মোঃ ইকবাল হোসেনঃ বুধবার ২২মে জাতীয় প্রেসক্লাবে আবদুল ছালাম মিলনায়তনে,টোয়াব প্রজন্ম পরিষদের উদ্যোগে,টোয়াব ২০২৪-২৬ নির্বাচন স্থগিত ও ভোটের অধিকা সংশোধনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলনে তাহারা এই দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, নিজেদের ভোটব্যাংক নিশ্চিত করতে টোয়াব-এর সর্বশেষ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের অনেকেই নিজেদের ই. সন্তান, আত্মীয়স্বজন ও অফিসের কর্মীদের টোয়াব সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করিয়েছেন, যারা এ নির্বাচনে ভোটার-তালিকাতেও স্থান পেয়েছেন। ট্রেড লাইসেন্স-সর্বস্ব এসব প্রতিষ্ঠানের জন্য বেশির ভাগ ক্ষেত্রে একই ঠিকানা ব্যবহার করা হয়েছে। বাস্তবে এসব প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির পর্যটন-সংশ্লিষ্ট নিয়মিত কার্যালয় বা কার্যক্রম নেই। এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব-বিবরণী, লেনদেন ও হিসাবরক্ষণ নথি, বুকিং ভাউচার পরীক্ষা করা গেলে আদৌ ভারা পর্যটনভিত্তিক কর্মকাণ্ডে জড়িত কি-না, সেই ধারণা পাওয়া যাবে।
তাদের অনুসন্ধানে পাওয়া কয়েকটি তথ্য উল্লেখ করেন,তা হলো।
ক. সর্বশেষ পরিচালনা পর্ষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রফেসর মো. এ রউফ-এর বর্তমানে কোনো অফিস নেই। করোনা মহামারির সময় থেকে তিনি পর্যটন ব্যবসার কার্যক্রম গুটিয়ে নিয়েছেন। ভোটার তালিকায় উল্লেখিত ঠিকানায় গিয়ে অন্য যে ট্রাভেল এজেন্সিকে পাওয়া গিয়েছে, সেখানকার কর্মীদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে।
খ. সর্বশেষ পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক (ট্রেড অ্যান্ড ফেয়ার) জনাব আনোয়ার হোসেন যে ঠিকানা ব্যবহার করেছেন, সেখানে তিনটি ভোটার প্রতিষ্ঠানের অফিস। একটি প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় কার্যক্রমের তথ্য পাওয়া গেলেও, দুটো প্রতিষ্ঠানের সক্রিয় কার্যক্রমের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
গ. সর্বশেষ পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক জনাব এসএম বিল্লাল হোসেন সুষণ যে ঠিকানা ব্যবহার করেছেন, একই ঠিকানায় আরেকটি ফ্লোরে তার সহধর্মিনীরও অফিস রয়েছে ভোটার তালিকা অনুযায়ী। বাস্তবে সেখানে পরিদর্শনে গিয়ে তাকে বা অফিসের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি, বরং সেখানে বহু বছর হবে একটি পত্রিকা অফিস রয়েছে।
ঘ. আসন্ন নির্বাচনে সিনিয়র সহসভাপতি পদপ্রার্থী এবং একই প্যানেল থেকে সাবেক সহসভাপতি জনাব আবুল কালাম আজাদ যে ঠিকানা ব্যবহার করেছেন, সেখানে তিনটি ভোটার প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের তথ্য পাওয়া গেলেও, অন্য দুটো প্রতিষ্ঠানের কোনো সক্রিয় কার্যক্রমের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। স্থায়ী সাইনবোর্ডও চোখে পড়েনি। জনাব আবুল কালাম আজাদ এর সহধর্মিনীও টোয়াব-এর একজন ভোটার, যাকে গত কয়েক বছরে টোয়াব বা পর্যটন-সংশ্লিষ্ট কোনো কার্যক্রম অংশ নিতে দেখা যায়নি। তিনি ব্যবসায়ে সক্রিয় রয়েছেন, এমন কোনো তথ্যপ্রমাণও নেই।
ঙ. বর্তমান পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক জনাব মো. ইউনূস যে ঠিকানা ব্যবহার করেছেন, সেখানে তিনটি ভোটার প্রতিষ্ঠানের অফিস। তার স্ত্রী ও ভাই অন্য দুটো প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার, যাদের কোনো সক্রিয় কার্যক্রমের প্রমাণ আজ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
