নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বন্দরে বিদেশীদের সাথে কনটেইনার টার্মিনাল চুক্তি সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকারের আদানি চুক্তির মত এই সরকারও একই পথে হাঁটছে।
অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় অস্বাভাবিক দ্রুততায় বিদেশি কোম্পানির হাতে কনটেইনার টার্মিনাল তুলে দেয়া জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। কঠোর গোপনীয়তায় তাড়াহুড়ো করে টার্মিনাল সংক্রান্ত চুক্তি দেশের নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলবে। অবিলম্বে জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী বিপজ্জনক কাজে টার্মিনাল চুক্তি থেকে সরে আসুন।

সকালে পার্টির বিক্ষোভ সমাবেশে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক অস্বাভাবিক দ্রুততায় বিদেশী কোম্পানির সাথে চট্টগ্রামের লালদিয়া ও কেরানীগঞ্জের পানগাঁওতে কনটেইনার টার্মিনাল চুক্তি করায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছেন এবং শর্ত গোপন রেখে এবং জনগণের নানা অংশের মতামত উপেক্ষা করে যেভাবে এই চুক্তি করা হয়েছে তা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এই চুক্তি সরকারের উদ্দেশ্য নিয়ে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় যেভাবে একটি ৩০ বছর আর একটি ২২ বছরের পরিচালনা জন্য দুটি বিদেশি কোম্পানির সাথে চুক্তি করে লীজ দেয়া হয়েছে দেশপ্রেমিক কোন সরকার এই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারেনা। অন্তর্বর্তী চরিত্রের একটি সরকারের টার্মিনাল বিদেশিদেরকে দেয়ার জন্য কেন এই তাড়াহুড়া তাও পরিস্কার নয়।
তিনি বলেন, বিদেশীদের হাতে কনটেইনার টার্মিনাল পোর্ট নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্ব দেয়ার সাথে জাতীয় স্বার্থ ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন যুক্ত রয়েছে। রাজনৈতিক সমঝোতা ও বোঝাপড়া ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারণী বিষয়ে এই ধরনের কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনা।অতীতে সরকার জাতীয় জনমতকে উপেক্ষা করে ও জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নানা চুক্তি করায় জনরোষের শিকার হয়েছিল। তিনি বলেন ভারতীয় আদানি গোষ্ঠীর সাথে আওয়ামী লীগ সরকারের অসম ও অন্যায় চুক্তির খেসারত এখনও বাংলাদেশকে দিতে হচ্ছে। বিস্ময়করভাবে অন্তর্বর্তী সরকারও স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকরের পথে হাটছে।
তিনি উল্লেখ করেন কঠোর গোপনীয়তার সাথে জিটুজি পদ্ধতিতে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্র ব্যতিরেকে যেভাবে এই চুক্তি করা হয়েছে তাতে সরকারের উদ্দেশ্য নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। যে সরকারের বয়স আর তিন মাস সেই সরকারকে কেন প্রবল বিরোধিতা আর বিতর্কের মধ্যে এই চুক্তি করতে হবে তার যুক্তিসঙ্গত কোন ব্যাখ্যা নেই।
তিনি অনতিবিলম্বে সরকারকে বিদেশীর দিয়ে ও তাদের পরিচালনায় টার্মিনাল সংক্রান্ত চুক্তি থেকে সরে আসতে সরকারের প্রতি আহবান জানান।তিনি অতীতে স্বাক্ষরিত দেশ ও জনস্বার্থ বিরোধী এই ধরনের চুক্তির পর্যালোচনা ছাড়া নতুন কোন চুক্তি না করার দাবি জানান।
তিনি এই চুক্তি বাতিল করে নিজেদের জাতীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির বিষয়ে মনোযোগ দিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহবান জানান।
আজ সকালে পুরানা পল্টন মোড়ে অনুষ্ঠিত বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে আকবর খান বলেন, সরকারকে যা খুশী তাই করতে দেয়া হবেনা।প্রয়োজন এই চুক্তি বাতিলে অচিরেই বৃহত্তর কর্মসূচী দেয়া হবে।
পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য আকবর খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন পার্ট ইসলাম, এমডি ফিরোজ, কেন্দ্রীয় সংগঠক বাবর চৌধুরী, যুবরান আলী জুয়েল প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে বিদেশি কোম্পানির সাথে কনটেইনার টার্মিনাল চুক্তি বাতিলসহ বিভিন্ন দাবিতে পার্টির নেতা কর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল তোপখানা রোড, বিজয়নগর ও সেগুনবাগিচা প্রদক্ষিণ করে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এসে শেষ হয়।

