রুপসীবাংলা ৭১ঃ কম্পিউটার ও আইসিটি প্রফেশনালদের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে পুরাতন জাতীয় সংগঠন বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটি (বিসিএস)। এই সংগঠনটি ১৯৭৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সরকারের নিবন্ধন নং- ১৬৩৮ (৫০)/৯৫। সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়, ২৩ শহীদ মিনার রোড, কল্যাণপুর, ঢাকা। বাংলাদেশ কম্পিউটার সোসাইটির কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ ইং রোজ শুক্রবার শের-ই-বাংলা নগর আদর্শ মহিলা কলেজ (শের-ই- বাংলা নগর, ঢাকা) অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উক্ত নির্বাচনে দুইটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. শরীফ উদ্দিন (তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক) এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রহমান খান জিহাদ নেতৃত্বাধীন ড. শরীফ -জিহাদ প্যানেল।
অপর প্যানেলটি হলো ড. আরেফিন-ববী প্যানেল। এই প্যানেল থেকে সভাপতি পদপ্রার্থী চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর ই.সি.ই ফ্যাকাল্টির সম্মানিত ডীন ও আইইইই কম্পিউটার সোসাইটি বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের চেয়ার অধ্যাপক ড. প্রকৌঃ মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন এবং এই প্যানেল থেকে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জেবিএল আইটি ফোরামের সভাপতি ও জনতা ব্যাংকের সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার (আইটি) এলিন ববী।
বর্তমান কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট (ফিন্যান্স) রেজাউল করিম বলেন, বর্তমান কমিটি (ড. শরীফ -জিহাদ নেতৃত্বাধীন) কমিটির সকল সদস্যের যথাযথ অনুমোদন ছাড়া ইচ্ছে মতো অপ্রয়োজনীয় ব্যয় করেছে। আমি এবং চলমান কমিটির জয়েন্ট সেক্রেটারি (একাডেমিক) নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া এর আপত্তি থাকা সত্ত্বেও অপ্রয়োজনীয় ব্যয়ের ক্ষেত্রে চলমান কমিটি আমাদের মতামতকে প্রাধান্য দেয়নি। বর্তমান কমিটি বিগত তিন বৎসরে সোসাইটির জন্য একটি টাকা আয় করতে পারে নাই। উল্টো রেকর্ড ভঙ্গ করে গঠনতন্ত্রের আর্থিক নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে এবং অর্থ কমিটির অনুমোদন না নিয়ে সোসাইটির এফ.ডি.আর ভেঙ্গেছে। কমিটির অনুমোদন না থাকায় অগ্রণী ব্যাংক থেকে এফ.ডি.আর না ভাঙ্গাতে পেরে পরবর্তীতে নিয়ম না মেনে কৌশলে সোনালী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করে। দুর্নীতি, আর্থিক অনিয়ম করে এফ.ডি.আর ভেঙ্গে এবং অন্যান্য ফান্ড থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত খরচ করেছে। ব্যয়ের ক্ষেত্রে যথাযত নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি। প্রতিটি ক্ষেত্রেই ছিলো অব্যবস্থাপনা ও আর্থিক অনিয়ম। প্রতিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও বাস্তবায়নে স্বেচ্ছাচারিতা ও স্বজন-প্রীতি করা হয়েছে। রেজাউল করিম বলেন, এজন্য আমরা বর্তমান ম্যানেজমেন্ট কমিটির ০৩ জন সদস্য এবং অধিকাংশ কাউন্সিলর ঐ প্যানেল থেকে বের হয়ে ড. আরেফিন-ববি প্যানেলের সাথে নির্বাচন করছি। রেজাউল করিম দাবী করেন, আমি দায়িত্ব নিয়ে নিজ উদ্যোগ ও নিজ চেষ্টায় বিসিএস এর ০৮ টি বিভাগীয় কমিটি করেছি। বর্তমান কমিটির এখানে তেমন কোন কৃতিত্ব নেই বললেই চলে।
