রুপসীবাংলা৭১ তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : মহাবিশ্বের একেবারে শুরুর দিকে আজকের নক্ষত্রগুলোর চেয়ে অনেক বড় ও শক্তিশালী নক্ষত্র ছিল। বিজ্ঞানীরা এমন শক্ত প্রমাণ পেয়েছেন। জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহার করে গবেষকেরা এসব বিশাল নক্ষত্রের অস্তিত্বের চিহ্ন শনাক্ত করেছেন। আকৃতিতে অত্যন্ত বড় হওয়ায় বিজ্ঞানীরা এগুলোকে তুলনা করছেন পৃথিবীর ডাইনোসরের সঙ্গে।
গবেষকদের মতে, এসব নক্ষত্রের ওজন ছিল সূর্যের তুলনায় এক হাজার থেকে দশ হাজার গুণ বেশি। এগুলো খুব অল্প সময়, প্রায় দুই লাখ পঞ্চাশ হাজার বছর টিকে ছিল। এরপর কোনো বিস্ফোরণ ছাড়াই সরাসরি ব্ল্যাক হোলে রূপ নেয়।
এই গবেষণার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ মিলেছে GS 3073 নামের একটি দূরবর্তী গ্যালাক্সি থেকে। গ্যালাক্সিটি পৃথিবী থেকে প্রায় ১২.৭ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে। অর্থাৎ বিজ্ঞানীরা একে দেখছেন মহাবিস্ফোরণের (বিগ ব্যাং) প্রায় ১.১ বিলিয়ন বছর পরের অবস্থায়।
জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ দিয়ে গ্যালাক্সিটির রাসায়নিক গঠন বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সেখানে নাইট্রোজেনের পরিমাণ অক্সিজেনের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে বেশি। সাধারণ নক্ষত্র বা পরিচিত নক্ষত্র-বিস্ফোরণ দিয়ে এই ভারসাম্য ব্যাখ্যা করা যায় না।
বিজ্ঞানীরা জানান, এত বেশি নাইট্রোজেন কেবল তখনই তৈরি হতে পারে, যখন অত্যন্ত বিশাল আকারের প্রাচীন নক্ষত্রের ভেতরে বিশেষ ধরনের পারমাণবিক প্রক্রিয়া ঘটে। কম্পিউটার মডেল ব্যবহার করে দেখা গেছে, সূর্যের ১,০০০ থেকে ১০,০০০ গুণ ভরের নক্ষত্রেই এই প্রক্রিয়া সম্ভব।
গবেষণা আরও ইঙ্গিত দেয়, এসব বিশাল নক্ষত্র শেষ পর্যন্ত সরাসরি ব্ল্যাক হোলে পরিণত হয়। পরে এসব ব্ল্যাক হোল একে অপরের সঙ্গে মিলিত হয়ে অল্প সময়ের মধ্যেই তৈরি করে সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল (অত্যন্ত বড় ব্ল্যাক হোল)। GS 3073 গ্যালাক্সির কেন্দ্রে থাকা বিশাল ব্ল্যাক হোল সম্ভবত এভাবেই তৈরি হয়েছে।
এই আবিষ্কার মহাবিশ্বের শুরুর সময়ের নক্ষত্র ও ব্ল্যাক হোল গঠনের রহস্য বুঝতে নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে।
রুপসীবাংলা৭১/এআর

