমাবেশ ছত্রভঙ্গ করতে সিরীয় নিরাপত্তা বাহিনী গুলি ব্যবহার করে।বিক্ষোভকারীরা রবিবার স্লোগান দেয়, ‘আমরা ফেডারেলিজম চাই!’ এবং ‘সিরিয়ার জনগণ এক!’
সালমান মানসুর নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমরা মর্যাদার দাবিতে এসেছি, জীবিকার দাবিতে এসেছি, আমরা রাজনৈতিক ফেডারেলিজম চাইতে এসেছি—যেমন বড় দেশগুলোতে আছে, যেমন আমেরিকা, জার্মানি এবং (সংযুক্ত আরব) আমিরাত।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ভূমিতে আমাদের হত্যা করার পর, আমরা আমাদের জীবিকার অধিকার চাইতে এসেছি।’ গত মার্চে আসাদ–অনুগতদের একটি ব্যর্থ বিদ্রোহ প্রতিশোধমূলক হত্যাকাণ্ডের জন্ম দেওয়ার পর সরকার–সম্পৃক্ত বাহিনীর হাতে এক হাজারেরও বেশি আলাওয়ি নিহত হয়।
গত সপ্তাহে কাছের শহর হোমসের একটি আলাওয়ি মসজিদে বোমা বিস্ফোরণে আটজন নিহত হয়।নিসরিন খাজেম নামের আরেক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমরা আমাদের মর্যাদার জন্য ফেডারেলিজমের দাবি জানাতে থাকব। তারা বলে আমরা একে অপরকে ঘৃণা করি—না!’
রুপসীবাংলা৭১/এআর