চ. পূর্ববর্তী পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও আসন্ন নির্বাচনে কনশাস-রিলায়্যান্স প্যানেলের প্রধান মো. রাফেউজ্জামান রাফি ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিজের স্ত্রী ও অপ্রাপ্তবয়স্ক পুত্রের নামে ট্রেড লাইসেন্স-সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান খুলে টোয়াব-এর সদস্য বানিয়েছিলেন। ভুয়া টিন সনদ ও জালিয়াতির অভিযোগে নির্বাচন কমিশন সেবার তাদের দুজনের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেয়। জনাব রাফেউদ্জ্জমান এবারের নির্বাচনে যে ঠিকানা ব্যবহার করেছেন, সেখানে আরও দুটো ভোটার প্রতিষ্ঠানের অফিস রয়েছে। আমাদের সহকর্মীরা নির্বাচনী গণসংযোগের অংশ হিসেবে সেই ভবনে গিয়ে ভবনটির কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছেন, এই তিনটি অফিসই বেশিরভাগ সময় তালাবদ্ধ থাকে, বহুদিন ধরে কোনো কার্যক্রম নেই। তবে ওই ভবনে জনাব রাফির একটি রিক্রুটিং এজেন্সির সাইনবোর্ড রয়েছে।
বক্তারা বলেন ,পরিচালনা করতে গিয়ে আমরা আবিষ্কার করেছি- এদের কেউ ডিশ ব্যবসায়ী, কারও মোটরগাড়ির শোরুম, কেউ মোটরপার্টস ব্যবসায়ী, কেউ বা অন্য কোনো পেশার মানুষ। পর্যটন-ব্যবসায় তাদের ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতা। দেই এবং এ ব্যবসা-সংক্রান্ত ধারণাও অতি সামান্য। আত্মীয়স্বজন, পরিজন ও আস্থাভাজন ব্যক্তিদের নিয়ে উল্লেখযোগ্য-সংখ্যক নতুন সদস্য বানানো হয়েছে কেবল ভোটব্যাংক বড় করার স্বার্থে।
*ভিন্ন পক্ষাবলম্বীদের প্রত্যাখ্যান।
কিন্তু প্যানেলের সমর্থক বা কর্মী সন্দেহে প্রকৃত ও প্রথিতযশা বহু পর্যটন ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদের আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে অথবা বছরের পর বছর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করছি-
ক. জুমন চৌধুরী, এলহাম ট্রাভেল করপোরেশন (সদস্য- আটাব, হাব, বায়রা ইত্যাদি)
খ. গরুল খান (সদস্য- টোয়াস ইত্যাদি)
গ. মো. মনির, মনির ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরিজম (সদস্য- বিডিইনবাউন্ড ইত্যাদি)
ঘ. সাকিল হোসেন, ইপসি ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম (সদস্য- আটাব, পাটা বাংলাদেশ চ্যাপ্টার ইত্যাদি)
নিজেদের সপক্ষে ভোট আসার সম্ভাবনা না থাকায় সম্প্রতি খুলনা থেকে নতুন কোনো সদস্য নেওয়া হবে না বলেও অনানুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া তিমুপক্ষাবলম্বী বা সমর্থক কোনো সদস্যকে টোয়াব-এর কোনো সাব-কমিটি বা ইভেন্টের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে রাখা হয়নি।
এমনকি টোয়াব-এর প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে যারা এই সংগঠন ও সামগ্রিক পর্যটনের উন্নয়নে অবদান রেখেছেন, সেই বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যদেরও নানাভাবে অসম্মান করা হয়েছে বলে দাবি করেন।
উক্ত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ,টোয়াবের সাবেক সহ-সভাপতি তৌফিক রহমান – সাবেক আইন উপদেষ্টা মাহবুবুল ইসলাম – সাবেক পরিচালক মিঃ তমাল সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
ReplyForwardAdd reaction |