নিজস্ব প্রতিনিধিঃ শরিফুল ইসলাম(৪১), পিং-মৃত আলী বক্স, সাং-পাতিবিলা, থানা-চৌগাছা, জেলা-যশোর এর পূর্বের সংসারের ছেলে মোঃ রমিম ইসলাম(২৩) সংসারের কোন কাজকর্ম না করা এবং ২/৩ দিন পরপর হাত খরচের টাকা পয়সা চাওয়াকে কেন্দ্র করে শরিফুল ইসলাম তার ছেলে রমিম ইসলামকে প্রায়ই বকাঝকা ও মারধর করতো। একপর্যায়ে শরিফুল ইসলাম তার ছেলে রমিম ইসলামকে তার স্ত্রীসহ আলাদা করে দিলে, রমিম তার পিতার উপর ক্ষিপ্ত হয় এবং গত ০৭/০৩/২০২৫ তারিখ শরিফুল ইসলাম রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে গেলে ভোর অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার সময় রমিমের সৎ মা (হাছিনা বেগম) সেহরী খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে ঘরের দরজা খুলে ওয়াশরুমে গেলে রমিম ইসলাম তার পিতাকে ঘুমন্ত অবস্থায় চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরিবার ও আশপাশের লোকজন চিল্লাচিল্লি শুনে ঘটনাস্থলে এসে ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
উক্ত ঘটনার সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে পিবিআই, যশোর জেলা ক্রাইমসিন টিম ও পিবিআই যশোর জেলার চৌকস দল ঘটনাস্থল পরিদর্শণসহ উক্ত ঘটনা সংক্রান্তে ছায়াতদন্ত শুরু করে। ছায়া তদন্তকালে অনুসন্ধানকারী টিম স্থানীয় তদন্ত ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় পলাতক আসামী রমিম ইসলামের বর্তমান অবস্থান নিশ্চিত হলে, পিবিআই প্রধান জনাব মোঃ মোস্তফা কামাল, অ্যাডিশনাল আইজিপি, বাংলাদেশ পুলিশ এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায়, পিবিআই যশোর জেলা ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন, পিপিএম-সেবা এর নেতৃত্বে অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ)/ রিপন কুমার সরকার সঙ্গীয় এসআই(নিঃ)/ শরীফ এনামুল হক, এসআই(নিঃ)/ রতন মিয়া, এসআই(নিঃ)/ গুরুদাসসহ পিবিআই, যশোর জেলার চৌকস দল কর্তৃক আসামী ০১। রমিম ইসলাম(২৩), পিং-শরিফুল ইসলাম, সাং-পাতিবিলা, থানা-চৌগাছা, জেলা-যশোরকে গত ২০/০৬/২০২৫ খ্রিঃ তারিখ বিকাল ১৭.২০ ঘটিকার সময় নারায়নগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানাধীন ভুলতা ঠাকুরবাড়ি টেক এলাকা থেকে রূপগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী রমিম তার বাবাকে হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে এবং তার স্বীকারোক্তি ও দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাপাতি আসামীর নিজ বাড়ি চৌগাছা থানাধীন পাতিবিলা(মাঠপাড়া) থেকে উদ্ধার করা হয়।
আসামীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আরো জানা যায়, আসামী রমিম ইসলাম (২৩) মৃত শরিফুল ইসলাম এর আগের সংসারের ছেলে। আসামী রমিম ইসলামেরও পূর্বে বিবাহ ছিল। রমিম ইসলামের পূর্বের স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যায়। রমিম ইসলাম নেশা করতো। ঘটনার অনুমান ০১ মাস পূর্বে আসামী রমিম ইসলাম তার বর্তমান মা (সৎ মা) হাছিনা খাতুনের বোনের মেয়ে (খালাতো বোন) কে বিয়ে করে। বিয়ের পর রমিম ইসলাম সংসারের জন্য কোন কাজকর্ম করতো না, বরং সে ২/৩ দিন পরপর তারি পিতা শরিফুল ইসলামের নিকট হাত খরচের (নেশা করার জন্য) টাকা পয়সা চাইতো। এই বিষয় নিয়ে শরিফুল ইসলাম আসামী রমিম ইসলামকে প্রায়ই বকাঝকা ও মারধর করতো। একপর্যায়ে ঘটনার কিছুদিন পূর্বে শরিফুল ইসলাম আসামী রমিম ইসলামকে তার স্ত্রীসহ আলাদা করে দেয়। যার কারনে শরিফুল ইসলাম সাথে তার ছেলে রমিমের দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এসব দ্বন্দ্বের জেরে এবং নেশার টাকা না পেয়ে আসামী রমিম ইসলাম তার পিতাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। গত ০৭/০৩/২০২৫ খ্রিঃ তারিখ শরিফুল ইসলাম ও তার স্ত্রী হাছিনা খাতুন রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে এবং ভোর অনুমান ০৪.০০ ঘটিকার সময় শরিফুল ইসলাম এর স্ত্রী হাছিনা বেগম সেহরী খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে ঘরের দরজা খুলে ওয়াশরুমে যায়। পরিকল্পনানুযায়ী আসামী রামিম ইসলাম(২৩) তার মায়ের অনুপস্থিতিতে ঘরে প্রবেশ করে তার পিতা শরিফুল ইসলামকে ঘুমন্ত অবস্থায় চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় মর্মে স্বীকার করে। ধৃত আসামী রমিম ইসলাম (২৩), পিং-শরিফুল ইসলাম, সাং-পাতিবিলা, থানা-চৌগাছা, জেলা-যশোরকে অদ্য ২১/০৬/২০২৫ খ্রিঃ জনাব অবান্তিকা রায়, সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমালী আদালত চৌগাছা, আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী বিজ্ঞ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।
উল্লেখ্য যে, হত্যাকান্ড সংক্রান্তে ভিকটিম শরিফুল ইসলামের স্ত্রী হাছিনা খাতুন বাদী হয়ে মোঃ রমিম এর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে চৌগাছা থানার মামলা নং-০৬, তারিখ-০৮/০৩/২০২৫ খ্রিঃ, ধারা-৩০২ পেনাল কোড রুজু হয়। উক্ত মামলাটি পিবিআই, যশোর জেলায় স্ব-উদ্যোগে গ্রহণ করে মামলার তদন্তভার এসআই(নিঃ)/রতন মিয়া এর উপর অর্পণ করা হয়েছে।