রুপসীবাংলা৭১ আইন-আদালত ডেস্ক : পরিবেশ খাতে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় বিচারকদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দিনব্যাপী এক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে এবং আইন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় বৃহস্পতিবার টিআইবির ধানমন্ডি কার্যালয়ে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশে জলবায়ু-সম্পর্কিত বিরোধ-নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অংশগ্রহণকারীদের সাংবিধানিক ও আন্তর্জাতিক পরিবেশ আইন, ন্যায়বিচার এবং প্রয়োগযোগ্য কার্যকরী জ্ঞান ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
‘জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ-সংক্রান্ত মামলা, বিচার এবং আইনের শাসন’ শীর্ষক এই প্রশিক্ষণে ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে জেলা ও দায়রা জজ, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এবং আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিবসহ মোট ২৫ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।
প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী বক্তব্যে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী পরিবেশ আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও পরিবেশ আদালতের বিচারকদের দক্ষতার অধিকতর বিকাশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বৈশ্বিক অভিজ্ঞতা ও আন্তর্জাতিক উত্তম চর্চার আলোকে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে টিআইবি এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
টিআইবির আউটরিচ ও কমিউনিকেশন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী পর্বে আরও বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা-নির্বাহী ব্যবস্থাপনা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের।
দিনব্যাপী এ কর্মশালায় বিভিন্ন অধিবেশন পরিচালনা করেন অস্ট্রেলিয়ার ম্যাককুয়েরি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক ও পরিবেশ আইনের অধ্যাপক ড. শওকত আলম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইকরামুল হক। এ সময় তারা আইনের শাসন, সুশাসন ও আন্তর্জাতিক পরিবেশগত মূলনীতি, বৈশ্বিক ও দক্ষিণ এশিয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আইনের ব্যবহারবিধি এবং বাংলাদেশের আইনি কাঠামোতে পরিবেশ ও জলবায়ু-সংক্রান্ত বিচারিক প্রতিকার ও প্রতিফলনের বিভিন্ন দিক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
প্রশিক্ষণে দলগত অনুশীলন এবং আলোচনার মাধ্যমে আইনের নানা দিক, বৈশ্বিক চর্চা ও পরিবেশগত ন্যায়বিচারের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পুনর্বিবেচনার মধ্য দিয়ে জলবায়ু অভিযোজন ও পুনর্বাসন কার্যক্রম মূল্যায়ন করা হয়।
প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী বিচারক ও কর্মকর্তাগণ দলগত অনুশীলনের মাধ্যমে নদী দূষণ রোধ, শিল্পবর্জ্য নিরীক্ষা, বন সংরক্ষণ আইনের প্রয়োগ এবং উপকূলীয় অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর জন্য জলবায়ু অভিযোজন ও পুনর্বাসন কার্যক্রমের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তাঁরা পরিবেশ সংরক্ষণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে বিচার বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দেন।
প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক, উপদেষ্টা, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা এবং প্রশিক্ষকবৃন্দ। এসময় প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করে, টিআইবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন অংশগ্রহণকারী বিচারক ও কর্মকর্তাবৃন্দ।
দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ শেষে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সনদ বিতরণ করা হয়। টিআইবি জানায়, পরিবেশগত ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির এই ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
রুপসীবাংলা৭১/এআর
