রুপসীবাংলা৭১ অন্যান্য ডেস্ক : মুসলমান মুসলমানের ভাই। তারা দেহের মতো। বাহ্যিকভাবে প্রত্যেকের বর্ণ, গোত্র, পেশা, ভাষা ও অঞ্চল ভিন্ন হলেও ঈমান ও ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে সব মুসলমান এক জাতি। সব মুসলমানই মহান আল্লাহকে একমাত্র উপাস্য হিসেবে সাক্ষ্য দেয় এবং শেষ নবী মুহাম্মদ (সা.)-কে মহান আল্লাহর বান্দা ও রাসুল বলে বিশ্বাস করে।
নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে সবাই এক কিবলার অনুসরণ করে, একই মাসে রোজা পালন করে এবং একই স্থান ও কালে হজ সম্পাদন করে। এ জন্য হয়তো মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনদের উদাহরণ তাদের পারস্পরিক ভালোবাসা, দয়ার্দ্রতা ও সহানুভূতির দিক থেকে একটি মানবদেহের মতো। যখন তার একটি অঙ্গ আক্রান্ত হয় তখন তার সমস্ত দেহ ডেকে আনে তাপ ও অনিদ্রা।’ (মুসলিম, হাদিস : ৬৪৮০)
তাই প্রত্যেক মুসলমানের উচিত সুখে-দুঃখে একে অপরের পাশে থাকা। একে অপরের সহযোগী হওয়া। কোন কোন ক্ষেত্রে একে অপরের সহযোগী হওয়া আবশ্যক, সে ব্যাপারে পবিত্র কোরআনে নির্দেশনা আছে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘সৎকর্ম ও তাকওয়ায় তোমরা পরস্পরের সহযোগিতা করো। মন্দকর্ম ও সীমা লঙ্ঘনে পরস্পরের সহযোগিতা কোরো না।
আর আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ আজাব প্রদানে কঠোর।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ২)
যদি কোনো মুসলমান তাকওয়া ও সৎকর্মে অপরের সহযোগিতা করে, তবে সেও সে কাজের সমপরিমাণ সওয়াব পাবে। নবীজি (সা.) বলেছেন, সৎকাজের পথপ্রদর্শক ওই কাজ সম্পাদনকারীর সমতুল্য। (তিরমিজি, হাদিস : ২৬৭০)
অর্থাৎ সেও সৎকাজ সম্পাদনকারীর সমান সওয়াব পাবে। আবার পরস্পরকে সহযোগিতা করা হয় মানুষের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য, যা অত্যন্ত ফজিলতের কাজ।
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে লোক কোনো মুমিন ব্যক্তির দুনিয়াবি অসুবিধাগুলোর কোনো একটি অসুবিধা দূর করে দেয়, তার পরকালের অসুবিধাগুলোর মধ্যে একটি অসুবিধা আল্লাহ তাআলা দূর করে দেবেন। কোনো মুসলমান ব্যক্তির দোষত্রুটি যে লোক গোপন রাখে, তার দোষত্রুটি আল্লাহ তাআলা দুনিয়া ও আখিরাতে গোপন রাখেন। যে পর্যন্ত বান্দা তার ভাইকে সাহায্য করতে থাকে সে পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা তাকে সাহায্য করতে থাকেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১৪২৫)
অপরের বিপদে আত্মনিয়োগ করলে নিজের বিপদে মহান আল্লাহকে পাশে পাওয়া যায়। অপরের প্রয়োজন মেটানোর চেষ্টা করলে, মহান আল্লাহও চেষ্টাকারী ব্যক্তির প্রয়োজনগুলো সহজে মিটিয়ে দেন। অপর ভাইয়ের দোষ গোপন রাখলে, মহান আল্লাহও তার দোষ গোপন রাখেন। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘এক মুসলিম অপর মুসলিমের ভাই। কাজেই সে তার ওপর নির্যাতন করবে না এবং তাকে অসহায় অবস্থায়ও ছেড়ে যাবে না। যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের প্রয়োজন মেটাবে, আল্লাহ তার প্রয়োজন মেটাবেন। একইভাবে যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিনে তার বিপদ দূর করে দেবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ গোপন রাখবে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তার দোষ গোপন রাখবেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৮৯৩)
মহান আল্লাহ সবাইকে তাকওয়া ও নেকির কাজে একে অপরের সহযোগী হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
রুপসীবাংলা৭১/এআর

