নিজস্ব প্রতিনিধিঃ “ঋণ নয়, অধিকার চাই – কর্পোরেট নয়, জনসেবায় অর্থায়ন চাই”—-এ স্লোগানকে সামনে রেখে আজ ২৮ জুন ২০২৫, স্পেনের সিভিল্লেতে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘের উন্নয়নের জন্য অর্থায়ন বিষয়ক চতুর্থ আন্তর্জাতিক সম্মেলন (Fourth International Conference on Financing for Development – FFD4) ২৪টি গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও সিভিল সোসাইটি সংগঠনের উদ্যোগে ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক জোরালো প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সভাপতি কমরেড বদরুল আলম ও পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক কমরেড জায়েদ ইকবাল খান। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় হকার্স ফেডারেশনের সভাপতি আবুল হোসেন, নোয়াখালী গ্রাম উন্নয়ন সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক আবদুল আউয়াল, সাপে বাংলাদেশের নেতা মনোয়ার মোস্তফা, ওয়াটার কিপার্স বাংলাদেশের নেতা ইকবাল ফারুক, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এএএম ফয়েজ হোসেন, রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সভাপতি লাভলী ইয়াসমীন, সম্মলিত শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুল হাসান নয়ন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল লেবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মরিয়ম আক্তার, মাদারল্যান্ড গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আল – আমিন, গ্লোবাল ল থিনকার সোসাইটির নেতা এম. জি. শ্যামস খান, সুপ্রিম কোটের আইনজীবী কামরুজ্জামান, কসমসের সভাপতি মেহনাজ মালা, দলিত নারী উন্নয়ন সংস্থা সুনু রানী দাস, বাংলাদেশ কিষাণী সভার নেত্রী আশা মণি প্রমূখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, সিভিল্লেতে আয়োজিত এ সম্মেলন উন্নয়নের নামে বৈশ্বিক কর্পোরেট শাসনের নতুন রূপ। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ, OECD এবং গ্লোবাল নর্থভুক্ত ধনী রাষ্ট্রগুলোর নেতৃত্বে পরিচালিত এই ফোরাম কার্যত দক্ষিণের দেশগুলোর ওপর নতুন ঋণ, শর্ত এবং বৈষম্যমূলক অর্থনৈতিক শাসন চাপিয়ে দিচ্ছে। জনগণের প্রয়োজনীয় চাহিদার বদলে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মুনাফা ও নিয়ন্ত্রণই হয়ে উঠছে তথাকথিত উন্নয়ন অর্থায়নের মুখ্য উদ্দেশ্য।
বক্তারা আরো বলেন, এই সম্মেলনে কর ন্যায্যতা, জলবায়ু ক্ষতিপূরণ, সামাজিক সুরক্ষা ও কৃষি খাতের ন্যায্যতা নিয়ে কোনো বাস্তব প্রতিশ্রুতি থাকবে বলে মনে হয় না। বরং বৈশ্বিক দক্ষিণের উপর কর্পোরেট ঋণ ও বিনিয়োগের নামে চাপ সৃষ্টি করে তাদের সার্বভৌমত্ব, সম্পদ ও নীতিনির্ধারণ ক্ষমতা হরণ করা করবে। বিশেষ করে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানি, জ্বালানি, ভূমি—সব খাতে কর্পোরেট প্রভাব বিস্তার করে জনগণের অধিকার হরণ করা হচ্ছে। উন্নয়নের নামে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে বহুজাতিক বীজ ও কীটনাশক কোম্পানিগুলো। স্বাস্থ্য খাতে বেসরকারিকরণ চলছে, শিক্ষা খাতে বাণিজ্যিকীকরণ এবং সামাজিক নিরাপত্তা খাতে
সমাবেশে বক্তারা আন্তর্জাতিক সমাজের নিকট দাবির তালিকা উত্থাপন করেন:
১। উন্নয়নের নামে ঋণ নির্ভরতার অবসান করো;
২। দক্ষিণের দেশগুলোর ঋণ বাতিল করো;
৩। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ, এডিবি-এর শর্তযুক্ত ঋণ বন্ধ করো;
৪। জলবায়ু অর্থায়নে ন্যায্যতা নিশ্চিত করো;
৫। জনগণের সেবায় রাষ্ট্রীয় অর্থায়ন নিশ্চিত করো;
৬। কর ন্যায্যতা ও ক্ষতিপূরণ দাও;
৭। বহুজাতিক করপোরেশনের কর ফাঁকি ও সম্পদ পাচার রোধ।
আয়োজক ২৪ টি সংগঠনঃ এপিএমডিডি, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন, সুপ্রো, ইক্যুটিবিডি, জাতীয় হকার্স ফেডারেশন, ওয়াটার কিপারস-বাংলাদেশ, এনআরডিএস, সিপিআরডি, সাপে, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন,বাংলাদেশ জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন,রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, সম্মিলিত শ্রমিক ফেডারেশন,মাদারল্যান্ড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন, বাংলাদেশ কিষাণী সভা,বাংলাদেশ ভূমিহীন সমিতি,বাংলাদেশ ন্যাশনাল লেবার ফেডারেশন, বাংলাদেশ আদিবাসী সমিতি,দলিত নারী উন্নয়ন সংস্থা, ইরেজার,ইয়ুথ ফর আপলিট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ গিগ ওয়ার্কার্স এ্যাসোশিয়েসন,কান্দিভিটা সমউন্নয়ন মহিলা সমিতি (কসমস ), গ্লোবাল ল’ থিংকার্স সোসাইটি।