রুপসীবাংলা৭১ প্রতিবেদক : ক্ষমতাচুত্য আওয়ামী লীগ ঘোষিত কর্মসূচি ঠেকাতে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শাহবাগ এলাকায় অবস্থান নিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। যদিও তারা বুধবার সকাল ৬টা থেকে অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। রাতে মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি ফেসবুকে লেখেন, বাতাসা কেনা হয়েছে এক মণ, সঙ্গে বরিশালের মোটা মুড়ি, কলা ডিম ও পাউরটিও। সকালে এসে সবাইকে খাওয়ার দাওয়াত দেন। সকাল ৯টায় লেখেন ডিম রুটি কলা খেয়ে রেডি হলাম।
এদিকে রাতে মঞ্চের নেতাকর্মীরা বাংলামোটর হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার পর আওয়ামী লীগ কার্যালয় অভিমুখে মিছিল করার কথা রয়েছে।
এদিকে সকালে সাংবাদিকদের হাদি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ডাক দিয়ে সবাই কলকাতায় হোটেলে ছিল। এখানকার কৃষক, শ্রমিক, জনতা মুক্তিযুদ্ধ করেছে, দেশ স্বাধীন হয়েছে। তারা এসে বলে মুক্তিযুদ্ধের মালিক আমরা। এখন তারা একটা অনলাইনে লকডাউন করতেছে— একজন (শেখ হাসিনা) দিল্লিতে, তার ছেলে আমেরিকায়; মানে পুরো বিদেশ বইসা বাংলাদেশ থেকে পাচার করা টাকা খায়, ঘুমায় আর অনলাইনে লকডাউন ডাকে। আর কতক্ষণ পর পর টেলিগ্রামের মাধ্যমে ঘোষণা আসে। আর দেশের বোকা যে শ্রেণিটা আওয়ামী লীগের, এরা বের হয়ে আওয়াজ দেয় আর জেলে যায়, মাঝে মধ্যে পাবলিকের মার খায়। এইটুকু বুদ্ধিশক্তি আল্লাহ এদেরকে দেয় নাই যে, যাদের নেত্রী মায়ের মতো আপা, যে হেলিকপ্টারে পালানোর সময় নিজের বোন ছাড়া কাউরে বলে যাননি যে তোমরাও পালাও, আমিও পালাই। এটা তো আসলে একটা কাল্ট, সেমি ধর্মের মতো, মানে আপনি অন্ধবিশ্বাসী। আমাদের ধারণা আওয়ামী লীগের বাংলাদেশের নাম নিশানা থাকবে না। কালকে সারারাত এই অঞ্চলে ছিলাম, সকাল থেকে আছি। এখানে যারা আছেন, কেউ রাজনৈতিক পরিবারের ছেলেমেয়ে না, মানে পুরো অরাজনৈতিক প্রজন্ম যারা সারারাত জেগে ফজরের পর থেকে এখানে পাহারা দিচ্ছেন। এর মানে এই অরাজনৈতিক প্রজন্ম পলিটিক্যাল হয়ে উঠছে। তারা রাজনৈতিক দল করছে না, কিন্তু দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখবার জন্য তারা সেই রাজনৈতিক দায়িত্ব পালন করছে। আওয়ামী লীগ যেরকম মুক্তিযুদ্ধ কুক্ষিগত করেছে, জুলাই গণঅভ্যুত্থান সেই মুক্তিযুদ্ধের মালিকানা এবার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মনে করি যে, রায়ের আজকে তারিখ ঘোষণা হবে এবং এই তারিখ ঘোষণা পরবর্তীতে সুষ্ঠু বিচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে অফিশিয়ালি আওয়ামী লীগের কবর রচিত হয়ে যাবে। এখানে দিল্লির যে ভুলটা হয়েছে, তারা তাদের সমস্ত বিনিয়োগ আওয়ামী লীগের উপর করে ফেলেছে। সুতরাং এখন তাদের আর শুধরানোর জায়গা নাই। ভারতীয় এস্টাবলিশমেন্টকে বলতে বলতে চাই, আপনারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে স্বীকৃতি দিন এবং সম্মান করুন।
অতীতে যে ভুল করেছেন সেই ভুল থেকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে ক্ষমা চান। এবং জুলাইকে স্বীকৃতি দিয়ে আপনারা নতুন বাংলাদেশের সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেন। দেখেন আপনারা আমাদের প্রতিবেশী। আমরা ভালো প্রতিবেশী হিসেবে আপনাদেরকে চাই। কিন্তু প্রভু মানি না। দেখেন আপনি (ভার) কোন দেশে প্রভুত্ব বানাইতে পারবেন না। আপনার পাশের দেশ শ্রীলঙ্কা আপনার হাতছাড়া হয়ে গেছেন। নেপাল গেছে, ভুটান গেছে। পাকিস্তানের সীমানায় ওঠার আগে সেটা ধপাস করে পড়ে গেছে। আর আওয়ামী লীগের যারা দেশে আছেন আপনাদেরকে বলি, হাসিনার উস্কানিতে আপনারা জীবন ধ্বংস কইরেন না। আজীবন তার উস্কানি ধ্বংস করেছে। সে কিন্তু ঠিক হেলিকপ্টারে পালাইছে। তার ছেলে কিন্তু আমেরিকায়। মেয়েও কিন্তু দেশে না। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ কোনদিনই একটা রাজনৈতিক দল না। এটা একটা মাফিয়া দল। বাংলাদেশে তার কোনো শিকড় নাই। দেখেন, খালেদা জিয়া কত জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তিনি কি বাংলাদেশ ছেড়ে গেছেন? তিনি বলেছেন, জেল খাটলেও দেশে থাকবেন।’
জামায়েত ইসলামী নিয়ে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি বলেন, জামায়েত ইসলামের নেতাদের ফাঁসি হয়েছে, এদেশে তারা লড়াই করেছে। গত ১৫ বছরের দেশে গুম হয়েছে, খুন হয়েছে। তারা তো দেশ ছেড়ে পালায়নি। অথচ তাদেরকে সব সময় পাকিস্তানি বলা হয়েছে, তারা তো পাকিস্তান যায়নি। কিন্তু আপনি (শেখ হাসিনা)তো ঠিকই দিল্লি পালাইছেন।’
রুপসীবাংলা৭১/এআর

