রুপসীবাংলা৭১ তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্ক : চাঁদ নিয়ে কোটি কোটি বছর ধরেই কৌতুহলী মানুষ। রোদে পোড়া দিনের শেষে চাঁদ আসে অপূর্ব স্নিগ্ধতা নিয়ে। আঁধার রাতের বুক চিরে বেরোনো চাঁদের আলোতে মানুষ মুগ্ধ হয়। গান, কবিতার ছন্দে মাতে। হলদে ফ্যাকাশে চাঁদও তাই হয়ে ওঠে রোমান্টিক। পূর্ণিমা চাঁদ আরও মোহময়, মায়া জাগানিয়া। এই চাঁদের জোছনায় ভাসে মন, আলোড়ন ওঠে। শিহরণ জাগানিয়া এই চাঁদকে অবশ্য কোনো কোনো কবির কাছে ঝলসানো রুটিও মনে হয়। তবে সেখানেও শর্ত আছে, যদি পেটে ক্ষুধা থাকে।
তবে সবকিছুর পরও চাঁদ নিয়ে মানুষের আগ্রহ কমে না। উল্টো চাঁদে আধিপত্য ধরে রাখার লড়াইয়ে নামে বিশ্বের পরাশক্তিরা। তাই জোছনার রঙ ছুঁয়েই মানুষ ক্ষান্ত হতে পারেনি। চাঁদের শান্ত মাটিতেও তাই এখন অশান্তির গর্জন। শোনা যাচ্ছে, পরাশক্তিরা চাঁদে সামরিক ঘাঁটিও বানাতে চায়। দখলে নিতে চায় চন্দ্রমাটি।
তবে আজ বৃহস্পতিবার, ৪ঠা ডিসেম্বরের চাঁদ অন্য কারণে আলোচনায়। বছরের শেষ এবং উজ্জ্বলতম সুপারমুন বা কোল্ড মুন পূর্ণ রূপে ধরা দেবে পৃথিবীর বুকে আজ ধরা দেবে চাঁদ। এই বছর তিনটি সুপারমুনের দেখা মিলেছে। যাকে রীতিমতো বিরল বলছেন জ্যোতির্বিদরা। এমনকি ২০২৬ সালের প্রথম পূর্ণিমাতেও একটি সুপারমুন দেখার সুযোগ রয়েছে।
তবে সুপার মুনে একই কাণ্ড ঘটলেও বছরের বিভিন্ন সময়, একে ডাকা হয় ভিন্ন ভিন্ন নামে। কিন্তু কেনো এই নামকরণ, এর বৈশিষ্ট্যই বা কি? কবে থেকে এই মহাপূর্ণিমাগুলোকে দেয়া হচ্ছে এমন নাম?
চাঁদ যখন তার কক্ষপথের পৃথিবীর নিকটতম বিন্দুতে থাকা অবস্থায় পূর্ণিমা হয়, তখন তাকে সুপারমুন বলা হয়। এই সময় চাদকে স্বাভাবিকের চেয়ে আরও বড় ও উজ্জ্বল দেখায়। আর পূর্ণিমা আসে সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদ একটি সরলরেখায় থাকলে। এসময় চাঁদের সম্পূর্ণ আলোকিত দিকটি দেখতে পাওয়া যায় পৃথিবী থেকে।
আজ দুপুরে এই পূর্ণ চাঁদ পূর্ব-উত্তর-পূর্ব আকাশে উদিত হবে। লন্ডনে এটি দেখা যাবে ১৪:৫২ জিএমটিতে। এই সুপারমুন দেখার জন্য দীর্ঘ সময় পাওয়া যাবে। এটি আবার পরের দিন ভোর ৮:০০টা থেকে ৯:০০টার মধ্যে অস্ত যাবে। সুতরাং, সারা রাত ধরে চাঁদ দেখার জন্য যথেষ্ট অন্ধকার সময় পাওয়া যাবে।
চাঁদ যখন আকাশ পথে উঠবে, তখন তা প্লিয়াডেস নক্ষত্রপুঞ্জ এবং উজ্জ্বল নক্ষত্র অ্যাল্ডিব্যারানের সাথে একটি সুন্দর ত্রিকোণ তৈরি করবে। এছাড়াও, রাতের আকাশে চাঁদের কাছাকাছি দেখা যাবে গ্রহরাজ বৃহস্পতিকে। উজ্জ্বলভাবে উপস্থিত থাকবে শীতের জনপ্রিয় নক্ষত্রমণ্ডল কালপুরুষ।
বছরের প্রতিটি পূর্ণিমারই একটি করে ঐতিহ্যবাহী নাম রয়েছে। গ্রেগরিয়ান ক্যালেন্ডারের বহু আগে থেকেই এর প্রচলন। এই নামগুলো মূলত ঋতু পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে শিকার, ফসল কাটা এবং চাষের সময় নির্ধারণে সাহায্য করত। ডিসেম্বরের পূর্ণিমাকে সেই ধারাবাহিকতায় কোল্ড মুন বলা হয়। কারণ এই পূর্ণিমা শীতকালীন সংক্রান্তির কাছাকাছি ঘটে এবং শীতের শুরুকে নির্দেশ করে। একে লং নাইট মুন এবং মুন বিফোর ইউল নামেও ডাকা হয়।
পরবর্তী সুপারমুনটি দেখা যাবে ২০২৬ সালের ৩রা জানুয়ারিতে। যার নাম উল্ফ মুন।
সূত্র: বিবিসি
রুপসীবাংলা৭১/এআর