বর্তমান কমিটির জয়েন্ট সেক্রেটারি (একাডেমিক) নজরুল ইসলাম ভুইঁয়া বলেন, বিসিএস এর ওয়েবসাইট মডিফিকেশন এর জন্য এক লক্ষ টাকায় আমরা একটি কোম্পানীকে ( আইটি বাংলা লি:) কাজটি দিয়েছিলাম। কিন্তু উক্ত ওয়ার্ক অর্ডারটি বাতিল করে ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে অন্য একটি কোম্পানীর দ্বারা বিসিএস এর ওয়েবসাইট এর মডিফিকেশন এর কাজটি করা হয়। এটা থেকে স্পষ্ট, বর্তমান কমিটি ১৪ লক্ষ টাকা অতিরিক্ত খরচ করেছে। কিন্তু আমি ছিলাম ওয়েবসাইট কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি অথচ আমাকে এই বিষয়ে একবারও অবহিত করা হয়নি। এভাবেই বর্তমান কমিটির কিছু সদস্য সোসাইটিকে ভঙ্কুর অবস্থার দিকে ঢেলে দিয়েছে।
সোসাইটির আজীবন সদস্য (M01647) প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম তুষার বলেন, যে দুটি প্যানেল নির্বাচন করছে; এর মধ্যে জনপ্রিয়তা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও আর্থিক স্বচ্ছতার দিক দিয়ে ভোটের মাঠে ড. আরেফিন-ববি প্যানেল এগিয়ে। কারণ, ড. আরেফিন-ববী প্যানেল এর প্রতিটি প্রার্থীর সাংগঠনিক দক্ষতা, এডুকেশনাল ব্র্যাকগ্রাউন্ড এবং তাদের কর্মক্ষেত্র প্রকৃত কম্পিউটার ও আইসিটি ফিল্ডের । এই প্যানেলের সদস্যরা নেতৃত্বেগুণেও এগিয়ে। তাই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে বিসিএসকে অংশীদার করতে ভোটাররা ড. আরেফিন-ববি প্যানেলকে বেছে নিচ্ছে। প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম আরো বলেন, সোসাইটির এফ.ডি.আর সোসাইটির একটি স্থায়ী সম্পদ। বর্তমান কমিটি এফ.ডি.আর ভেঙ্গে স্থায়ী সম্পদ নষ্ট করে অস্থায়ী সম্পদে বিনিয়োগ করেছে। বেশীর ভাগ অর্থই ভাড়া বিল্ডিং এর পিছনে খরচ করা হয়েছে। এতে কোন লাভ হয়নি কারণ সোসাইটির আগেও ভাড়া বিল্ডিং ছিলো, এখনো ভাড়া বিল্ডিংই আছে। শুধুমাত্র বর্তমান ভাড়া বিল্ডিং এর আয়তন একটু বড়। বাড়ীর মালিক যদি ফ্ল্যাট ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ প্রদান করে, তাহলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অফিস ছেড়ে দিতে হবে। তাহলে আমাদের প্রশ্ন হলো, যে অস্থায়ী অফিসের কোন নিশ্চয়তা নেই, সেই অনিশ্চিত ভাড়া বিল্ডিং এর অফিস ডেকোরেশন ও ইন্টেরিয়র ডিজাইন করতে স্থায়ী ফান্ড নষ্ট করে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ কেন এই কমিটি করলো? কেন ভাড়া বিল্ডিং এর পরিবর্তে স্থায়ী ফ্ল্যাট/প্লট ক্রয় করা হলো না? চলমান কমিটি নিয়মিত বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) করতেও ব্যর্থ হয়েছে। এই কমিটি থেকে ভোটারার আস্থা হারিয়েছে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই, ড. শরীফ -জিহাদ প্যানেল এর পরাজয় নিশ্চিত। ইনশা-আল্লাহ ১৬ তারিখ ড. আরেফিন-ববী প্যানেলের গলায় বিজয়ের মালা পরবে।
অপরদিকে ড. শরীফ -জিহাদ প্যানেল বর্তমান কমিটির মেয়াদ কালিন সময়ে তাদের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড তোলে ধরে, তাদের প্যানেলের জন্য ভোটারদের কাছে ভোট চেয়ে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছে। সচেতন ভোটাররাই সিদ্ধান্ত নিবে, বিজয়ের মালা কারা পরবে?