রুপসীবাংলা৭১ স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ডেস্ক : দেশের প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সরকার সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা করেছে। নতুন করে আরও ৫০০টির বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ বা স্থানান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বুধবার ঢাকার মহাখালীর বিএমআরসি সম্মেলন কক্ষে ‘কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে এই তথ্য জানান কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৫১৬ টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপনের কাজ শুরু করা হবে। এরই মধ্যে একটি তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলছে। এই প্রকল্পে অর্থায়ন করবে জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)।
আখতারুজ্জামান বলেন, দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় গত ৫৩ বছরে স্বাস্থ্য খাতে বড় সংস্কার এই কমিউনিটি ক্লিনিক।
কারণ এটা শুধু ইউনিয়ন নয়, একেবারে ওয়ার্ড লেভেলেও স্বাস্থ্যসেবা। বাংলাদেশের ৭০ শতাংশ মানুষকে এখান থেকে প্রাথমিক বা প্রান্তিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়। জ্বর, সর্দি, কাশি, পেটের অসুখ, চুলকানিসহ ২২ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। এছাড়াও উপযুক্ত হাসপাতালে রেফারেলের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবায় এক নতুন মাত্রা যুক্ত হয়েছে দেশে।
সারাদেশের ঝুঁকিপূর্ণ কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো পুনঃনির্মাণ ও মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে জানিয়ে ট্রাস্টের মাঠ প্রশাসনের পরিচালক আসিফ মাহমুদ বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্ট এখন শুধু সেবা দেওয়ার জন্য সীমাবদ্ধ থাকতে চায় না, বরং একটি শক্তিশালী স্বাস্থ্য অবকাঠামো গড়ে তুলতে চায়। আমরা আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার পরিকল্পনা করছি। পাশাপাশি ডিজিটাল রেফারেল সিস্টেম চালু করা হবে, যাতে একজন সেবাগ্রহীতা কোথায়, কী ধরনের চিকিৎসা পেয়েছেন তা সহজে ট্র্যাক করা যায় এবং সঠিক সময়ে সঠিক সেবা নিশ্চিত করা যায়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় রয়েছে নারী স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা বাড়ানো। বর্তমানে ৫৪ শতাংশ সিএইচসিপি নারী হলেও আমরা সেটিকে ধাপে-ধাপে ৮০ শতাংশ বা তারও বেশি পর্যায়ে উন্নীত করতে চাই। একই সঙ্গে নারী সিএইচসিপিদের ধাত্রীবিদ্যায় বিশেষ প্রশিক্ষণ দেবো, যাতে মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্য সংক্রান্ত এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সহজ হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, প্রতিদিন গড়ে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ৩৫ জন সেবাগ্রহণ করেন। সারাদেশে প্রায় ৪ লাখ ৯০ হাজার জনকে এই সব ক্লিনিক থেকে সেবা দেওয়া হয়। একবছরে সেবা গ্রহীতার সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় ১৬ কোটি।
বর্তমানে দেশে মোট ১৪ হাজার ৪৬৭টি কমিউনিটি ক্লিনিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। প্রতিটি ক্লিনিকে একজন সিএইচসিপির পাশাপাশি স্বাস্থ্য সহকারী ও পরিবার পরিকল্পনা সহকারী সপ্তাহে দুইদিন সেবা দিয়ে থাকেন। প্রতিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম পরিচালিত হয় ১৩ থেকে ১৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিউনিটি গ্রুপের মাধ্যমে। বর্তমানে দেশে সিএইচসিপির সংখ্যা ১৩ হাজার ৯২৩ জন।
রুপসীবাংলা৭১/এআর