নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আসন্ন অর্থবছরে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর প্রস্তাব বিষয়ক ওরিয়েন্টেশন। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভোক্তা পর্যায়ে সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্য মোড়কে মুদ্রিক সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে বিক্রি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তামাক নিয়ন্ত্রণ বিশেষজ্ঞ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সাংবাদিক ও বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটের সদস্যরা। একইসঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি ও জনস্বাস্থ্যকে বিবেচনায় নিয়ে আসন্ন অর্থবছর উপলক্ষ্যে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর প্রস্তাব দিয়েছে তারা।
আজ সোমবার ২৫ মার্চ ২০২৪ সকাল ১১টায় ‘আসন্ন অর্থবছর উপলক্ষ্যে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ও কর বিষয়ক ওরিয়েন্টেশনে তারা এ দাবি ও প্রস্তবনা দেয়। বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট (বাটা) এবং বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) যৌথভাবে মিটিং সফটওয়ার জুমে এ ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করে। বাজেট প্রস্তাবনা সম্পর্কে বাটা তার সদস্য সংগঠনের প্রতিনিধিদের অবহিতকরণ ও আলোচনার জন্য প্রতিবছর এ ওরিয়েন্টেশনের আয়োজন করে থাকে।
ডেভেলপমেন্ট এক্টিভিটিজ অব সোসাইটি (ডাস) এর উপদেষ্টা আমিনুল ইসলাম বকুলের সভাপতিত্বে এবং ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর প্রকল্প কর্মকর্তা মিঠুন বৈদ্যর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনটিটিপি’র প্রকল্প ব্যবস্থাপক হামিদুল ইসলাম হিল্লোল। বিশিষ্ট আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ভাইটাল স্ট্রাটেজিসের কারিগরি পরামর্শক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম তাহিন, শেয়ার বিজ পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ্। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ডব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর কর্মসূচী প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমান। এছাড়াও অনলাইনে যুক্ত ছিলেন দেশব্যাপী তামাক নিয়ন্ত্রণে কর্মরত ৫০ টিরও বেশি সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাকজাত দব্যের দাম বাড়ানোসহ একাট দীর্ঘস্থায়ী ও শক্তিশালী কর নীতি প্রণয়ন, মোড়কে মুদ্রিত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্যে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় নিশ্চিত করতে হবে। এমআরপিতে বিক্রি নিশ্চিত না হওয়ায় সরকার কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের তুলনায় তামাকজাত দ্রব্য তুলনামূলভাবে অধিক সাশ্রয়ী। কর বৃদ্ধির মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্যের মূল্য ভোক্তার ক্রয়সক্ষমতার বাইরে নিয়ে যাওয়া জরুরি। এতে তামাকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সরকারের অতিরিক্ত রাজস্ব আয় হবে। এই অতিরিক্ত রাজস্ব জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর খাবারে ভর্তুকির ক্ষেত্রে ব্যয় করলে জনস্বাস্থের উন্নয়ন ঘটবে। তারা এসময় বাটার সদস্যদের টাস্কফোর্স সভায় অংশ গ্রহণের মাধ্যমে কর বৃদ্ধিসহ তামাক নিয়ন্ত্রণের সকল বিষয় তুলে ধরার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে আসন্ন অর্থবছরের কর প্রস্তাবে বলা হয়েছে, নিম্ন স্তরের প্রতি ১০ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৬০ টাকা নির্ধারণ করে ৬৩% সম্পূরক শুল্ক আরোপ; মধ্যম স্তরের প্রতি ১০ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৮০ টাকা নির্ধারণ করে ৬৫% সম্পূরক শুল্ক আরোপ; উচ্চ স্তরের প্রতি ১০ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬৫% সম্পূরক শুল্ক আরোপ; এবং প্রিমিয়াম স্তরের প্রতি ১০ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৭০ টাকা নির্ধারণ করে ৬৫% সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা। ফিল্টারবিহীন বিড়ির ক্ষেত্রে ২৫ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২৫ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫%সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা এবং ফিল্টারযুক্ত বিড়ির ক্ষেত্রে ২০ শলাকার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ২০ টাকা নির্ধারণ করে ৪৫%সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা। এছাড়া প্রতি ১০ গ্রাম জর্দার সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৫৫ টাকা নির্ধারণ করে ৬০%সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা; এবং প্রতি ১০ গ্রাম গুলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৩০ টাকা নির্ধারণ করে ৬০%সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা। এছাড়াও সকল তামাকজাত দ্রব্যের খুচরা মূল্যের ওপর ১৫% মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং ১% স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ বহাল থাকবে।